ফুটবলের মহারণে সঙ্গীত, সুরের মূর্ছণায় খেলায় ভক্তদের একাত্ম করাই ফিফার লক্ষ্য
ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপে (FIFA World Cup) সঙ্গীতের সঙ্গের এক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্বকাপে ফুটবলের মহারণের সঙ্গে তালমিলিয়ে সঙ্গীতও চলে। ফুটবল ফ্যান থেকে শুরু করে অফিসিয়াল থিম সং সবকিছুতেই সুর, সঙ্গীত। ম্যাচ চলাকালীন প্রিয় দলকে সমর্থন জানাতে সুরের মূর্ছনায় ভাসেন ফুটবলপ্রেমীরা। সেনেগালের ম্যাচ চলাকালীন সমর্থকদের ব্যান্ডের সংক্রামক ড্রামিং, বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে আসা মানুষের শব্দ, সংস্কৃতি, কোলাহল সব মেলে ওই বল দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে। ফুটবল এবং সঙ্গীত কীভাবে বিশ্বকে একত্রিত করতে পারে, কথায় তার ব্যাখ্যা করা কার্যত অসম্ভব।
এবারে কাতার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ৩২টি দলের প্রত্যেককে ফিফা একটি গান নির্বাচন করতে বলেছিল, যখন তাদের দল একটি গোল করবে, তখন তারা সেই গান বাজাবেন। আধুনিক থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী, অতীত থেকে নতুন, সারা বিশ্বের সঙ্গীতের সঙ্গে পরিচিত হবেন মানুষ-জন৷
দিন যত এগোচ্ছে, ক্রমেই ফিফা বিশ্বকাপে সঙ্গীতে (Sound Track) বাড়ছে। মানুষ আরও বেশি সামিল হচ্ছে, ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে সঙ্গীত। এখন ফিফা ফ্যান ফেস্টিভ্যাল বিশ্বকাপের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ, আন্তর্জাতিক খ্যাতি শিল্পীদের অনুষ্ঠান মানুষকে আরও মুগ্ধ করে।
এবারে লেবানিজ গায়ক মারিয়াম ফারেস, কলম্বিয়ান তারকা মালুমা, নোরা ফাতেহি এবং ক্যালভিন হ্যারিস পারফর্ম করেন। অন্যান্যদের মধ্যে, নাইজেরিয়া, স্পেন, ফ্রান্স, কুয়েত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কলম্বিয়া, তিউনিসিয়া, সৌদি আরব, মিশর, জ্যামাইকা এবং জার্মানি ইত্যাদি দেশও সামিল থাকছে।
নয়ের দশকের জনপ্রিয়া সঙ্গীত, গালার ফ্রিড ফ্রম ডিজায়ার ফুটবল ভক্তদের কাছেও খুবই জনপ্রিয়। প্রাথমিকভাবে পোল্যান্ড, ইংল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ড, তিনটি দেশই এই গানটিকে বেছেছিল। বিবাদ এড়াতে, দ্বিতীয় পছন্দ হিসেবে ইংল্যান্ড ডুয়া লিপার ওয়ান কিস বেছে নেয়। পোল্যান্ড তাদের দ্বিতীয় পছন্দ পিয়েরসির বলকানিকা ব্যবহার করছে।
ব্রাজিল আবার উৎসব-উদযাপন সেরা, তাদের রিও ডি জেনিরো কার্নিভাল জগৎ বিখ্যাত। তিতে বলেছিলেন, সঙ্গীত এবং নাচ তাদের দলের পরিচয়ের একটি অংশ। সাম্বার তালই তারা বেছে নিয়েছেন। মেক্সিকো বেছে নিয়েছে লা হিজা দেল মারিয়াচির লা নেগ্রাকে।
স্প্যানিশ ভক্তরা শুনেছেন মি গ্রান নোচে শোনার সুযোগ পেয়েছিলেন। গায়ক এবং অভিনেতা রাফায়েলের গাওয়া গানটি ১৯৬৭ সালে রেকর্ড করা হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ানরাও রেট্রোতেই ভরসা রেখেছেন, আটের দশকের হিট ডাউন আন্ডার বাই মেন অ্যাট ওয়ার্ক বেছে নিয়েছে তারা। ঘানা এবং ক্যামেরুন আবার স্থানীয় বিখ্যাতদের ভরা করেছেন। আফ্রিকার অন্যতম সফল র্যাপার ব্ল্যাক স্টাররা এবং আজন্টো স্টাইলের উদ্ভাবক সারকোডির ওফিটসের ধ্বনিতে গোল উদযাপন করবেন তারা। ক্যামেরুন আবার মাতছে লেস রিথমেয়ার্স এবিসির এমবান্ডজোহের সুরে।
ফুটবল ভক্তরা তাদের আদি অকৃত্রিম আবেগ ও সৃজনশীলতার জন্য বিশ্ব বিখ্যাত। সুরের তালে, নাচের ছন্দে তারা নিজেদের মতো করে উপভোগ করে ফুটবলের বিশ্বযুদ্ধ। তাই তিনকাঠির লড়াই চলাকালীন, সঙ্গীত বাজানোর উদ্দেশ্যে, মাঠে বল দখলের লড়াইয়ের সঙ্গে অনুরাগিদে আরও একাত্ম করা।