২০২৬ বিশ্বকাপে এশিয়া থেকে আরও বেশি দল খেলার সুযোগ পাবে, জেনে নিন কীভাবে হবে বাছাই পর্ব
কাতার বিশ্বকাপের প্রথম পর্যায় অর্থাৎ গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচগুলি শেষ হয়েছে। আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ের অর্থাৎ নকআউট পর্বের খেলা। নানা রকম বিতর্ককে সঙ্গী করে এবার কাতারে বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে, শেষ পর্যন্ত এই বিশ্বকাপ পরিচালনায় ফিফা এবং আয়োজক দেশ কাতার কতটা সফল হল তা নিয়ে পর্যালোচনা করতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে ইতিমধ্যেই নানাবিধ নাটকীয় মুহূর্ত দেখা গেছে এই বিশ্বকাপে। সৌদি আরবের কাছে হেরেছে আর্জেন্টিনা, জাপানের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে জার্মানি এবং স্পেন। বেলজিয়াম হেরেছে মরক্কোর কাছে। তারা এবং জার্মানি ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে।
তবে এরই মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে পরবর্তী ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ নিয়ে। আমেরিকা, মেক্সিকো ও কানাডাতে বসতে চলেছে আগামী ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। তিন দেশের মোট ১৬টি শহরে হবে খেলা। তার মধ্যে আমেরিকার ১১, মেক্সিকোর তিন ও কানাডার দু’টি শহর রয়েছে।
২০২৬ সালেই প্রথম বার ফুটবল বিশ্বকাপে দেশের সংখ্যা ৩২ থেকে বাড়িয়ে ৪৮ করা হয়েছে। এই প্রথম বার কোনও ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন তিনটি দেশ মিলে করছে। আমেরিকা এর আগে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপের আয়োজন করেছে। মেক্সিকোতে হয়েছে ১৯৭০ ও ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ। মেক্সিকো প্রথম দেশ যারা তিন বার বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে। কানাডা অবশ্য ২০২৬ সালেই প্রথম বার বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে।
এতদিন যেমন চার দলের আটটি গ্রুপ হোত, সেই নিয়ম এবার বদলে যাচ্ছে। ৪৮টি দেশকে ১৬ গ্রুপে ফেলা হবে। অর্থাৎ প্রতি গ্রুপে তিনটি করে দল। সেখান থেকে পরের পর্বে যাবে দুটি করে দল। অর্থাৎ ১৬টি দেশ মাত্র দুটি করে ম্যাচ খেলেই বিদায় নেবে।
আগামী বিশ্বকাপে যে অনেক নাটকীয় মুহূর্ত তৈরি হবে তা এখন থেকেই অনুমান করা যায়। কারণ, এখন যেমন গ্রুপ পর্যায়ে খেলার পর ১৬টি দল নকআউট পর্বে পৌঁছায়, কিন্তু আগামী বিশ্বকাপে ৩২টি দলকে নিয়ে শুরু হবে নক আউট পর্ব। ফলে আগেভাগে বিদায় নিতে হবে ১৬টি বড় দলকে। বিশ্বকাপের এখনকার ফর্ম্যাটে মোট ৬৪টি ম্যাচ খেলা হয়। পরের বার হবে ৮০টি। অর্থাৎ ম্যাচের সংখ্যা বাড়বে বিশ্বকাপে।
আগামী বিশ্বকাপে ১৬টি দেশ সুযোগ পাবে। ইউরোপ, আমেরিকা- সহ প্রতিটি কনফেডারেশন অতিরিক্ত সুযোগ পাবে। প্রথমবার নিশ্চিত সুযোগ পাবে ওশিয়ানিয়ার একটি দেশ। মূলপর্বের শেষ দুই দলের জন্য একটি প্লে অফ বা যোগ্যতা অর্জনকারী টুর্নামেন্ট খেলবে ৬টি দেশ। আয়োজক কনকাকাফ কনফেডারেশনের দুটি দেশ এবং উয়েফা ছাড়া বাকি প্রত্যেক কনফেডারেশনের একটি করে দেশ অংশ নেবে সেই প্লে অফ খেলায়।
২০২৬-এর বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনের জন্য এশিয়ার দেশগুলি থেকে বাছাই পর্ব কীভাবে হবে, একনজরে দেখে নেওয়া যাক-
২০২৩ সালে অক্টোবরে শুরু হবে এশীয় অঞ্চলের বাছাইপর্ব। এশিয়া থেকে আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দল খেলার সুযোগ পাবে, তবে পথটা সহজ নয়।
প্রথম রাউন্ড
সবশেষ ফিফা প্রকাশিত র্যাং কিংয়ে এশিয়ার ৪৭ দেশের মধ্যে প্রথম ২৫ দল সরাসরি দ্বিতীয় পর্ব থেকে লড়াই করবে। শেষদিকে থাকা ২২ দলকে খেলতে প্রথম পর্ব। প্রথম পর্বে প্রতিটি দল একটি দলের বিপক্ষে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। ড্রতে বাছাই করা হবে কোন ১১টি দল কোন ১১টি দলের বিপক্ষে খেলবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে দুই লেগের প্লে-অফের পেরিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠবে ১১টি দল। বাদপড়াদের বিশ্বকাপ শেষ এখানেই।
দ্বিতীয় রাউন্ড
যান কিংয়ের প্রথম ২৫টি দলের সঙ্গে এ পর্বে যোগ দেবে প্রথম পর্বে সফল ১১ দল। ৩৬ দল ৯ গ্রুপে ভাগ হয়ে লড়াই করবে এ পর্বে। প্রতিটি দল হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে এক অপরের সঙ্গে দুটি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল করে মোট ১৮ দল নিশ্চিত করবে তৃতীয় রাউন্ড।
তৃতীয় রাউন্ড
এ পর্বে তিন গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে দ্বিতীয় রাউন্ডে সফল হওয়া ১৮ দল। গ্রুপে এক দল আরেক দলের বিপক্ষে দুটি করে মোট ১০টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দু’দল ২০২৬ বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা পাবে। বাদ পড়বে পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে থাকা দলগুলো। আর বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা দলগুলো খেলবে চতুর্থ রাউন্ড।
চতুর্থ রাউন্ড
এ পর্বে দুই গ্রুপে ছয়টি করে দল ভাগ হয়ে লড়াই করবে। একবার করে প্রতিটি দল পরস্পরের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ পাবে। এর মধ্যে দুই গ্রুপের চ্যাম্পিনরা সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে খেলার। আর রানার্সআপরা খেলবে একটি প্লে-অফ খেলবে। জয়ী দল যাবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফে। তবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ কোন মহাদেশের বিপক্ষে খেলবে এশিয়ার দলটি তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।