বিরোধীদের আপত্তি উপেক্ষা করেই রাজ্যসভায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল নিয়ে শুক্রবার চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সংসদের উচ্চকক্ষে। এদিন রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ কিরোরিলাল মীনা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা ইউসিসি) বিল (Uniform Civil Code Bill), ২০২০ পেশ করেন।
বিরোধী সাংসদরা একযোগে অভিযোগ করেন, এই বিল আইনে পরিণত হলে আঘাতপ্রাপ্ত হবে ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও বহুত্ববাদ। আনা হয় তিনটি প্রস্তাবও। তবে রাজ্যসভার (Rajya Sabha) চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের হস্তক্ষেপে ধ্বনিভোটে এই বিলের উত্থাপনটি পাস হয়ে যায়। মাত্র ২৩টি ভোট পড়েছিল বিরোধীদের মোশনের পক্ষে। আর বিপক্ষে পড়ে ৬৩টি ভোট।
বিরোধী সাংসদরা একযোগে অভিযোগ করেন, এই বিল আইনে পরিণত হলে আঘাতপ্রাপ্ত হবে ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও বহুত্ববাদ। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম-সহ বিরোধী শিবিরে থাকা সমস্ত রাজনৈতিক দলই বিলটি পেশের তুমুল বিরোধিতা করে। তৃণমূলের পক্ষে সাংসদ জহর সরকার রাজ্যসভাতেই বিলটিকে ‘সংবিধান বিরোধী’ বলে অভিহিত করে সরব হন। তাঁর অভিযোগ, সরকার ঘুরপথে এই বিল সংসদে এনে সাংঘাতিক খেলা খেলতে চাইছে। এ প্রসঙ্গে পরে তিনি বলেন, “শাসক শিবির সরকারিভাবে এখনই বিল না এনে যে প্রক্সি গেম খেলছে সেটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। বকলমে দলীয় সাংসদকে দিয়ে বিল পেশ করিয়ে তারা যে জল মাপতে চাইছে তা সবাই বুঝতে পারছে।” বিরোধীরা সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছে যে এই ধরনের বিল সামাজিক বন্ধনকে শুধু বিনষ্টই করবে না, ভারতে বৈচিত্রের মধ্যে যে ঐক্য রয়েছে তাকেও নষ্ট করে দিতে পারে এই বিল।
সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ জন ব্রিট্টাস আইন কমিশনের একটি রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে জানান, সেখানে বলা হয়েছিল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি অপ্রয়োজনীয় এবং তা কাম্য নয়। ডিএমকের তিরুচি সিভা দাবি করেন, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির ধারণাটিই ধর্মনিরপেক্ষতার বিরোধী।
অতীতে, এই বিলটি পেশ করার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছিল। কিন্তু সংসদের উচ্চকক্ষ, রাজ্যসভায় পেশ হয়নি।