স্বপ্নপূরণের থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে, কী ভাবছেন মেসি?
২০১৮ বিশ্বকাপে হোর্হে সাম্পাওলির অধীনে খুব ভালো খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। যে ক্রোয়েশিয়াকে কাল সেমিফাইনালে ৩–০ গোলে হারাল আর্জেন্টিনা, তাদের কাছেই গ্রুপপর্বের ম্যাচে হারতে হয়েছিল ৩–০ গোলে। হাঁচড়ে পাঁচড়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে আর্জেন্টিনা ধরাশায়ী হয়েছিল কিলিয়ান এমবাপ্পের দুর্ধর্ষ ফুটবলের কাছে।
বিশ্বকাপের পরপরই আর্জেন্টিনা দলের কোচিং স্টাফে এসেছিল বড় পরিবর্তন। চাকরি হারিয়েছিলেন সাম্পাওলি। দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল স্কালোনির হাতে।
যতই দিন যেতে থাকল, স্কালোনি নিজেকে প্রমাণ করতে থাকলেন। তিনি গুছিয়ে তুললেন আর্জেন্টিনা দলকে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দারুণ খেলল দল। ২৮ বছর পর গত বছর জুলাইয়ে জয় করল প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা—কোপা আমেরিকা। মনোভাব ঘুরে গেল সবার। আর্জেন্টিনা দলের নামও আল বিসেলেস্তে থেকে বদলে গেল ‘লা স্কালোনেতায়’।
বিশ্বকাপের আগে টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত রইল আর্জেন্টিনা। তিন বছরের বেশি সময় অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপে এসে প্রথম ম্যাচে হার, খাদের কিনারায় পৌঁছে যাওয়া, গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের চোখ রাঙানি- অগ্নিপরীক্ষার সামনে পড়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। সেখান থেকে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে, একেকটি বাঁচা-মরার লড়াইয়ে জিতে সেই দলই এখন ফাইনালের মঞ্চে। উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক লিওনেল মেসি। এবার শিরোপা লড়াইয়ে পুরো মনোযোগ দিতে চান তারা।
আসরে তাদের প্রথম ম্যাচের পর এমন কিছু ভাবার লোক হয়তো খুব বেশি ছিল না, তারা যে হেরে বসেছিল শক্তি-সামর্থ্য কিংবা র্যাঙ্কিংয়ে অনেক পিছিয়ে থাকা সৌদি আরবের বিপক্ষে। এরপর প্রতিটি ম্যাচ তাদের জন্য হয়ে ওঠে ‘নকআউট।’ টানা পাঁচ জয়ে লিওনেল স্কালোনির দল এখন শেষের মঞ্চে।
দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেসি (Lionel Messi)। ক্রোয়েশিয়ার (croatia) বিপক্ষেও গোল করে ও করিয়ে জয়ের নায়ক তিনিই। পাঁচ জয়ের চারটিতেই তিনি হয়েছেন ম্যাচের সেরা। ৫ গোল করে কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গে যৌথভাবে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন ৩৫ বছর বয়সী তারকা। তিনটি গোলে সহায়তা করেছেন।
বিশ্বকাপে দেশের ৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাটাতে তাদের চাই আর একটি জয়। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর মেসি বললেন, প্রথম ম্যাচের ওই হারই দলকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। তিনি বলেন, পুরো দলের জন্য এটি ছিল অগ্নিপরীক্ষা। আমরা প্রমাণ করেছি যে আমরা কতটা শক্তিশালী। আমরা অন্য ম্যাচগুলি জিতেছি। আমরা যা করেছি, তা খুব কঠিন ছিল। প্রতিটি ম্যাচই ছিল ফাইনাল। আমরা জানতাম, যদি জিততে না পারি তাহলে সবকিছু জটিল হবে আমাদের জন্য।” আগামী রোববার চূড়ান্ত জয়ের বিষয়ে আশাবাদী মেসি বলেন, “আমরা পাঁচটি ফাইনাল জিতেছি। আশা করি, রোববারের ফাইনালের ক্ষেত্রেও তাই হবে। আমরা সূক্ষ্ম ভুলের কারণে প্রথম ম্যাচে হেরেছি, কিন্তু সেটাই আমাদের শক্তিশালী হতে সাহায্য করেছে।’’