নিষিদ্ধ ভিডিওতে ছোটদের মুখ! উদ্বিগ্ন গোটা দেশ, গত ৩ বছর অভিযোগহীন কলকাতা
হাল আমলে শৈশব থেকে কৈশোর, সবাই মুঠোফোনে বন্দি; এর নেপথ্যে করোনা একটা বড় কারণ, সঙ্গে দোসর অনলাইন ক্লাস। স্কুল থেকে প্রাইভেট টিউশন, সর্বত্র চলছে অনলাইন ক্লাস। ফলে দেদার ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে পড়ুয়ারা। যার দৌলতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ। অজান্তেই সাইবার অপরাধীদের কবলে পড়ছে ছোটরা। নিষিদ্ধ সাইটের ছবি এবং ভিডিওতে সুপার ইম্পোজ করে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মুখ বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেশজুড়ে এই কান্ড চলছে, করোনার পর থেকে ক্রমেই বাড়ছে এমন অভিযোগ।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্ট বলছে, বিগত দুই বছরে এহেন অভিযোগের সংখ্যা প্রায় সাড়ে আট গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।অপ্রাপ্তবয়স্কদের অশ্লীল ছবি, ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোকে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালে ১০২টি অভিযোগ জমা পড়েছিল গোটা দেশে। ২০২০-তে অভিযোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩৮তে পৌঁছয়। ২০২১ আরও বেড়ে হয় ৯৬৯। প্রতি বছরই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে অভিযোগের সংখ্যা। এনসিআরবি রিপোর্ট বলছে, শহরের তুলনায় গ্রাম ও শহরতলিতে অভিযোগের সংখ্যা বেড়েছে।
২০১৯ সালে জমা পড়া ১০২টি অভিযোগের মধ্যে ছ’টি মেট্রোপলিটন শহরের ঘটনা ছিল। ২০২০ সালে বড় শহরগুলিতে অভিযোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১২০টি অভিযোগ দায়ের হয়। ২০২১ সালের রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল, বড় শহরগুলিতে ২৪৩টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বড় শহরে সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত সচেতনতা প্রচার বেশি বলে, বড় শহরগুলির তুলনায় গ্রাম ও শহরতলি এলাকায় সাইবার অপরাধের ঘটনা বেশি ঘটে। প্রচার ও সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞমহল। কিন্তু কলকাতার পরিসংখ্যান অত্যন্ত ভাল, গত তিন বছরে মহানগরে এমন একটিও অভিযোগ জমা পড়েনি।
চাইল্ড পর্নোগ্রাফি, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ছবি ব্যবহার করে নিষিদ্ধ ভিডিও তৈরিকে ঘিরে দেশের পরিস্থিতি মোটেই ভাল নয়। কিন্তু পথ দেখাচ্ছে কলকাতা। পরপর তিন বছর এ ধরনের একটিও অভিযোগ জমা পড়েনি কলকাতায়। কলকাতা পুলিশের এলাকাধীন প্রত্যেক পাড়ায় সাইবার সচেতনতা নিয়ে প্রচার করা হয়। পকসো আইনের সচেতনতা নিয়ে যথেষ্ট মাত্রায় কলকাতায় প্রচার হয়েছে। স্কুলগুলিও অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে।