হচ্ছে টা কী? বিভাগে ফিরে যান

মুঠোফোনের কারণে ভাঙছে সংসার? কী বলছে সমীক্ষা?

December 26, 2022 | 2 min read

https://youtu.be/-5fp4BckFfE

পৃথিবীটা ছোট হতে হতে আজ স্মার্টফোনের হাতে বন্দি। আজকাল আর লজ্জায় নয়, মাথা নীচু হয় ফোন দেখতে গিয়ে। অফিস থেকে ফিরেই স্মার্টফোন নিয়ে বসে পড়ছেন বাড়ির কর্তারা। বাড়ির মহিলারাও সব সময় স্মার্টফোন নিয়ে ব্যস্ত। ক্রমেই সংসারের সদস্যে পরিণত হয়েছে স্মার্টফোন। ভার্চুয়াল দুনিয়াতেই কেটে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময়।

কথা বলার সময়টুকুও নেই কারও হাতে। আস্তে আস্তে নিজেদের মধ্যে বাক্যালাপের ভাষা হারিয়ে ফেলছেন দম্পতিরা। সাম্প্রতিক এক গবেষনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর এক তথ্য। গবেষনা বলছে অতিরিক্ত স্মার্টফোনের ব্যবহারের কারণেই বৈবাহিক সম্পর্ককে খাদের কিনারে এসে দাঁড়াচ্ছে। বিচ্ছেদে এসে থামছে সম্পর্কের ভবিষৎ। স্মার্টফোন ও মানব জীবনে তার প্রভাব ২০২২ শীর্ষক গবেষণাটি দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, আমেদাবাদ ও পুনের এক হাজার বিবাহিত পুরুষ ও মহিলার উপর চালানো হয়েছে।সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ৮৮ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোনের কারণে বিবাহিত সম্পর্ককে নষ্ট করে ফেলছেন। হয়ত তারা নিজেরাও বুঝতে পারছেন কি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে স্মার্টফোন নামক ক্যান্সার। কিন্তু বেরোনোর পথ নেই। ৯০ শতাংশ মানুষ জীবনসঙ্গীর সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে চান, কিন্তু পারছেন না কেবল মুঠোফোনের কারণে।

মানুষজন গড়ে দিনে সাড়ে চার ঘণ্টারও বেশি সময় ব্যস্ত থাকেন স্মার্টফোনে। সমীক্ষায় প্রায় ৬৭ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, বাড়িতে থাকার সময়ও তারা স্মার্টফোন থেকে চোখ সরাতে পারেন না। ৮৯ শতাংশ বলেছেন, কাজের চাপ নয়, ফোনের কারণেই তারা জীবনসঙ্গীদের সঙ্গে কম সময় কাটান। ৭৩ শতাংশ দম্পতির বক্তব্য, তাদের নিজেদের মধ্যে কথা বলা বা একান্ত সময় কাটানোর সময়তেও জীবনসঙ্গীরা স্মার্টফোনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আবার ৭০ শতাংশ দম্পতি বলছেন, স্মার্টফোনে ব্যস্ত থাকার সময় জীবনসঙ্গী কিছু বলামাত্রই ক্ষেপে যান তারা। এতেই শুরু হচ্ছে কলহ, যা বিচ্ছেদের আকার ধারণ করছে।

তবে সমস্যার কথা বুঝতেও পারছেন দম্পতিরা। ৮৪ শতাংশ দম্পতি বলছেন, তারা নিজেদের মধ্যে আরও বেশি করে সময় কাটাতে চান। কিন্তু ফোন তাদের সেই সময় কেড়ে নিচ্ছে। সব বুঝেও তারা বেরিয়ে আসতে পারছেন না। এরই নাম বোধহয় স্মার্টফোন নেশা, যে নেশায় বুঁদ গোটা দুনিয়া।

মনোবিদ শতভিষা চ্যাটার্জির মতে সম্পর্ক আসলে গাছের মতো। রোজ পরিচর্যা করতে হবে। বিয়ে হয়ে গেছে মানেই দুজন মানুষ নিজেদের মধ্যে যে কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রয়োজনিয়তা বোধ না করলে দূরত্ব বাড়তে থাকে। ঐ শূন্যস্থানে ঢুকে পড়ে মোবাইল। দুজনেই কাজের ব্যস্ততার মাঝে ঐ মোবাইল আঁকড়ে ভার্চুয়াল জগতে কোনওরকম দায়বদ্ধতা ছাড়াই ডুবে থাকায় অভ্যস্ত হয়ে যায়। প্যান্ডেমিক চলাকালীন স্ক্রিন টাইম প্রত্যেকেরই জীবনে বেড়েছে কম বেশি। অথচ আমাদের দেশে পারিবারিক জীবন ও কর্ম জীবনের মধ্যে ভারসাম্যরক্ষায় কোনও আলাদা উৎসাহ দেওয়া হয় না। সম্পর্ক মজবুত করতে যা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই আমরা সেই সিস্টেম বদলানোর চেয়ে মোবাইল ব্যবহারকে তুলনামূলক সহজে দোষারোপ করে ফেলি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#marriage life, #Smart Phones, #Couples

আরো দেখুন