জিরো-কোভিড নীতি প্রত্যাহার করল চীন, উদ্বেগে গোটা বিশ্ব
শ্মশানে লম্বা লাইন। করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে লাখে লাখে মানুষ। হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে রোগী। করোনায় বিপর্যস্ত চীন। কিছুদিন আগে থেকেই বন্ধ করে দিয়েছে সংক্রমণের হিসাব দেওয়া। এরই মধ্যে চীন সরকার সিদ্ধান্ত নিল নিভৃতবাসের মতো কড়াকড়ি বন্ধ করার! চীন সরকার জানিয়েছে, নতুন নিয়ম নতুন বছরের ৮ জানুয়ারি থেকেই চালু হবে। শিথিল হচ্ছে বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের উপর চাপানো কোভিড নিয়ম।
এতদিন নিয়ম ছিল বাইরের দেশ থেকে চীনে ঢুকলে কোভিড টেস্টের পরে পাঁচদিন বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে বা নিভৃতবাসে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে সরকারি কিছু হোম ও আইসোলেশন সেন্টারে যাত্রীদের রাখার ব্য়বস্থা হয়েছিল। চীনা সরকার জিরো কোভিড নীতি নেওয়ার পরে এই ব্যবস্থা চালু করে। কিন্তু এখন সে নিয়ম তুলে নেওয়ার পরেই করোনা বাঁধভাঙা বন্যার মতো ছড়িয়ে পড়েছে চীনে। কিন্তু তার মধ্যেও নিয়ম কড়া করতে রাজি নয় সরকার। বেজিং জানিয়েছে, করোনায় চীনের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। এই সময় আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ করে দিলে ব্যবসাবাণিজ্য সব শিকেয় উঠবে।
বেইজিং গত শুক্রবার জানায় যে, প্রায় চার হাজার মানুষ নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে এবং গত সপ্তাহে টানা চার দিন কোনও মৃত্যু হয়নি। রবিবার দেশটি বলেছে যে তারা দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা প্রকাশ করা বন্ধ করবে।
তবে একটি ব্রিটিশ স্বাস্থ্য তথ্য সংস্থা এয়ারফিনিটি অনুমান করেছে যে, চিনে দৈনিক ১০ লাখ মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে এবং পাঁচ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর দিয়েছে।
চীন বিশ্বের সর্বশেষ প্রধান উন্নত অর্থনীতির দেশ, যারা তিন বছরের লকডাউন, সীমান্ত বন্ধ এবং কোভিডের সংস্পর্শের কারণে কোয়ারেন্টিন চালু রাখার পর “কোভিডের সাথে বসবাস” করার কথা ঘোষণা করল।
সরকারের লকডাউনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে পথে নেমেছিলেন চীনের মানুষ। সেই চীন সোমবার জানিয়েছে, তারা আর নিভৃতবাসের নীতি মানবে না। চীনের বিভিন্ন মহলে খবর, উদার হতে চলেছে লক ডাউনের নিয়মও। এমনকি, বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের যে কোভিড পরীক্ষা এবং ৭ দিন নিভৃতে থাকার নিয়ম মানতে হত, তারও আর প্রয়োজন নেই। বদলে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে পর্যটকদের কাছে অবারিত করা হবে চিনে প্রবেশের দরজা। দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে যাঁদের জ্বর বা ফ্লু-এর মতো উপসর্গ থাকবে, তাঁদেরই শুধু কোভিড পরীক্ষা করা হবে। বাকিদের নয়। কমিশন জানিয়েছে, শীঘ্রই চীনের বাসিন্দারাও চীন থেকে দেশের বাইরে যেতে পারবেন। তবে তাঁদের ক্ষেত্রে কোভিড পরীক্ষার নিয়ম মানা হবে বলে জানিয়েছে চিন।
সোমবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন ঘোষণা করেছে যে, আগামী ৮ই জানুয়ারি কোভিডকে আনুষ্ঠানিকভাবে বি-শ্রেণীর সংক্রামক রোগে নামিয়ে আনা হবে।
তবে অনেকেই চীনে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা শীর্ষে থাকা সত্ত্বেও সীমান্ত পুনরায় খোলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।