পেলের অন্তিম যাত্রায় নেইমার, রোনাল্ডো, কাফুদের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ব্রাজিল জুড়ে
ক্যান্সারের সঙ্গে লম্বা সময়ের লড়াইয়ের পর গত বৃহস্পতিবার ৮২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জেতা ইতিহাসের একমাত্র ফুটবলার পেলে। সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতাল থেকে সোমবার ভোরে তার কফিন আনা হয় সান্তোসের ঘরের মাঠ ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে।
শেষবারের মতো ছেলেকে দেখতে গেছেন শতবর্ষী মা সেলেস্তা, এসেছেন স্ত্রী মার্সিয়া আওকি, ছেলে এদিনিয়ো। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। পরে তাঁকে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে সমাহিত করা হয় একুমেনিকাল নেক্রপলিস মেমোরিয়ালে।
সান্তোসের মাঠ ভিলা বেলমিরোর পাশেই নেকরোপোল একিউমেনিকাতে চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে রয়েছেন ফুটবল কিংবদন্তি পেলে। ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তারকার চিরবিদায়ে তাঁর দেশ ব্রাজিলের সব বড় বড় তারকা উপস্থিত থাকবেন, তাঁরা শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন—প্রত্যাশা করা হয়েছিল এমনটিই। কিন্তু বাস্তবে সেটি হয়নি। ব্রাজিলের নামকরা অনেকই পেলের শেষকৃত্যে যোগ দেননি। এটি নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
শেষযাত্রায় ফুটবলের সম্রাট সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা পেলেও ব্রাজিল দলে তাঁর উত্তরসূরিদের দেখা যায়নি সেখানে। পেলের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন তাঁর বেশ কয়েকজন সতীর্থ। ১৯৭০ সালে বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের ক্লোদোয়ালদো তাভারেজ দি সান্তানা ছিলেন তাদের অন্যতম। তোস্তাও, জার্জিনহো, রবার্তো রিভেলিনো, অলিভিয়েরা নুনেস ও উইলসন পিয়াজ্জাদের অনুপস্থিতি সমালোচনার ঝড় তুলেছে। সবচেয়ে লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে এবারের কাতার বিশ্বকাপ খেলা ব্রাজিলের কোনো খেলোয়াড়ই পেলের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন না। অনুপস্থিত ছিলেন ২০০২ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যরাও। কাফু, রোনাল্ডো, নাজারিওদের মতো তারকারা কেন ছিলেন না, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ব্রাজিলীয় গণমাধ্যম। ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন কেবল মাউরো সিলভা।
ব্রাজিলের প্রাক্তন ফুটবলার নেতো ব্যাপারটি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, ‘পেলে একজন কিংবদন্তি। তাঁর মর্যাদা অনেকটা নেলসন ম্যান্ডেলা কিংবা মহাত্মা গান্ধীর সমপর্যায়ের। ব্রাজিলিয়ানরা প্রমাণ করল, তারা তাদের আইকনকে প্রাপ্য মর্যাদা দিতে জানে না। বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার, যাঁরা এখনো জীবিত, তাঁরা যদি পেলের শেষকৃত্যে না যোগ দেন, তখন আর কী বলা যায়!’