বাংলার মেয়ে থেকে দেশের দিদি, এক নজরে মমতার রাজনৈতিক জীবন
সৌভিক রাজ
আজ এক আগুনের জন্মদিন। শীতে উত্তাপের বড় প্রয়োজন হয়। হাড়হিম করা সন্ত্রাসে বিধ্বস্ত বাংলায় বামেরা যখন অকাল শৈত নামিয়ে এনেছিল, তখন আগুন হয়ে জ্বলে উঠেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খর্বদেহী, হাওয়াই চটি পরা এক তরুণী সত্তরের দশকে বাংলার রাজনীতিতে প্রবেশ করল। সেদিন হয়ত কেউই বোঝেনি, এক দিন কালীঘাটের সাধারণ মেয়েটি হয়ে উঠবে বাংলার তথা দেশের দিদি।
সাধারণ বাড়ির সাধারণ মেয়ে, সাদা শাড়ি পরেন, বাসে ট্রামে চড়েন, টালির বাড়িতে থাকেন তাঁর সাধ্য কী মার্ক্স-ফ্রয়েডের তত্ত্ব আওড়ানো পক্ষকেশী নেতাদের সঙ্গে লড়বেন! একদল রাজনীতিক তাঁকে উপেক্ষাই করল। কিন্তু আগুনকে কী চাপা দিয়ে রাখা যায়? না কোনদিন চাপা দিয়ে রাখা গিয়েছে! মমতা নামের সেই আগুনের সঙ্গে লড়তে লড়তে আজ বামেরা উবে গিয়েছে, কিন্তু ঐ কালীঘাটের মেয়েটি আজও অনড় দাঁড়িয়ে। এই অনড় দাঁড়ানো মানসিকতাই মমতার শক্তি। আজও তিনি স্ট্রিট ফাইটার-অগ্নিকন্যা। বিন্দুমাত্র বদল হয়নি তাঁর লড়াইয়ের মানসিকতায়। নয়তো ষাট পেরোনো এক নেত্রী, ২০২১-এ দাঁড়িয়ে বলতে পারেন, আমি গোলকিপার কে কটা গোল দিতে পারে আমিও দেখি। এখানেই মমতা অন্যের থেকে আলাদা। তাঁর পদে পদে প্রতিবাদ আর লড়াই।
সত্তরের দশকে কংগ্রেসের হাত ধরেই মমতার রাজনৈতিক জীবন শুরু, যোগমায়া দেবী কলেজে পড়াকালীন ছাত্রজীবন থেকেই তাঁর রাজনীতির পথ চলা শুরু হয়েছিল। ১৯৭৬ সালে মাত্র একুশ বছর বয়সেই তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মহিলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। রাজ্যব্যাপী নেতৃত্বে উঠে এলেন মমতা। কয়েক বছরের মধ্যে প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক।তবে তার আগেই অঘটন ঘটিয়ে ফেলেছিলেন মমতা।
১৯৮৪ সালে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে সিপিএমের প্রার্থী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে প্রথমবারের লোকসভায় পা রাখেন মমতা। জীবনের প্রথম নির্বাচনেই সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতো প্রার্থীকে হারিয়ে সকলকে চমকে দেন। এ যেন রাজকীয় বিক্রমে তাঁর আগমন ঘোষণা হয়ে গেল। গনি-প্রিয়-প্রণবের পরে স্বাধীনোত্তর ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে আরেক জন বাঙালির নাম ভেসে উঠল। তবে তিনি মহিলা, এও এক মিথ ভাঙা কাজ করেছিলেন বাংলার দিদি। ভারতের সংসদীয় রাজনীতি পুরুষতান্ত্রিক, আটের দশকে ইন্দিরাপরবর্তী যুগে সেই রাজনৈতিক মিথ ভাঙলেন মমতা।
এত সাফল্যের পরে, ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজয়ের মুখ দেখতে হল। মালিনী ভট্টাচার্যের কাছে যাদবপুর কেন্দ্রে হেরে যান তিনি। যদিও এই হারের কারণ ছিল দেশের কংগ্রেস বিরোধী হাওয়া, তাই এই পরাজয় ব্যক্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের তুলনায় কংগ্রেসের পরাজয় ছিল বেশি। তবে তাঁর রাজনৈতিক আন্দোলন কিন্তু থামেনি। মমতা জয়ে ভেসে যান না, পরাজয়েও ভেঙে পড়েন না- এটাই তাঁর জীবন থেকে শিক্ষণীয়। এটাই সাধারণ মমতাকে অসাধারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বানিয়েছে।
১৯৯০ সালে নিজের এলাকা হাজরাতেই সিপিআইএম কর্মীদের দ্বারা মারাত্মকভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রান্ত হন। মাথা ফাটে। তবে এ ঘটনা নতুন কিছু নয়! রাস্তায় মার খেতে খেতেই তো স্ট্রিট ফাইটার হয়েছেন মমতা।
১৯৯১ সালে ফের তিনি লোকসভায় এলেন। দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্র থেকে বিপ্লব দাশগুপ্তকে হারিয়ে, নরসিমা রাও সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন, ক্রীড়া, যুবকল্যাণ, নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী হলেন। সেই প্রথমবারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন মমতা।
১৯৯৩ সাল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি ঘটল, তাঁর নেতৃত্বেই মহাকরণ অভিযান করল যুব কংগ্রেস। দিনটা ছিল ২১শে জুলাই। আর দাবি ছিল সচিত্র পরিচয়পত্র। ১৩ জন যুবকংগ্রেসকর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হল। মায়েদের বুক ফাটা আর্তনাদে সেদিন কেঁপে উঠেছিল বাংলা। রক্তে ভিজল রাজপথ। এরপর থেকে ২১শে জুলাই তৃণমূল শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে চলেছে।
১৯৯৪ সালের ১২ জানুয়ারি, স্বামী বিবেকানন্দর জন্মদিনে কংগ্রেসের পতাকা কাঁধে নিয়ে শুরু করলেন জনসংযোগ যাত্রা। অবিভক্ত মেদিনীপুর থেকে শুরু হওয়া সেই যাত্রা, সারা বাংলার যুব সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। আন্দোলনের ফুটতে শুরু করল গোটা বাংলা। মমতার চেয়ে ভাল রণহুঙ্কার আর কেই বা দিতে পারেন দেশে!
টানা সাতমাস রাস্তায়ে রাস্তায়ে ঘুরে ১৮৭টি বিধানসভা অতিক্রম করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মানুষকে সংঘবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন মমতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংগঠনের দায়িত্বে সারা বাংলা ঘোরার সুবাদে, মমতা উপলব্ধি করেছিলেন, বিভিন্ন সময়ে পুলিশ লকআপে ১৭৮জন বন্দিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ক্ষমতার মোহে অন্ধ বামফ্রন্ট সারকারের পুলিশ। সেই ১৭৮টি পরিবারের একজন করে সদস্যর চাকরি এবং আর্থিক সাহায্যের দাবিতে কলকাতার রাজপথে ১৯৯৫ সালে ৬ অক্টোবর ধরনা বসলেন মমতা। ২৩ দিনের মাথায়ে মমতার সেই আন্দোলন বাংলা ছেড়ে দিল্লি মসনদে আছড়ে পড়ল।
১৯৯৭ সালে মমতা বুঝলেন কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে লড়তে ব্যর্থ। তাই নতুন উপায় খুঁজতে, কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৯৮-এর পয়লা জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেস নামে নতুন দল তৈরি করলেন। মূল থেকে তৃণে গেলেন, মানুষের কথা বলবেন বলে, লড়বেন বলে, সে লড়াই মা-মাটি-মানুষের লড়াই।
১৯৯৯ সালে নতুন দল গঠনের পরই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের শরিক হলেন। প্রথমবারের জন্য রেলমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম পূর্ণমন্ত্রী হলেন।
২০০১ সালে মতবিরোধের কারণে এনডিএ ত্যাগ করলেন। ২০০১-এ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়লেন। নির্বাচনে হারে পর সেই বছরই ফের এনডিএ-তে যোগ দিলেন। ২০০১-এর শোচনীয় পরাজয়ের পরে তিনি ও তাঁর দল তৃণমূলের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিরোধীরা। দাঁতে দাঁত চেপে লড়ছিলেন মমতা।
২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য শোচনীয় পরজায় ঘটে তৃণমূলের। রাজ্যে শুধু মাত্র একটি আসনে, দক্ষিণ কলকাতা থেকে তৃণমূলের প্রতীকে জয়ী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এবার কয়লা এবং খনি দপ্তরের পেলেন মমতা।
২০০৬ সাল, নবজাগরণ হল তৃণমূলের, সিঙ্গুরের কৃষি জমি বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন মমতা। জমি রক্ষার আন্দোলন মমতার রাজনৈতিক জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। টাটাদের প্রস্তাবিত ন্যানো কারখানায় যাওয়ার সময় তাঁকে বলপূর্বক বাধা দেওয়া হল। প্রতিবাদে কলকাতার ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে অনশনে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুর আন্দলন মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজৈনৈতিক জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিল। জাতীয় রাজনীতি থেকে তিনি রাজ্যের চালকের আসনে এসে পড়লেন। জমিও রক্ষা করলেন মমতা।
২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলি চালনার ঘটনাতেই প্রতিবাদে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুর আন্দোলন বঙ্গ রাজনীতির নতুন ভবিষ্যৎ রচনা করে। রাজ্য রাজনীতির হওয়া পাল্টাতে শুরু করল।
২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদে জয়ী হল তৃণমূল কংগ্রেস। নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুর আন্দোলনও জিতে নিলেন মমতা। বাংলায় ঘাসফুলের রাজনৈতির জমি শক্ত হল। রাজ্যে পালাবদল আসতে শুরু করল।
২০০৯ সালে বাম শাসনের পতনের শুরু। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোট করে, মমতার নেতৃত্বে ৪২ টি আসনের মধ্যে ২৬টি তেই জোট জয়ী হয়। ২০১০ সালে কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে, ছোট লাল বাড়ির দখল নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১১-র বাংলা যে সবুজ হতে চলেছে তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গেল। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচন তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোট রয়েছে, ২৯৪ আসনের মধ্যে ২২৭ আসনে জয়ী মমতার নেতৃত্বাধীন জোট। যে লাল বাড়ি থেকে টানতে টানতে একদিন মমতাকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, সেই মহাকরণেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরপর ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৪২ টি আসনের মধ্যে ৩৪টিতেই জয়ী হল তৃণমূল কংগ্রেস, জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী তথা দেশের অন্যতম শক্তিশালী বিরোধী শক্তি হয়ে উঠে আসার সেই শুরু। এর অনেক আগেই হাতের হাত ছেড়ে একা লড়তে শুরু করেছিল মমতার জোড়াফুল। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে একা লড়ে বাম-কংগ্রেস জোটকে উড়িয়ে দেয় মমতার তৃণমূল। ২৯৪ আসনের ২১১টিতেই জয়ী তৃণমূল। দ্বিতীয়বার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন রাজ্যে বিজেপির উত্থান ঘটল। বামেরা ক্ষয়ে ক্ষয়ে শেষ, সমান তালেই ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেস, রাজ্যে বিরোধীর জায়গা নিলো গেরুয়া শিবির। ভোট বাড়লেও আসনে কমে কিছুটা ধাক্কা খায় তৃণমূল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ৩৪ থেক কমে আসন হয়ে দাঁড়ায় ২২। বিজেপি পায় ১৮টি। রাজ্যে প্রধান বিরোধী দলের তকমা যায় বিজেপির দখলে। তারপর থেকে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় তৃণমূল। কিন্তু ঐ যে স্ট্রিট ফাইটার-অগ্নিকন্যা ফের একবার আগুন ঝরাতে শুরু করলেন। রাস্তাঘাট, মাঠ-ময়দান কাঁপিয়ে রাজনীতি করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চ্যালেঞ্জ নেওয়াটা সভাবসিদ্ধ। তাঁকে কে হারাবে!
জয়প্রকাশ নারায়ণের গাড়ি আটকানো থেকে শুরু করে মহাকরণ অভিযানে গোটা রাজ্যে কাঁপুনি ধরিয়ে দেওয়া, আবার কখনও ব্রিগেড সমাবেশ থেকে বামফ্রন্ট সরকারের উৎখাতের ডাক, কখনও জাতীয় সড়কে মঞ্চ বেঁধে পড়ে থাকা, রাজপথের রাজনীতির নার্ভ চেনেন মমতা, ২০১৯ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি রাত থেকে ধর্ণা, নাগরিকত্ব বিল বিরোধী আন্দোলন। তাঁর সাফল্যের তালিকা গুনে শেষ করা যাবে না। একুশের জয় তার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু এতগুলো মাইলফলকের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে ২০০৬ সালে মেট্রো চ্যানেলে ২৬ দিনের অনশন। ওই অনশন বাংলার রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলই, সমগ্র ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে একই রাজনৈতিক মঞ্চে এনে হাজির করে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপির চক্রান্তে এবারে নির্বাচনের প্রচার থেকে একদিনের জন্য যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়া হল, তখন তিনি একা প্রতিবাদ করলেন। গান্ধী মূর্তির সামনে বসে প্রতিবাদ, কত শান্ত সে প্রতিবাদ কিন্তু ভীষণ তাঁর দীপ্তি, ভেঙে গুড়িয়ে গেল বিজেপি। ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলের সেই স্মৃতি ফের উঁকি দিল।
তৃণমূলের সবেধন নীলমণি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার প্রতিপক্ষ আরও অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল, আরও অনেক প্রতাপান্বিত। অর্থ, লোকবল, কুৎসা, মিথ্যে প্রচার, কোন কিছুতেই দমেননি অগ্নিকন্যা। বাংলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত একপ্রান্ত হুইলচেয়ারে চষে বেড়িয়েছেন। একুশ যেন ফিরিয়ে দিল অতীতের সেই স্ট্রিট ফাইটারকে। সোজা ব্যাটে পরিযায়ী নেতাদের উড়িয়ে দিয়ে স্ট্রিট ফাইটার মমতা, আজ সারা ভারতের দিদি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চার দশকের রাজনৈতিক জীবন অনন্য এক ইতিহাস। কলেজ জীবনে কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতিতে আসা। তারপর বহু ঘাত,প্রতিঘাত, লড়াই, সংগ্রাম, আন্দোলনের পর নিজের দল গড়ে, আজ তিনি বাংলার মসনদে। দশ কোটি বাংলারি ভরসা তিনি, ইয়াস হোক বা আমফান, অতিমারি হোক বা মধ্যরাতে আগুন লাগুক, ছুটে যাবেন তিনি। বাঙালি জানে বন্যা হলে আর কেউ না আসুক, হাওয়াই চপ্পল পরা পাটা ঠিক আসবে।
আগুনটা আজও নেভেনি। সেদিন বামেদের নামিয়ে আনা অকাল শৈত থেকে বাংলাকে বাঁচাতে যে আগুনটা জ্বলে উঠেছিল, আজ একুশ শতকের বিভাজনের ভারতে দাঁড়িয়ে সেই আগুন লেলিহান শিখা হয়ে জ্বলছে। আর ধ্বনিত হচ্ছে বিভিজনের এই বদ্ধভূমি ভালবাসার আগুন জ্বালো।
বাংলা জানে, দুর্গমগিরি, কান্তারমরু, দুস্তর পথ পেরোতে সেই পা দুটোই আছে। বাঙালি নিশ্চিন্তে কারণ, তাঁদের কান্ডারি হুঁশিয়ার আছেন। বাংলা নিশ্চিন্তে কারণে বাংলার একটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন।