লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যে রথযাত্রা করে মেরুকরণের তাস খেলতে চাইছে BJP
আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গে ফের ‘রথের রাজনীতি’ করতে চাইছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপি সূত্রে এরকমই ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও এবিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব।
গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার বঙ্গ বিজেপি’কে নিয়ে নাজেহাল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কোনও ওষুধেই কাজ হচ্ছে না। বুথ স্তরে শক্তিশালী সংগঠন করার কথা বললেও তা আজও অধরা। রাজ্যস্তরের নেতাদের কাছে নীচুতলার খবর সেরকম নেই বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন বাইরে থেকে সমীক্ষক দল নিয়োগ করছে।
এই পরিস্থিতিতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের আসনগুলি ধরে রাখা এখন বিজেপি’র কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই তাদের পুরনো অস্ত্র রথেই ভর করতে চাইছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনাও হয় বলে সূত্রের খবর। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে যেমন পাহাড় থেকে সমুদ্র- গোটা রাজ্যে ৪-৫টি বিজেপির রথ বেরিয়েছিল, ঠিক সেরকমই এবার ফের রথযাত্রা করার পরিকল্পনা নিচ্ছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। গতবারের মতো এবারেও রাজ্যের প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রের উপর দিয়ে যাবে বিজেপির এই রথ। মূলত জনসংযোগ বাড়াতেই রাজ্যজুড়ে রথযাত্রা বের করার পরিকল্পনা নিয়েছে গেরুয়া শিবির।
এদিকে, ১৯ জানুয়ারি রাজ্যে আসবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে এমনই দাবি করেছেন দলের রাজ্যস সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জানুয়ারি মাসে নাড্ডা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সফর স্থগিত হয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছিল বঙ্গ বিজেপি নেতারা। এদিন সুকান্ত ফের জানালেন, জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক হয়ে যাওয়ার পর ১৯ জানুয়ারি আসবেন নাড্ডা। তারপরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও আসবেন। যদিও মোদী ও শাহ কবে আসছেন তার কোনও দিনক্ষণ অবশ্য্ দলের তরফে এদিন জানানো হয়নি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, বঙ্গ বিজেপি’র যা হাল তাতে এই রথ যাত্রাই তাদের আর কোনও উপায় এই মুহূর্তে নেই। নিজেদের ঘরের অন্দরের বিবাদ সামলাতে সামলাতেই তাদের সময় চলে যাচ্ছে। কর্মীদের মনোবল তলানিতে ঠেকেছে। এই অবস্থায় রথ যাত্রা করলে যদি কর্মীদের কিছুটা চাঙ্গা করা যায়। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলের মতে, পশ্চিমবঙ্গে ‘রথের রাজনীতি’ খুব একটা কার্যকর হবে বলে মনে হয় না। সেটা আগেও প্রমানিত হয়েছে। কিছুটা হাওয়া তোলা গেলেও ভোট বাক্সে কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আবার এই রথ যাত্রা থেকে দাঙ্গা, হিংসা ছড়ানোরও একটা আশঙ্কা থেকে যায়।