বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

একাধিক কঠিন রোগকে টাটা করতে প্রতিদিন পান খান, বলছেন বিজ্ঞানীরা

January 7, 2023 | 2 min read

একসময় বহু বাড়িতেই খাওয়ার পরে পান খাওয়ার চল ছিল। ঘরে ঘরে পানের বাটাও হতো। তবে এখন এই অভ্যাস অনেকটাই কমে গেছে। তারপরও মিন্ত্রণ বাড়িতে এখনও পান পাতা রাখার রীতি আছে। বাঙালি তথা ভারতীয়দের জীবনে, সাহিত্যে, সিনেমায়ও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে পান। অমিতাভ বচ্চনের লিপে ‘খাইকে পান বানারসওয়ালা’ গানটি তো মাচার জলসা থেকে অভিজাত পার্টি মাতিয়ে আসছে কয়েক দশক। আবার কবিতানুরাগীরা এ নিয়ে কথা বলতে গেলে পূর্ণেন্দু পত্রীর ‘পান খাওয়ার গল্প’ উল্লেখ করতে পারেন।


আয়ুর্বেদে পানের গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। তবে এবার পানের গুণগান করছেন বিজ্ঞানীরাও। ব্রাজিল, রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলির সরকারি সংস্থা পান নিয়ে আধুনিক গবেষণায় বিনিয়োগ করেছে। গবেষণা সফল হলে টিবি, কলেরা, মূত্রনালির সংক্রমণ বা নিউমোনিয়ার মতো রোগের সুপারবাগ নির্মূল করার অস্ত্রের হদিশ মিলবে।


ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা—এই পাঁচ উন্নয়নশীল দেশের যৌথ মঞ্চ ‘ব্রিকস’। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী গবেষণায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্রিকসের একটি ‘এসটিআই ফ্রেমওয়ার্ক’ রয়েছে। দেশগুলির সরকারি সংগঠন এর মাধ্যমে গবেষণায় অর্থ বিনিয়োগ করে। পানে থাকা ছয় থেকে আটটি যৌগকে আগেই ‘গোল্ডেন কম্পাউন্ড’ বলে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। সেই গবেষক দলের প্রধান ছিলেন বাংলার বিজ্ঞানী দেবমাল্য বাড়। তিনি জানান, পূর্ব মেদিনীপুরের নোনাকুড়ি রাজ্যের অন্যতম বড় পানবাজার। সেখানকার ছেলে হওয়ায় পানের গুণাগুণ নিয়ে তাঁর আগ্রহ প্রথম থেকেই ছিল। ১০ বছর আগে তাঁরই নেতৃত্বে ভারত, মেক্সিকো, ব্রাজিল, ডেনমার্ক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি দল পান নিয়ে গবেষণা করে ওই যৌগগুলি চিহ্নিত করে। সেই যৌগগুলি উন্নত ও কার্যকরী অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য ব্রিকসের মাধ্যমে গবেষণার অর্থ এসেছে।


রাশিয়ার বিজ্ঞান এবং উচ্চশিক্ষা মন্ত্রক, দক্ষিণ আফ্রিকার মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল, ব্রাজিলের ন্যাশনাল কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল ডেভেলপমেন্ট ব্রিকসের ‘এসটিআই ফ্রেমওয়ার্ক’-এর অন্যতম অংশীদার। তাঁরাই গবেষণার অর্থ জোগাবে। কিন্তু পানের আদিভূমি ভারত এ ব্যাপারে উৎসাহ দেখায়নি। দেবমাল্যবাবু নিজে ব্রাজিলের ফেডারাল ইউনিভার্সিটি অব মিনাস জেরাইসের অধ্যাপক এবং এই প্রকল্পের সহ গবেষক। তবে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতেই গবেষণা বলে ভারত অনুদান না দিলেও দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার অংশ হতে পারছে।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর অগ্রাধিকারের এক নম্বর তালিকায় রয়েছে পি.এরুগিনোসা, ই কোলাই, কে.নিউমোনি, এম টিউবারকিউলোসিসের মতো মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়াগুলি (সুপারবাগ)। এগুলি ধ্বংস করতে পানের রসের কার্যকারিতা কতটা, সেটাই গবেষণার বিষয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Health, #diseases, #benefits, #Betel, #Betel leaf

আরো দেখুন