ডবল ইঞ্জিন সরকারের ঔদাসীন্যই কি যোশীমঠকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিল?
প্রকৃতির তাণ্ডবলীলা শুরু হয়েছে যোশীমঠে, যেকোনও মুহূর্তে ধসে যেতে পারে এই তীর্থস্থান। কিন্তু কীসের জন্যে এমনটা হল? সরাসরি অভিযোগ উঠছে উত্তরাখণ্ড সরকার ও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। বারংবার সতর্কবাণী শুনেও টনক নড়েনি সরকারের, বেআইনি নির্মাণ চলেছে দেদার। তাতেই কি এমন পরিণতির মুখোমুখি হল যোশীমঠ?
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৫০০ থেকে ৩০৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত যোশীমঠ উত্তরাখণ্ডের পবিত্র ধর্মীয় স্থান, যা চারধাম যাত্রার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ক্রমশ এই যোশীমঠ তলিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার এখানকার মা ভগবতীর পুরনো একটি মন্দির হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। প্রায় ছ’শোর বেশি বাড়ি-ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে, সেনাবাহিনীর অধীন বিস্তীর্ণ জমি বসে যাচ্ছে, সেনা ক্যাম্পের জমিতে একাধিক ফাটল দেখা গিয়েছে, রাস্তায় বড় বড় ফাটল, এমনকি পাহাড়ের গায়েও ফাটল! কোন বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে যোশীমঠ? উদ্বিগ্ন উত্তরাখণ্ড সরকার থেকে আমজনতা সকলেই।
যোশীমঠ নিয়ে মারাত্মক সতর্কতা দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা৷ দেহরাদুনের হিমালয়ান জিওলজি প্রতিষ্ঠানের গবেষক কালাচাঁদ সাঁই বলেছেন, আধুনিক সভ্যতার চাপ আর নিতে পারছে না পাহাড়৷ যোশীমঠের টেকা খুবই মুশকিল। এ ঘটনায় কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে সরকারকে। এমনটা যে হতে পারে, তা আন্দাজ করে অনেক আগেই সরকারকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। দাবি করা হচ্ছে, সেকারণেই উত্তরাখণ্ডের যোশীমঠ আজ ধ্বংসের মুখে। ধসে জর্জরিত পাহাড়ি নগরের মানুষজন এমনই অভিযোগ করছেন। যোশিমঠ বাঁচাও সংঘর্ষ সমিতির তরফে অতুল সাতি বলেছেন, তারা বিগত ১৪ মাস যাবৎ কর্তৃপক্ষের কাছে সমস্যার কথা জানাচ্ছেন। কিন্তু লাভ হয়নি, পরিস্থিতি যখন হাতের বাইরে চলে গিয়েছে, তখন বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হচ্ছে। তিনি আক্ষেপ করে বলছেন, সঠিক সময়ে সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিলে এতগুলি পরিবারকে সঙ্কটে পড়তে হত না। যোশীমঠের এই পরিস্থিতির জন্য এনটিপিসির সুড়ঙ্গ নির্মাণের প্রকল্পের দিকেও অভিযোগের তীর উঠেছে।