গুরুগম্ভীর নন, তিনি সরস, স্যাটায়ারপ্রেমী বিবেকানন্দের সন্ধান করল দৃষ্টিভঙ্গি
সৌভিক রাজ
অস্তিত্বের জন্যে সংগ্রাম। আমাদের অতিপ্রিয় শব্দ, কিন্তু এই সব লড়াই-সংগ্রাম বিবেকানন্দ জয় করেছেন হাসিমুখেই। সারা জীবনে সবকিছুর মধ্যে তাঁর মুখের হাসিটি কিন্তু অক্ষত ছিল। শুধু তাঁর নিজের মুখের হাসিই নয়! তিনি আশেপাশের মানুষদেরও হাসাতেন। তাঁর রসবোধ ছিল প্রশ্নাতীত। অত্যন্ত পরিহাস প্ৰিয় মানুষ ছিলেন তিনি। সব কিছু নিয়ে, এমনকি নিজেকে নিয়েও প্র্যাক্টিক্যাল জোক করতেন। স্যাটায়ারের ছোঁয়া তাঁর কথাতেই পাওয়া যায়; তেমন তাঁর রচনাতেও এই হাস্য রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে এক সুন্দর প্রশ্ন উত্তরের সন্ধান মেলে…
স্বামীজি! আপনি এতো হাসেন কেন? আপনি না আধ্যাত্মিক মানুষ।
এই বিমর্ষ ধর্মীয় প্রশ্ন ও তিরস্কার শুনে, স্বামীজি হাসতে হাসতে আরো উচ্ছল হয়ে উঠলেন। আরে আধ্যাত্মিক বলেই তো হাসি।
আমরা তো পাপী নই। আমরা আনন্দের অমৃতের সন্তান।
সত্যিই তো তাই। তবে এই রসবোধ বা সদাহাস্য স্বভাব বিবেকানন্দ, তাঁর পিতা বিশ্বনাথ দত্তের থেকেই পেয়েছিলেন। যা ওঁর জীবনবোধ থেকে ছেলে নরেন্দ্রনাথ অর্জন করে। এবং পরে রামকৃষ্ণদেবের সংস্পর্শে তা আরো বহুগুণে বেড়ে যায়।
বিবেকানন্দ নাম দিতে খুব ভালোবাসতেন, যখন তখন নাম দিয়ে দিতেন, যেমন জনৈক রামকে হঠাৎই ক্যাবলা বলে ডেকে উঠেছিলেন। তারপর সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলেন “নাম একটা নাম মাত্র, যেমন লোকে বলে বিবেকানন্দ।” নাম দেওয়ার এই পর্বে রামকৃষ্ণদেবও বাদ যেতেন না। তাঁকেও তাঁর লরেন বৃদ্ধ, বুড়ো, মূর্তিপূজক ব্রাহ্মণ বলে ডাকত কখনো কখনো। যেমন ঠাকুরের ভক্ত যোগেশ্বর চন্দ্র চন্দ্রের নাম তিনি রেখেছিলেন দমদম মাস্টার, কারণ তিনি দমদমের একটি স্কুলে মাস্টারি করতেন তাই। এই নাম দেওয়ার অভ্যেসকে নিজেই বলেছেন “সব যায়। পোড়া নামের মোহ যায় না।”
খুব ভালো মিমিক্রি করতেন বিবেকানন্দ, অন্যের কথা, কণ্ঠস্বর খুব সহজে নকল করার ক্ষমতা ছিল বিবেকানন্দের।
তখনও তিনি নরেন্দ্রনাথ, সেই সময়ে চিনা মানুষদের কথা খুব সুন্দর নকল করতে পারতেন। ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সামনে তিনি স্বর নকল করে খুবই মজা করতেন।
এ-জিনিস বিবেকানন্দ হয়েও অক্ষত ছিল, স্বামী বিবেকানন্দ একদিন অধ্যাপক ম্যাক্সমুলারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন; সঙ্গে ছিলেন সারদানন্দ।
অধ্যাপক ম্যাক্সমুলারের সঙ্গে কী কথাবার্তা বলেছিলেন, সে কথা কাউকে বলেননি ঠিকই, কিন্তু বিবেকানন্দ ম্যাক্সমুলার কণ্ঠস্বর নকল করে ঘনিষ্ট মানুষদের সামনে কথা বলতেন। আমোদ প্রমোদে থাকতে পছন্দ করতেন তিনি। রাতে শোবার সময় ভাইবোনদেরকে সঙ্গে নিয়ে গল্প শোনাতেন, সে সব গল্প ছিল নিছক মজার আর অলীক কল্পনার ফসল। বন্ধু শিষ্য সকলের সঙ্গেই এই মজার ছলেই তিনি মিশতেন। একবার ১০/১২ জন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল, তিনি তাঁদের সঙ্গে মিশে গেলেন। কারোর পিঠে কিল মারছেন আবার কখনো কাঁধ ঝাকানি দিচ্ছেন, যেন কত দিনের চেনা।
মানুষকে তিনি হাস্যবোধ দিয়েই আপন করে নিতেন, তাদের সংকোচ বোধ ভেঙে দিতেন। যেমন শিকাগো থেকে ফেরার পরে রামকৃষ্ণের দাদার ছেলে রামলাল তাঁকে আপনি-আজ্ঞে করছিল, করেচেন, খেয়েচেন এসব শুনে তিনি বলেছিলেন এতো চেন চেন বাদ দিন তো আমি সেই বিলেই আছি।
তাঁর কথাতেও থাকত মজার উপাদান। গুরুগম্ভীর আলোচনা করতে করতেও মজা করতে পারতেন। মার্কিন মুলুকে একবার এক সমাবেশে বলে উঠেছিলেন ‘আমার বয়স!’
সবাই কৌতূহলে ফেটে পড়ছেন, এমন সময় বলে দিলেন খুব বেশি না। সবাই হেসে ফেললেন। এইভাবেই সবাইকে হাসাতেন। মজা করতেই উত্তেজনা তৈরি করেছেন এমন দৃষ্টান্তও আছে। আমেরিকার এক সমাবেশে ফিসফিস করে একদা বলেছিলেন “আমি এখানে প্রলোভনে ধরা দিয়েছি।”
সবার প্রশ্ন কার? কে সে?
ওঁর উত্তর… আমার প্র-লো-ভ-ন… অর্গানাইজেশন।
কৌতূহল ভেঙে গেলেও রসভঙ্গ হল না। নিজে না হেসে অন্যকে হাসাতে পারতেন। এটাই তাঁর রসবোধের সবচেয়ে বড় পরিচয়। স্বামীজি তাঁর বিরুদ্ধে কথা উঠলেও তাতে রেগে না গিয়ে, বিচলিত না হয়ে; পরিহাস করে, পরিস্থিতি অনুকূলে নিয়ে আসতেন। একবার লস অ্যাঞ্জেলেসে এক মহিলার আমন্ত্রণে গিয়ে তিনি পাইপ খাচ্ছিলেন, ওই মহিলা ক্ষুব্ধ হয়ে বললেন ভগবান যদি চাইতেন মানুষ ধূমপান করুন, তবে তিনি মাথায় একটা করে চিমনি দিতেন। স্বামীজি অবিচলত হয়ে নিজস্ব ভঙ্গিতে বললেন, তা না করে ভগবান আমাদের মাথায় পাইপ আবিষ্কার করার মতো বুদ্ধি দিয়েছেন। সবাই হেসে উঠল আর স্বামীজি ওই মুহূর্ত জয় করে পরিস্থিতি অনুকূলে আনলেন।
তিনি তাঁর পরিহাস দিয়েই পরাজিত করেছেন আমাদের ভারতীয়দের বিরুদ্ধে থাকা বদ্ধমূল ধারণাকেও। এক্ষেত্রে পরিহাস ও রসবোধই তাঁর হাতিয়ার হয়ে উঠছে। আমেরিকানরা ভারতীয়দের দেখলেই মুখ বেঁকাতেন। ভারতীয়দের সম্পর্কে তাঁদের ধারণাটাও ছিল, ভারতীয়রা বুঝি গোঁড়া, কুসংস্কারাচ্ছন্ন! একদিন এক বিদেশির সঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দের কথা হচ্ছিল, কথাপ্রসঙ্গে বিদেশিটি বিবেকানন্দকে জিজ্ঞাসা করলেন, আচ্ছা স্বামীজি, শুনেছি ভারতবর্ষে নাকি শিশু জন্মগ্রহণ করলেই তাকে গঙ্গার জলে ফেলে দেওয়া হয়?
বিদেশিটির মুখে এইরকম প্রশ্ন শুনে স্বভাবতই বিবেকানন্দের মাথা গরম হয়ে গেল। তবু তিনি রাগ দমিয়েই ঠোঁটে কিঞ্চিৎ হাসি এনে বললেন, আমি কিন্তু বেঁচে গিয়েছি।
বিদেশিটি থামলেন না। আবার প্রশ্ন করলেন বিবেকানন্দকে, স্বামীজি, আপনাদের দেশে কন্যাসন্তান জন্মালেই নাকি তাকে কুমিরের মুখে ছুঁড়ে দেওয়া হয়? এবার রাগের মাত্রা ছাড়িয়ে গেল। তবুও তিনি মুখে হাসি নিয়ে বিদেশিকে বললেন, আপনি ঠিকই শুনেছেন, সেই জন্যই তো আজকাল ভারতবর্ষে পুরুষরা সন্তান প্রসব করছে।
এহেন জবাব পেয়ে সেই বিদেশি আর স্বামী বিবেকানন্দের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার সাহস পেলেন না। শুধু রসবোধ দিয়ে বিদেশিটি পরাজিত হলেন ভারতীয়র কাছে! ভাঙল বদ্ধমূল ধারণা। বিদেশিদের চুপ করিয়েও দিতেন এই ভাবেই, একবার গুডউইন হঠাৎ বলে উঠলেন, জানেন তো, কোনো মানুষ যখন, কোনো গাধাকে প্রহার করে আমার খুব রাগ হয়!
গুডউইনের কথা শুনেই তৎক্ষণাৎ বিবেকানন্দ বলে উঠলেন, ঠিকই বলেছেন মশাই, গাধাকে মারাতে আপনার আসলে স্ব-শ্রেণীর প্রতি প্রেম উথলে ওঠে, তাইতো আপনার এত রাগ হয়! নয় কি?
বিবেকানন্দের কথা শুনে মিস্টার স্টার্ডি হো হো করে হেসে উঠলেন।
গুডউইন লজ্জায় আর বসে থাকতে পারলেন না। আচ্ছা, আমি এখন আসি, একটা জরুরি কাজ আছে, বলেই দিলেন চম্পট। এই গুডউইন সাহেবই একবার নিজের গোঁফে হাত বোলাতে বোলাতে বলেছিলেন, এই গোঁফের জন্যে মডেল হলে যে কোনো শিল্পী হাসতে হাসতে তাকে দশ পাউন্ড দেবে। স্বামীজি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বললেন, হ্যাঁ এটা সুন্দর ঝাঁটার মডেল হতে পারে।
এই স্যাটায়ারের অস্ত্র স্বামীজি সর্বত্র প্রয়োগ করতেন, তাঁর স্নেহভাজন মনোমোহন গঙ্গোপাধ্যায় একবার প্রবন্ধ লিখলেন উদ্বোধনের জন্যে, নাম দিলেন ‘জ্বলন’। নিরস সেই প্রবন্ধ পড়ে স্বামীজি বললেন বাবা, কী হাড় জ্বলন।
এই রস মিশ্রিত বাক্যবাণ থেকে রামকৃষ্ণও রেহাই পাননি। দক্ষিণেশ্বরে একবার স্বামীজির জন্যে মা রান্না করলেন, রুটি আর মুগডাল। ঠাকুরের ইচ্ছে নরেন খাবে। খাবার প্রায় শেষ ঠাকুর জিজ্ঞাসা করলেন কেমন খেলি? স্বামীজির উত্তর রোগীর পথ্যের মতো খেলাম। তারপর থেকে ঠাকুর সারদা মাকে নির্দেশ দিলেন, এবার থেকে নরেনের জন্যে ঘন ছোলার ডাল আর মোটা মোটা রুটি বানাতে হবে। রূঢ় বাক্য বিনিময় হল না, রাগারাগি নেই, মাঝখান থেকে কাজ হাসিল হয়ে গেল। এটাই হল সরস হওয়ার সুফল।
খাবারের কথা উঠল যখন, তাহলে বিবেকানন্দের রসনার রসিকতার কথা বলে যাই। উপোসী আধ্যাত্মিকদের তিনি বলতেন কী রে ডাল কুত্তা হচ্ছিস নাকি? না খেয়ে ইশ্বর সাধনা তিনি বা তাঁর গুরু রামকৃষ্ণ কেউই পছন্দ করতেন না। বিবেকানন্দ কোনো দিনই খাওয়ার বিষয়ে কিছু বাছবিচার করেননি। হ্যাঁ, অভাবে আধপেটা খেয়েছেন, না খেয়েও থেকেছেন কিন্তু তা নিতান্তই অভাবে, অধ্যাত্মবাদ থেকে নয়। আসলে এই ডালকুত্তার কথাটি রূপক, মজার ছলে প্রচলিত ছক ভাঙার কথা। ঠিক এইরকমই রসিকতা করতে করতে খাবারের রূপক দিয়েই প্রচলিত ধারণাকেও তিনি ভেঙে দিয়েছেন, তাঁর পরিব্রাজক জীবনে তাঁকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে তিনি কোন ধরনের সন্ন্যাসী – পুরী না গিরি? স্বামীজি তখন হৃষিকেশে, তিনি উত্তর দিলেন পুরীও না গিরিও না, তিনি কচুরি সম্প্রদায়ের। এতে তাঁর সেন্স অফ হিউমারের সঙ্গে সঙ্গে বদ্ধমূল সনাতনী ধারণা ভাঙার এক প্রচেষ্টা দেখা যায়। আর তাঁর কচুরিপ্রীতি তো আছেই। একবার চিড়িয়াখানা দেখতে দেখতে শিষ্যদের বলেছিলেন তোরা কচ্ছপের ডিম খাস মানে সাপ খাস। আবার মজা করে ডারউইনের তত্ত্বও জুড়ে দিয়েছিলেন। রামব্রহ্ম সান্যাল পর্যন্ত অবাক!
খাওয়ার সময় একেবারে ছেলে মানুষ হয়ে যেতেন, একবার কচুরি খাচ্ছেন, কিছুটা খেয়ে একজনকে দিলেন। পরক্ষণেই বলে ওঠেন, ঐটে থেকে আর একটু দে না। কি ভালো খেতে, কী বলিস?
এই জিনিস বারবার করতে দেখা গিয়েছে, নোয়াপাতি ডাবের মধ্যে চিনি বরফ দিয়ে খাচ্ছেন, বলরাম বসুর বাড়িতে, কাউকে বলে দিলেন নে তুই একটু খা, ব্যাস সে যেই খাচ্ছে তক্ষুনি বললেন, আমায় একটু দে না… এটাই ছিল তাঁর সরস সারল্য।
কেউ পরিবেশন করলে মজাও করতেন, বাঙালিদের মধ্যে যা দেখা যায় আরকি, সবাই মিলে খেতে বসে মজা করা। চাটনি পরিবেশন করা হচ্ছে স্বামীজি বলে উঠলেন, দিতে দিতে আবার লাল ফেলে দিস না যেন। এগুলোই প্র্যাক্টিক্যাল জোক। সবাই সিরিয়াস, হঠাৎ করে এমন একটা কথা! হাসি খেলে গেল সবার মনে, এটাই কমিক রিলিফ।
রসনার রসবোধ দিয়ে তিনি নানান উত্তরও দিতেন। স্বামীজির লঙ্কাপ্রীতি আমাদের সকলের জানা। একবার হরিপদ মিত্র তাঁর এত লঙ্কা খাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলতেন, সন্নাসীদের পেটে কত দূষিত জল যায়, লঙ্কা হচ্ছে তার ওষুধ। অন্য সন্ন্যাসীদের যে কাজ চরস গাঁজা দিয়ে হয়, তিনি সেই কাজ লঙ্কা দিয়েই করতেন, এমনটাই তিনি বলতেন। আসলে লঙ্কাপ্রীতির কারণের নেপথ্যে রয়েছে অভাব, পরে তাই হয়ে যায় অভ্যেস। তিনি লঙ্কা খাওয়ার প্রতিযোগিতাও করতেন। একবার এই লঙ্কা দিয়েই জব্দ করেছিলেন সাহেবকে, সাহেব তাঁর সব জিনিস ঘেঁটে দেখছেন, চেখে দেখছেন, স্বামীজির এ জিনিস পছন্দ যে হয়নি, বলাই বাহুল্য! হঠাৎ লঙ্কা দেখিয়ে সাহেবের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, এগুলো ভারতীয় কুল। বলেই ঘরে থেকে সরে গেলেন… আর সাহেব বিবেকানন্দের কথা শুনে মুখে পুরে লঙ্কাকাণ্ড বাঁধালেন।
ঈশ্বর পরিহাস, ধর্ম পরিহাস, রসনা নিয়ে রসিকতার পাশাপাশি তিনি খুব আত্মপরিহাস করতেন। নিজেকে নিয়ে প্রতিমুহূর্তে মজা করতেন, নিজের চেহারা নিয়ে রাখাল মহারাজকে চিঠিতে লিখলেন চেহারা যা দাঁড়িয়েছে তাতে দরজা কাটতে হবে। নিজের স্ফীত উদর অর্থাৎ বাঙালির ভুঁড়ি নিয়ে বলেছিলেন, আমি বরাবর ফরোয়ার্ড মানুষ। আবার বলতেন, সন্ন্যাসীর শরীরে মেদ হল ফেমিন ইন্সিওরেন্স ফান্ড। আধ্যাত্মিক মানুষ মোটা কী করে হন, এর উত্তরও প্রস্তুত থাকত তাঁর কাছে, বলতেন এই মোটা শরীরের দারুণ তিনি কুমিরের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছেন।
একবার লন্ডনের ভোজসভায় ক্রিকেটার রণজিৎ সিংহ, আই সি এস পরীক্ষায় প্রথম স্থানাধিকারী অতুল চ্যাটার্জির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাঁকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হল? তার কারণ তিনিই আবিষ্কার করলেন, বললেন তিনি ভারতের জাতীয় প্রাণী শ্রীহস্তীর প্রতিনিধি।
প্রগাঢ় রসবোধ না থাকলে এতো আত্মপরিহাস করা সম্ভবই না। তিনি গুরুগম্ভীর সন্ন্যাসী নন বরং রসেবশে থাকা আদ্যোপান্ত এক রসিক মানুষ। আর এই রসবোধ দিয়েই তিনি আধ্যাত্মবাদ ও অদ্বৈতবাদকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। নিগুঢ় ধর্মতত্ত্বে আটকে না থেকে তাকে রসবোধ দিয়ে মুক্ত করেছেন, যার ফলে মানুষও তাকে সানন্দে গ্রহণ করেছেন, তার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পেরেছে।
দুঃখ, সমস্যাকে হেলায় তিনি হারিয়েছেন পরিহাস দিয়ে, উপস্থিত বুদ্ধি আর রসিকতার এক অদ্ভুত মিশেল তিনি ঘটিয়েছেন তাঁর গোটা জীবনে। এটাই তাঁর সবচেয়ে বড় সম্পদ। যা দিয়ে বিশ্ব জয় করেছেন তিনি।