আবাস প্লাসের টাকা নিয়েও টালবাহানা, বাংলাকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টায় মোদী সরকার?
বাংলার বিরুদ্ধে মোদী সরকারের বঞ্চনা চলছেই। এবার ১০০ দিনের কাজের পর, আবাস প্লাসের ক্ষেত্রেও একই ছবি। ফের প্রকল্পের বরাদ্দ নিয়ে টালবাহানা শুরু করেছে মোদী সরকারের। দোরগোড়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচন। আগে সুকৌশলে বাংলাকে বেকায়দায় ফেলতে উঠে পড়ে লেগেছে মোদী সরকার, এমনই অভিযোগ উঠছে নানা মহল থেকে। আবাস প্লাসকে কেন্দ্র করে রাজ্যের উপর একগুচ্ছ কড়া শর্ত চাপিয়েছিল মোদী সরকার। কোনভাবেই বাংলাকে বিপদে ফেলতে পারেনি মোদী সরকার। যাবতীয় শর্ত পূরণ করেছে রাজ্য। ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কোনও প্রশ্ন তোলেনি মোদী সরকার। কিন্তু এসবের পরেও, বরাদ্দ ৮ হাজার কোটি টাকা নিয়ে টালবাহানা শুরু করেছে মোদী সরকার। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা না পাঠিয়ে নিজেদের বেঁধে দেওয়া শর্তই ভেঙেছে মোদী সরকার। কিন্তু উত্তর মেলেনি।
চলতি অর্থবর্ষের মাত্র আড়াই মাস সময় বাকি। চলতি অর্থবর্ষ শেষের আগেই, এই বিপুল সংখ্যক বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। সামগ্রিকভাবে গ্রামবাংলায় সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের প্রায় আট মাস পর গত ২৪ নভেম্বর বাংলাকে ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮টি বাড়ি নির্মাণে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয় মোদী সরকার। সেই সঙ্গে ছ’দফা শর্তও দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, ট্রেজারি থেকে অনুমোদনের এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে প্রত্যেক উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা পাঠাতে হবে। বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর। তারপর প্রায় দু’সপ্তাহ অতিক্রান্ত। রাজ্যের ভাগের ৪,৮০০ কোটি টাকা তৈরি রেখেছে বাংলার অর্থদপ্তর। মোদী সরকারের ভাগের ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ৮,২০০ কোটি টাকা ছাড়া হয়নি। চলতি অর্থবর্ষের মধ্যে ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরি নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রের ভাগের টাকা ছাড়া বাড়ি তৈরি করা কার্যত অসম্ভব। ইতিমধ্যেই আবাস প্লাস প্রকল্পের এই বিষয়টি উল্লেখ করে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়েছে নবান্ন। কিন্তু কোনও উত্তর আসেনি। প্রসঙ্গত, চলতি মাসের শুরুতে আবাস প্লাসের তালিকা যাচাইয়ের কাজ খতিয়ে দেখতে মালদা ও মুর্শিদাবাদে এসেছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। প্রশাসনিক মহলের ধারণা, হয়ত সেই প্রতিনিধি দলের রিপোর্টের অজুহাতেও টাকা আটকে রেখেছে মোদী সরকার। বাড়ি তৈরির জন্যে উপভোক্তাদের এক এক জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তিন কিস্তিতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা যায়। রাজ্যে আবাস প্রকল্পের জন্য একটি নোডাল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে। ওই অ্যাকাউন্টেই কেন্দ্র এবং রাজ্যের ভাগের টাকা জমা পড়ে। জানা গিয়েছে, নোডাল আকাউন্টে নিজের ম্যাচিং ফান্ড পাঠানোর জন্য ফাইল তৈরি করে ফেলেছে রাজ্যের অর্থদপ্তর। মোদী সরকারের টাকা এলেই রাজ্যের টাকা পাঠানো হবে।