GST-র পর আয়কর, চলতি অর্থবর্ষে রেকর্ড আদায় বাংলায়
করোনা সামলেও এগিয়ে চলেছে বাংলার অর্থনীতি। জিএসটি থেকে আয়কর আদায়, এসবেরই পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে আর্থিক স্থিতিশীলতার মধ্যে রয়েছে বাংলা। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম থেকেই জিএসটি আদায়ে বাংলার পরিসংখ্যান চমকপ্রদ। এবার আয়করও নজির গড়ল। গত আর্থিক বছরে আয়কর আদায়ের নিরিখে রেকর্ড আদায় হয়েছিল বাংলা। মনে করা হচ্ছে, চলতি বছর বাংলা সেই অঙ্কেও ছাপিয়ে যেতে পারে। বাংলায় চলতি অর্থবর্ষে ইতিমধ্যেই আয়কর বাবদ প্রায় সাড়ে ৪১ হাজার কোটি টাকা আদায় হয়েছে। যা ওই একই সময়ের মধ্যে গত অর্থবর্ষের তুলনায় ৮.৯ শতাংশ বেশি। আরও একটি পরিসংখ্যান সামনে এসেছে। আয়কর দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্পোরেটদের সঙ্গে রীতিমতো পাল্লা দিয়েছেন সাধারণ চাকরিজীবীরা। চলতি অর্থবর্ষে বাংলায় এখনও পর্যন্ত কর্পোরেট ট্যাক্স বাবদ আদায় হয়েছে প্রায় ২২ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। চাকরিজীবীদের থেকে আয়কর আদায়ের পরিমাণ প্রায় ১৯ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা। এবারই প্রথম এমনটা হল।
উল্লেখ্য, গোটা অর্থবর্ষ জুড়েই নির্দিষ্ট সময় অন্তর আয়কর জমা করতে হয়। বাংলায় গত ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আয়কর আদায়ের পরিমাণ মোট ৪১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। এই একই সময়ের মধ্যে গত অর্থবর্ষে আয়কর বাবদ প্রায় ৩৮ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবর্ষ শেষদিন অর্থাৎ ৩১ মার্চ পর্যন্ত আয়কর জমা দেওয়া যায়। ফলে আদায়ের অঙ্ক আরও অনেকটা বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে তা গত বছরের আদায়ের অঙ্ককেও পেরিয়ে যেতে পারে।
অন্যদিকে, চলতি অর্থবর্ষে জিএসটি আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জিএসটি খাতে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি টাকা আদায় হয়েছে বাংলায়। গত অর্থ বছরের তুলনায় বৃদ্ধির হার ২৫ শতাংশ। একই সঙ্গে ইনকাম ট্যাক্স দেওয়ার প্রবণতাও বাড়ছে। আয়কর দপ্তরের কর্তাদের মতে, বাংলায় সাধারণ মানুষের মধ্যে কর দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। শিল্পের অবস্থাও স্থিতিশীল, করদাতাদের তালিকায় অনেক নতুন নাম সংযোজিত হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আয় অঙ্ক লুকিয়ে যাওয়া কঠিন। একদা করদাতাদের একাংশ নিজেদের আয় গোপনে করতে পারতেন, পরিকাঠামোগত কারণে ধরা পড়ত না। কিন্তু এখন তা কার্যত অসম্ভব। ব্যাঙ্ক বা প্যানের সঙ্গে আধার সংযুক্তির কারণে কোথায় কী লেনদেন হচ্ছে, তা আর গোপন রাখা যাচ্ছে না। বছরভর লেন্দেনের যাবতীয় তথ্য, আয়কর দপ্তর সহজেই পেয়ে যাচ্ছে। করদাতারা রিটার্ন ফাইল করার সময়ই তাদের আয়ের উৎসগুলি দেখতে পারছেন। ফলে চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে আয়ের তথ্য লুকিয়ে যাওয়া কঠিন। এসব কারণেই আয়কর আদায়ের অঙ্ক বাড়ছে।