ঘোষকের জোড়া তথ্য বিভ্রাটে তাল কাটল RSS-এর ‘নেতাজি লহ প্রণাম’ কর্মসূচির
গোড়ায় গলদ, ঘটা করে নেতাজির জন্মদিন পালন করেছে সঙ্ঘ। কিন্তু দেশনায়কের কত তম জন্মদিন তাই জানেন না ঘোষক! যদিও সে অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই, ঐতিহাসিকগণ থেকে শুরু করে নেতাজি-কন্যা সকলেই নেতাজির গৈরিকীকরণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এবার নেতাজির জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও পিছু ছাড়ল না বিতর্ক! গতকাল অর্থাৎ সোমবার শহিদ মিনার ময়দানে আরএসএস-এর ‘নেতাজি লহ প্রণাম’ কর্মসূচির মঞ্চ থেকে অনুষ্ঠানের ঘোষক জানান, সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৬তম জন্মদিন পালিত হচ্ছে। যদিও মঞ্চের গায়েই বড় বড় হরফে লেখা ছিল, এবার নেতাজির ১২৭তম জন্মদিবস। ঘোষক এতেই ক্ষান্ত হননি, সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্ঘে যোগদানের ইতিহাসও বিকৃত করেন।
এদিন ঘোষকের দায়িত্বে ছিলেন আরএসএসের দক্ষিণবঙ্গের সহকারী সম্পাদক শশাঙ্কশেখর দে। সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত সম্পর্কে তিনি বলেন, ডাক্তারজির হাত ধরে মোহন ভাগবত নাকি ছোট্ট বয়সে শাখায় এসেছিলেন। বলা বাহুল্য, এ কথা শুনে অসন্তুষ্ট হন সঙ্ঘপ্রধান। উল্লেখ্য, কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার ১৯২৫ সালে আরএসএস প্রতিষ্ঠা করেন। এই কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার ডাক্তারজি নামেই খ্যাত। ১৯৪০ সালের ২১ জুন তাঁর মৃত্যু হয়। তারও ১০ বছর পর অর্থাৎ ১৯৫০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মোহন ভাগবতের জন্ম। ফলে মোহন ভাগবত যাকে দেখেনইনি তার হাত ধরে তিনি কী করে সঙ্ঘে যোগ দেবেন!
ঘোষকের দেওয়া তথ্য ভাষণের প্রথমেই খারিজ করেন ভাগবত। মঞ্চে উঠে বিরক্তির সুরেই তিনি বলেন, ডাক্তারজির মৃত্যুর ১০ বছর পর তার জন্ম হয়েছে। তিনি ডাক্তারজির হাত ধরে সঙ্ঘে আসেননি। যদিও এবার নেতাজির কত তম জন্মদিন, সে প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি সঙ্ঘ প্রধান। এদিনের অনুষ্ঠানে সঙ্ঘের শীর্ষনেতাদের সঙ্গেই এক সারিতে ছিলেন নেতাজির ভাইপো অর্ধেন্দু বসু। দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদারসহ রাজ্য বিজেপির নেতারা সঙ্ঘের বেশে অর্থাৎ খাকি প্যান্ট, সাদা জামা ও মাথায় কালো টুপি পরে হাজির ছিলেন অনুষ্ঠানে। তবে জোড়া ভুলের জেরে যে সঙ্ঘ আয়োজিত নেতাজি স্মরণ অনুষ্ঠানের তাল কাটল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।