BBC-র তথ্যচিত্রের স্ক্রিনিং রুখে রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় পড়ছে BJP?
সম্প্রতির BBC-র তথ্যচিত্রকে ঘিরে উত্তাল গোটা দেশ, মোদীর ইমেজ বাঁচাতে মরিয়া বিজেপি ও বিজেপি শাসিত কেন্দ্র সরকার। গুজরাত হিংসার দায় মোদীর, চব্বিশের আগে এজিনিস মোদীকে বেকায়দায় ফেলতে পারে; তাই ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেনের প্রদর্শন রুখতে তৎপর বিজেপি সরকার। একের পর এক ফরমান জারি করতে মোদী সরকার। আর তাতেই রাজনৈতিকভাবে আরও বিপাকে পড়ছে মোদী সরকার। রবিবার হায়দ্রাবাদে ওই তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। গতকাল, অর্থাৎ মঙ্গলবার কেরলের বেশ কয়েকটি জায়গায় বামেদের উদ্যোগে তথ্যচিত্রটির স্ক্রিনিং হয়েছে। এসএফআই জানিয়েছে, মোদী সরকারের ফ্যাসিবাদী রূপ প্রকাশ্যে আনতে কলকাতা বইমেলায়ও বিবিসির ওই তথ্যচিত্র দেখানো হবে। তথ্যচিত্রের স্ক্রিনিংয় নিয়ে মোদী সরকারের নিষেধজ্ঞা আরোপের বিরোধিতায় সরব হয়েছে তৃণমূলও।
উল্লেখ্য, ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ তথ্যচিত্রটি দুই পর্বের, যার প্রথম পর্বের যাবতীয় লিঙ্ক ব্লক করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষকে নির্দেশিকা দিয়েছে মোদী সরকার। গত রবিবার হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র ক্যাম্পাসের ভিতরেই ওই তথ্যচিত্র দেখানোর ব্যবস্থা করে। তথ্যচিত্রের স্ক্রিনিংয়ের পরই নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রিপোর্ট তলব করা হয়। তথ্যচিত্র প্রদর্শন নিয়ে বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। অন্যদিকে, কেরলের বেশ কয়েকটি বামপন্থী রাজনৈতিক সংগঠন তথ্যচিত্র প্রদর্শনের কথা ঘোষণা করেছে। কেরল প্রদেশ কংগ্রেস কমিটিও, সে রাজ্যের জেলায় জেলায় তথ্যচিত্র দেখানোর দাবি জানিয়েছে। এতেই অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি, ইতিমধ্যেই স্ক্রিনিং বন্ধের আর্জি নিয়ে তারা কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে। বিজেপির শীর্ষ নেতারা স্ক্রিনিং বন্ধের জন্যে পিনারাই বিজয়নের কাছে অনুরোধ করেছেন বলেও জানা গিয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই সে’রাজ্যে দেখানো হয়েছে ওই তথ্যচিত্র।
‘কাশ্মীর ফাইলস’ দেখানো গেলে বিবিসির তথ্যচিত্র নয় কেন? দাবিতেই দেশজুড়ে ওই তথ্যচিত্র দেখানো শুরু করছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। এই নিয়ে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চলেছে তারা। সোমবারই জেএনইউ কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছিল, তথ্যচিত্রটি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে দেখানো যাবে না। যদিও রাত ৯টায় তথ্যচিত্রের স্ক্রিনিং নিয়ে অনড় ছিল ছাত্র সংসদ। তাদের অভিযোগ, স্ক্রিনিং রুখতে পুরো ক্যাম্পাসে রাত ৮ থেকে ১০ অবধি বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ছাত্র সংসদ অফিসে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযোগ, তারপরই শুরু হয় পাথর-বৃষ্টি। কাচের ভাঙা বোতল ছোঁড়া হয়। বেশ কয়েকজন পড়ুয়া গুরুতর জখম হন। এ ঘটনায় অভিযোগের তীর এবিভিপির দিকে। সাফ কথায়, সব রকমভাবে এই তথ্যচিত্রের প্রদর্শন ঠাকতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু স্ক্রিনিং রুখে বিজেপি আদপে রাজনৈতিকভাবে ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছে, এমনটাই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের।