আদানী চোর! বলছে মার্কিন সংস্থা
মোদী সরকার আসার পর গৌতম আদানীর সংস্থা ক্রমশ ফুলে ফেঁপে উঠেছে। আদানী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় জালিয়াতির অভিযোগ উঠলেও কোনও এক অজানা কারণে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার নিরবতা পালন করেছে। এবার আদানী গোষ্ঠীর ‘জালিয়াতি’র বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ,’ নামে সুপরিচিত একটি মার্কিন সংস্থা।
এই সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, আদানী গ্রপের বিরুদ্ধে ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডালারের অভিযোগ রয়েছে। মানি লন্ডারিং, কর ফাঁকি এবং সরকারি দুর্নীতির মতো চারটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এই সংস্থাটির বিরুদ্ধে।
মার্কিন সংস্থাটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, এক দশক ধরে আদানী গোষ্ঠী তাদের সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে গিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান গৌতম আদানীর ১২,০০০ কোটি ডলার (প্রায় ৯,৭৯,৮০০ কোটি টাকা) নিট সম্পদের ১০,০০০ কোটিই এসেছে গত তিন বছরে, দামে কারচুপির মাধ্যমে শেয়ার সম্পদ চড়িয়ে। গড় বৃদ্ধি ৮১৯%। শুধু তা-ই নয়, হিসাবে জালিয়াতির অভিযোগ এনে গবেষণা সংস্থাটি মরিশাস, আরব আমিরশাহীর মতো আয়কর ছাড়ের সুবিধা মেলে এমন কিছু দেশে আদানী পরিবারের মালিকানাধীন কিছু ভুয়ো সংস্থার কথা উল্লেখ করেছে। বলেছে, সেগুলির মাধ্যমে বেআইনি লেনদেন, কর ফাঁকি ও আইন ভেঙে নথিভুক্ত সংস্থা থেকে অন্যত্র টাকা সরানোয় লিপ্ত ছিল তারা। হিন্ডেনবার্গের দাবি, গবেষণা চালাতে তারা কথা বলেছে কয়েক ডজন ব্যক্তির সঙ্গে। যাঁদের মধ্যে আদানী গোষ্ঠীর কয়েক জন প্রাক্তন উচ্চপদস্থ কর্তাও রয়েছেন। পর্যালোচনা করা হয়েছে কয়েক হাজার নথি। খতিয়ে দেখা হয়েছে প্রায় আধ ডজন দেশের ওয়েবসাইটও।
এই রিপোর্ট সামনে এসেছে এমন সময়, যখন বাজারে ফের শেয়ার বেচে তহবিল সংগ্রহের তোড়জোড় চালাচ্ছে আদানী এন্টারপ্রাইজ়েস। রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই পড়তে থাকে গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার দর। বিএসই-তে আদানি ট্রান্সমিশনের দর ৮.৮৭% পড়ে হয় ২৫১১.৭৫ টাকা। আদানী পোর্টস অ্যান্ড সেজ়-এর নামে ৬.৩০%, আদানী টোটাল গ্যাসের ৫.৫৯%, আদানী উইলমার ও আদানী পাওয়ারের ৫% করে। আদানী গ্রিন এনার্জির ৩.০৪% ও আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের ১.৫৪%। সম্প্রতি অম্বুজা সিমেন্ট, এসিসি এবং এনডিটিভি-কে কিনেছেন গৌতম আদানী। রক্ষা পায়নি তারাও। সিমেন্ট সংস্থা দু’টির দর ৭ শতাংশের বেশি পড়েছে। এনডিটিভি নেমেছে ৫%।