ভারতের বিশ্বজয়ে ছাপ রেখে গেল বাংলার তিন কন্যা
রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকার পচেসট্রুমে ইতিহাস গড়েছে ভারতের মেয়েরা। দেশের অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলা ক্রিকেট দল প্রথমবারের জন্যে ছিনিয়ে নিয়েছে বিশ্বজয়ের খেতাব। উল্লেখ্য, এই প্রথম অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজিত হল। তিন বঙ্গতনয়া ইতিহাসে অমর হয়ে গেলেন। কেবল বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্যই নয়, একই সঙ্গে বিশ্বজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেন তারা। বিশ্বকাপ জয়ের পর সকলের মধ্যেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস, যদিও প্রথমে এই বিশ্বকাপ নিয়ে তেমন মাতামাতি চোখে পড়েনি। বিশ্বজয়ীদের পরিবার-পরিজন, বন্ধুবৃত্তের মধ্যে বাঁধ ভাঙা আনন্দ। বাংলার তিন বিশ্বজয়ী তনয়ার পরিবার-বান্ধবদের স্মৃতিচারণায় উঠে এসেছে, তাঁদের লড়াইয়ের কথাই।
বাংলার তিন কন্যা, হাওড়ার বালিটিকুরির ঋষিতা বসু (Hrishita Basu), হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা তিতাস সাধু (Titas Sadhu) এবং শিলিগুড়ির সুভাষপল্লির রিচা ঘোষ(Richa Ghosh); দেশের বিশ্বজয়ী ক্রিকেট দলের প্রথম এগারোর সদস্য ছিলেন। গতকালের ফাইনালে ৪ ওভারে ৬ রান দিয়ে দু’টি উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে প্রথম ধাক্কা দেন হুগলির তিতাস। জয়ের পর তাঁর গোটা পরিবার আনন্দাশ্রুতে ভাসছেন। তিতাসের লড়াইয়ের কথা উঠে এসেছে। তিতাস বাংলার সিনিয়র দলেও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। মেয়ের বিশ্বজয়ে খুশি বাবা-মা।
হাওড়ার ঋষিতা বসুও জীবন যুদ্ধে হাজারও প্রতিকূলতাকে জয় করে আজ বিশ্ব মঞ্চে পৌঁছে গিয়েছেন। ঋষিতার কাকা হিমাদ্রি বসু, তাঁকে প্রথমবার ক্রিকেট কিট কিনে দিয়েছিলেন। মেয়ের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নকে সার্থক করে তুলতে প্রাণপাত করেছেন ঋষিতার মা মালবিকাদেবী। ছোট থেকেই ঋষিতার ত্রিকেটের প্রতি আগ্রহ ছিল, গলির মধ্যে ক্রিকেট খেলতেন সে সময়। ২০১৫ সাল নাগাদ মায়ের উদ্যোগেই ক্রিকেট প্রশিক্ষণ শিবিরে যেতে আরম্ভ করেন ঋষিতা। ২০১৭ সালে বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ দলে সুযোগ পান ঋষিতা। ঋষিতার আইডল হলেন ধোনি। সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপে, সেমিফাইনাল থেকেই ঋষিতার বাড়ি লোকজনসহ পাড়ার সবাই একসঙ্গে বসে ঋষিতার খেলা দেখেছেন। ফাইনালে জয়ের পর পুরো পাড়ায় রীতিমতো উৎসবের আমেজ। পাড়ায় মেয়ের বিশ্বজয়ে খুশি গোটা এলাকা।
অন্যদিকে, শিলিগুড়ির সুভাষপল্লিও মেতেছে আনন্দে। সেখানেই থাকেন আরেক বিশ্বজয়ী রিচা। রিচার পরিবারও মেয়ের বিশ্বকাপ জয়ে অত্যন্ত খুশি। প্রসঙ্গত, এর আগে সিনিয়র মহিলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও রিচা খেলেছিলেন। যদিও সে সময় রানার্স আপ হয়ে ফিরতে হয়েছিল। ভারত জিততে পারেনি। এবার রিচা চাম্পিয়ান দলের সদস্য।