বাজেট ২০২৩: কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে আর্থিক ঘাটতি পূরণে ফেল মোদী সরকার
সরকারি সম্পত্তি ও রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা বিক্রি করে ভাঁড়ার ভর্তি করার পরিকল্পনা নিয়েছিল মোদী সরকার। কিন্তু সে পন্থায় কাঙ্খিত সাফল্য আসেনি। টার্গেটের অর্ধেকও পূরণ করতে পারেনি মোদী সরকার। হাইওয়ে প্রকল্প মুখ থুবড়ে দাঁড়িয়ে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় মাত্র ৪২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। যার জেরে আর্থিক বৃদ্ধিতে ধাক্কা লেগেছে বিস্তর। আগামীকাল বাজেট পেশ। তার আগে আজ থেকে বাজেট অধিবেশন আরম্ভ হচ্ছে। প্রথম দিনেই অর্থনৈতিক সমীক্ষার রিপোর্ট পেশ করা হবে। কিন্তু তার আগে মিলছে না তথ্য! নিজেদের তথ্যেই বেসামাল মোদী সরকার।
২০২২ সালে আজকের দিনেই অর্থনৈতিক সমীক্ষা রিপোর্টে পূর্বাভাস দিয়ে বলা হয়েছিল, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জিডিপি বৃদ্ধিহার হবে সাড়ে ৮ শতাংশ। যদিও অর্থমন্ত্রক ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সাফ জানাচ্ছে, চলতি অর্থবর্ষের জিডিপি বৃদ্ধিহার সাড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ হতে পারে। বলাইবাহুল্য, অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেনি মোদী সরকার। মন্দা সামলে, রাজকোষ ভর্তি করতে সহজ পন্থা বেছে নিয়েছিল মোদী সরকার। তা ডাহা ফেল করেছে। সরকারি সম্পত্তি বিক্রি করার উৎসব শুরু করেছিল মোদী সরকার, তাতেও সাড়া মেলেনি। বেসরকারিকরণ থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল মোদী সরকারের তরফে। কিন্তু বাস্তবে এসেছে মাত্র ৩১ হাজার কোটি টাকা। সে টাকারও সিংহভাগ এসেছে এলআইসির শেয়ার বিক্রি করে। সবচেয়ে লাভজনক সংস্থা বিক্রি করে ২১ হাজার কোটি টাকা ঘরে তুলেছিল মোদী সরকার। বাকি জিনিসপত্র থেকে কোনওমতে টেনেটুনে ১০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে মোদী সরকার।
এলআইসির শেয়ার কার্যত প্রথম দিন থেকেই মুখ থুবড়ে পড়েছে। আমজনতার জন্যে লগ্নির টাকা জলে গেল। লাগাতার লোকসানের কারণে আমজনতার কাঁধে আবারও আর্থিক বোঝা চাপানো হয়েছে। এলআইসি হাউজিং ফিনান্স কর্পোরেশন চলতি মাস থেকেই গৃহঋণে সুদের হার বাড়িয়েছে। ৩৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮.৬৫ শতাংশ করা হয়েছে সুদের হার। এলআইসি থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি কেনা গ্রাহকদের ইএমআই আগামী মাস থেকেই বৃদ্ধি পাবে।
বিগত বাজেটে দাবি করা হয়েছিল, পরিকাঠামো নির্মাণে জোর দেওয়া হচ্ছে। সড়ক নির্মাণ ও উন্নয়নে বিপুল অঙ্কের অর্থ বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। অর্থ বাজেট ও অর্থনৈতিক সমীক্ষা রিপোর্ট পেশের আগেই সরকারি তথ্য যাবতীয় প্রতিশ্রুতিতে জল ঢেলে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায় মাত্র ৪২ শতাংশ কাজ হয়েছে। টোয়েন্টি পয়েন্ট প্রোগ্রামের প্রোগ্রেস রিপোর্ট বলছে, শেষ ছ’মাসে মাত্র ৯ হাজার ৭৫৩ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে করতে পেরেছে মোদী সরকার। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে এই প্রকল্পে অনেক বেশি কাজ হলেও। তৃতীয় দফায় অথৈ জলে। হাইওয়ে ও জাতীয় সড়ক নির্মাণের মোট প্রকল্পের অর্ধেকেরও বেশি কাজ আটকে গিয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে, বেকারত্ব থেকে মূল্যবৃদ্ধি, উন্নয়ন থেকে আর্থিক ঘাটতি; সব ক্ষেত্রে ফেল মোদী সরকার। এহেন পরিস্থিতিতে আগামীকাল পেশ হবে দ্বিতীয় মোদি সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট।