গ্রিভান্স কমিটির আড়ালে সমাজ মাধ্যমে নজদারি চালাবে মোদী সরকার?
কৌশলে সমাজ মাধ্যমে নজদারি চালানোর বন্দোবস্ত করে ফেলল মোদী সরকার। মাঝেমধ্যেই নেটিজেনরা অভিযোগ করেন, অন্যায্যভাবে তাদের পোস্ট সরিয়ে নেয় সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ। এ জিনিসের কোনও ব্যাখ্যা সমাজ মাধ্যম তরফেও মেলে না। প্রশ্ন করা হলেও সদুত্তর পাওয়া যায় না। এবার থেকে এমন ঘটনায় সমাজ মাধ্যম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো যাবে। ইতিমধ্যেই তিনটি প্যানেল অর্থাৎ কমিটি গড়েছে মোদী সরকার। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই কমিটির সোশ্যাল এবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার উপর অলিখিত নিয়ন্ত্রণ চালাবে মোদী সরকার। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিরোধী কণ্ঠস্বরকে দমন গেরুয়া শিবিরের অস্ত্র হয়ে উঠবে এই কমিটি।
নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, প্রতিটি কমিটিতে একজন করে সরকারি আধিকারিক চেয়ারপার্সন হিসেবে থাকবেন। দু’জন করে সর্বক্ষণের সদস্য থাকবেন। ওই পদগুলিতে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্তা এবং বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রের শীর্ষ আধিকারিকদের রাখা হবে। মোদী সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, দু-জন সর্বক্ষণের সদস্যকে তিন বছরের জন্য নিয়োগ করা হবে। তিনটি প্যানেলের একটি চেয়ারপার্সন হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আওতাধীন সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজেশ পন্থকে। সেই প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস আশুতোষ শুক্লা এবং পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিজিএম সুনীল সোনি। তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের পলিসি অ্যান্ড অ্যাডমিন বিভাগের যুগ্ম সচিবকে আরেকটি প্যানেলের প্রধান করা হয়েছে। সেখানে বাকি দুই সদস্য হচ্ছে নৌসেনার অবসরপ্রাপ্ত কোমোডর সুনীল কুমার গুপ্তা ও এলঅ্যান্ডটি ইনফোটেকের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট কবীন্দ্র শর্মা। মন্ত্রকেরই শীর্ষ বিজ্ঞানী কবিতা ভাটিয়ার অধীনে তৃতীয় প্যানেলটির দায়িত্ব থাকবে। রেলের প্রাক্তন ট্রাফিক সার্ভিস অফিসার সঞ্জয় গোয়েল ও আইডিবিআই ইনটেকের সিইও কৃষ্ণগিরি রাগোথামারা ওই কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকছেন।
কোনও নেটিজেন যদি মনে করেন, তার পোস্ট অনৈতিকভাবে মুছে দেওয়া হয়েছে, বা সংশোধন করা হয়েছে, তাহলে ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সে গ্রিভান্স অ্যাপিলেট কমিটিতে অভিযোগ জানাতে পারবে। সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ ও সরকারের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী গ্রিভান্স অফিসারের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। ১৫ দিনের মধ্যে কোনও সমাধান না মিললে, কমিটির কাছে আবেদন করতে পারবে অভিযোগকারী। তারপর ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগের নিষ্পত্তি হবে বলেই জানাচ্ছে মোদী সরকার।