বাউল-ফকিরদের শোভাযাত্রার মাধ্যমে আরামবাগে শুরু আন্তর্জাতিক গোঁসাই পরব
নিউজ ডেক্স, দৃষ্টিভঙ্গি: খোল, করতাল ও একতারার সুর মিশেলে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার আরামবাগে শুরু হয়ে গেল আন্তর্জাতিক গোঁসাই পরব। আরামবাগ শহরের অগুনীত মানুষ এদিন বাউল-ফকিরদের সঙ্গে শোভাযাত্রায় পা মেলালেন। মানবপ্রেমের বার্তা দিয়ে গোঁসাই পরবের সূচনা হল। জানা গিয়েছে, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে গোঁসাই পরব।
গোঁসাই পরব উপলক্ষ্যে দেশ-বিদেশের বাউল ফকিররা আরামবাগে ছুটে এসেছেন। গতকাল মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে, প্রদীপ উৎসবের সূচনা হয়। গতকাল বিকেল সাড়ে তিনটের সময় বাসুদেবপুর মোড় থেকে শোভাযাত্রা আরম্ভ হয়। তারপর গোটা শহর ঘুরে গোঁসাই পরবের মেলা প্রাঙ্গণে ফেরে সেই শোভাযাত্রা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাউল শিল্পী অনন্ত গোঁসাই, গামছা বাবা, ব্রজগোপাল গোস্বামী, ফকির নুর আলম, সাধক কবি সাধন বারিকসহ আরামবাগ শহরের বিশিষ্ট মানুষজন।
বিগত তিনবছর ধরে গোঁসাই পরব আরামবাগবাসীর প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই আয়োজনকে ঘিরে উৎসাহ উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। গতকাল মেলার মানবমঞ্চে গোঁসাই কথা নামে একটি বইয়ের উদ্বোধন হয়। সাধন দাস বৈরাগ্যর লেখা, মাকি কাজুমির সাক্ষাৎকার, পিয়াস ফকিরের লেখা সঙ্কলিত হয়েছে এই গ্রন্থে। গোঁসাই পরবের আয়জকদের মতে, এই বই পাঠকদের সহজ-সরল জীবন যাত্রার কথা বলব। ফকির নুর আলম বলেন, মনের মানুষের সন্ধানে তিনি পথে পথে ঘুরে বেড়ান। সেই টানেই আরামবাগে ছুটে এসেছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, তারা সহজ সাধনার কথা বলেন। গানের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, যদি মানুষ হতে চাও, সরল দেশে যাও।
প্রথম দিন থেকেই উৎসব প্রাঙ্গণে ভিড় জমেছিল। এবার এই পরবে বাংলার ১৯টি জেলার লোকশিল্পের সম্ভার থাকছে। পরবের প্রাঙ্গণে বাঁকুড়ার টেরাকোটা, বালুচরি, বীরভূমের কাঁথাস্টিচ, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের পটচিত্র, মুর্শিদাবাদের সিল্ক, মালদহের বাঁশের কাজ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাটের কাজ, গয়না, নদীয়ার মাটির পুতুল, পূর্ব বর্ধমানের কাঠেরপুতুল, পুরুলিয়ার ছৌ মুখোশ পাওয়া যাবে। আরামবাগ শহরের বাসিন্দা সাধক কবি সাধন বারিকের কথায়, দেশ-বিদেশের বাউল ফকিররা আরামবাগে আসেন। তাঁর মতে, মানুষের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে তাঁদের পরব।