দেশ বিভাগে ফিরে যান

গৌতম আদানীর চোখ ধাঁধানো ব্যক্তিগত সম্পত্তির খতিয়ান

February 10, 2023 | 3 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কয়েকদিন আগেও তিনি এশিয়ার ধনীতম ছিলেন। মুকেশ আম্বানিকে কয়েক যোজন পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। বিশ্বের দরবারেও তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বিল গেটসকে টপকে তিনি বিশ্বের চার নম্বরে উঠে এসেছিলেন। কিন্তু আমেরিকার শেয়ার সংক্রান্ত সংস্থা ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ’-এর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই বিপর্যয়ের মুখে গৌতম আদানীর সাম্রাজ্য। ছিটকে গিয়েছেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দশ ধনীর তালিকা থেকে। দ্রুত কমেছে সম্পদের পরিমাণ। আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে ধস নামার পর থেকেই দুশ্চিন্তায় মেঘ জমেছে দেশের আমজনতার মনে।


কিন্তু এর পরেও এই ধনকুবেরের কাছে এমন কিছু ব্যক্তিগত সম্পত্তি রয়েছে যা তাঁকে বিশ্বের অন্যতম ধনী হেসেবে চিহ্নিত করে। জেনে নেওয়া যাক সেগুলি কি কি-

আদানী গোষ্ঠীর দখলে রয়েছে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল প্রাইভেট জেট এবং হেলিকপ্টার। গৌতম প্রধানত তাঁর ব্যক্তিগত জেট বিমানেই বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেন। তাঁর প্রাইভেট জেটগুলির তালিকায় রয়েছে ‘বোম্বার্ডিয়ার’, ‘বিচক্র্যাফ্ট’ এবং ‘হকার’ প্রাইভেট জেট।

বোম্বার্ডিয়ার প্রাইভেট জেট বিমানটি সর্বাধিক ৮ জন যাত্রীকে নিয়ে উড়ে যেতে পারে। বিচক্র্যাফ্টে চেপে যেতে পারেন ৩৭ জন যাত্রী। অন্য দিকে, হকার জেট বিমানের বহন ক্ষমতা ৫০ যাত্রী। কয়েকটি প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতে আদানীদের সবচেয়ে সস্তা প্রাইভেট জেটের দাম প্রায় ১৫.২ কোটি।

তিনটি বিলাসবহুল জেট প্লেন ছাড়াও আদানী এন্টারপ্রাইজের মালিকের কাছে তিনটি হেলিকপ্টার রয়েছে। তবে তাঁকে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ‘অগাস্টা ওয়েটল্যান্ড এডব্লু ১৩৯’ হেলিকপ্টারে চেপে ভ্রমণ করতে।

দু’টি ইঞ্জিন চালিত ‘অগাস্টা ওয়েটল্যান্ড এডব্লু ১৩৯’ হেলিকপ্টারে একসঙ্গে ১৫ জন যাত্রী বসতে পারেন। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৩১০ কিমি গতিতে চলতে পারে এই যান।

আদানীর কাছে সাড়ে তিন কোটি টাকা মূল্যের লাল ফেরারি এবং একটি বিলাসবহুল বিএমডব্লু-৭ রয়েছে। এই গাড়ি দু’টিই তাঁর তালিকায় থাকা গাড়িগুলির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়।

এ ছাড়াও গৌতমের সংগ্রহে রয়েছে একটি রোলস রয়েস ঘোস্ট গাড়ি। এই গাড়িটির বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ছ’কোটি টাকা। এই গাড়িই তাঁর গাড়িশালে রাখা গাড়িগুলির মধ্যে সব থেকে মূল্যবান বলে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আদানী এন্টারপ্রাইজ প্রায় ১৭টি জাহাজের মালিক। প্রায় প্রতিটি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বিশাল উপস্থিতির কারণে এই জাহাজগুলি ব্যবহার করে আদানী গোষ্ঠী। জ্বালানি এবং অন্যান্য উপকরণ পরিবহণ করতে আদানীরা এই জাহাজগুলি ব্যবহার করে।

কিন্তু গৌতমের জাহাজ নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয় ২০১৮ সালে। সেই সময় দু’টি নতুন কেনা জাহাজের নাম তাঁর দুই ভাগ্নির নামে রাখেন আদানী। এমডব্লিউ ভানশী এবং এমডব্লিউ রাহি। এই দু’টি জাহাজ দক্ষিণ কোরিয়ার ‘হানজিন হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন’ তৈরি করেছে।

বিলাসবহুল প্রাইভেট জেট এবং জাহাজগুলি রাখার জন্য সারা দেশে অনেকগুলি ব্যক্তিগত বিমানবন্দর এবং জাহজবন্দরও রয়েছে আদানীর। দেশ জুড়ে আদানীদের মোট ১৩টি জাহাজবন্দর রয়েছে।

২০২০ সালে লুটিয়েন্স দিল্লিতে ৪০০ কোটি টাকা দিয়ে একটি প্রাসাদোপম অট্টালিকা কিনেছিলেন গৌতম। ৩.৪ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত এই অট্টালিকা আদানী গোষ্ঠীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভবনগুলির অন্যতম হিসাবেও পরিচিত। এই অট্টালিকা কিনতে গৌতমকে অগ্রিম ২৬৫ কোটি টাকা এবং বিধিবদ্ধ খরচ হিসাবে আরও ১৩৫ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছিল৷ এই প্রাসাদ ছাড়াও আদানীর গুরগাঁওয়ে একটি বাংলোও রয়েছে।

আমদাবাদেও একটি অট্টালিকা রয়েছে আদানীদের। এই বাড়িতেই বেশির ভাগ সময় গৌতম থাকেন। প্রাসাদটি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না কারণ গৌতম তাঁর সম্পত্তি এবং ব্যক্তিগত সম্পদের গোপনীয়তা বজায় রাখতে পছন্দ করেন। প্রাসাদটি চারপাশে বড় বড় গাছ দিয়ে ঘেরা। এর চারপাশে খোলা উঠোনও রয়েছে। স্ত্রী প্রীতি আদানি, দুই ছেলে কর্ণ আদানী এবং জিৎ আদানি এবং পুত্রবধূর সঙ্গে এই বাড়িতে থাকেন গৌতম।

গৌতম আদানীর যে সম্পত্তি– সেই সম্পত্তি অনুযায়ী, তিনি প্রায় ৭৭.৯ মিলিয়ন আউন্স সোনার মালিক হতে পারেন তিনি। প্রসঙ্গত, একটি জিনিস এখানে স্মরণে আনা যায়। শ্রীলঙ্কা যখন আর্থিকভাবে দেউলিয়া হওয়ার পথে, তখন সোনা বেচে দেশ চালাতে হয়েছে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ককে। অন্যদিকে আদানীর হাতে যে সম্পত্তি রয়েছে, তাতে অনায়াসেই যে কোনও দেশের সঞ্চয়ীকৃত সোনা তিনি কিনে নিতে পারেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Gautam Adani, #Properties, #Adani, #property, #Adani Group

আরো দেখুন