বিনা পারিশ্রমিকে খাটছেন গৃহবধূরা, ঘরকন্যায় লিঙ্গবৈষম্য প্রকাশ্যে IIM-এর সমীক্ষায়
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ‘হোম-মেকার’ এই শব্দবন্ধটি যে মানুষের জন্যে প্রযোজ্য, সে না থাকলে জীবন অচল। কিন্তু তারা কি কেবল বাড়ি সামলানোর জন্যেই বেঁচে আছেন? তাদের ভাল লাগা-মন্দ লাগা নিয়ে কি বিন্দুমাত্র চিন্তিত বাকিরা? ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট আমেদাবাদের অধ্যাপক নম্রতা চিন্দরকারের গবেষণায় উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। কী সেই তথ্য? নম্রতার সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, ১৫ থেকে ৬০ বছর বয়সি উপার্জনক্ষম মহিলারা গৃহকর্মে গড়ে দিনের ৭ ঘণ্টা ১২ মিনিট সময় ব্যয় করেন। সেখানে পুরুষরা মাত্র ২ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট সময় খরচ করেন বাড়ির জন্যে। পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে নানান মহলে। বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য বরাদ্দ সময়ের মূল্যায়নের জন্যে এই সমীক্ষা করা হয়েছে। বহুকাল ধরেই ইউরোপের নানা দেশে এই জাতীয় সমীক্ষা করা হয়। ২০১৯ সালে ভারতে প্রথমবারের জন্যে টাইম ইউজ সার্ভে করে এনএসএসও।
আজকের যুগেও মহিলারা বাড়ির কাজে দিনে গড়ে ৭ ঘণ্টারও বেশি সময় শ্রম দিচ্ছেন। কিন্তু এসবই বিনা পারিশ্রমিকে। অন্যদিকে, পুরুষরা দিনে তিন ঘণ্টারও কম সময় দেন ঘরের কাজের জন্যে। লিঙ্গবৈষম্যের এহেন ছবিই ফুটে উঠেছে নম্রতার গবেষণায়। ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অফিসের টাইম ইউজ সার্ভের তথ্যের ভিত্তিতে টাইম ইউজ ডেটা: আ টুল ফর জেন্ডার্ড পলিসি অ্যানালিসিস শীর্ষক রিপোর্ট তৈরি করেছেন নম্রতা। নম্রতার দাবি, সাংসারিক পরিশ্রমের চাপে মহিলাদের নিজেদের জন্যে কোনও সময়ই থাকে না। পুরুষদের তুলনায় মহিলারা প্রায় ২৪ শতাংশ কম অবসর সময় পান। মহিলাদের ক্ষেত্রে চাকরিই দ্বিতীয় কাজ, অগ্রাধিকার হল সাংসারিক দায়িত্ব।
গবেষণায় জানা গিয়েছে, পরিবারের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থানের কারণে মহিলারা অবকাশ পান না। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, বাড়িতে স্থায়ী বিদ্যুৎ ও এলপিজি গ্যাসের সংযোগ না থাকলে, মহিলারা অবসর সময় আরও কম পান। টাইম ইউজ সার্ভের তথ্য বলে যেসব বাড়িতে এলপিজি সিলিন্ডার আছে, সেসব বাড়ির মহিলাদের রান্নার কাজে তুলনামূলক কম সময় দিতে হয়। তারা দিনে আরও ৪১ থেকে ৮০ মিনিট বেশি অবকাশ পান। বাড়িতে স্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলে আরও প্রায় ৩৫ মিনিট বেশি অবসর সময় পান মহিলারা।