রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

শীত বিদায় ও বসন্তের আগমনের মাঝে রাজরাজেশ্বরীর পুজোয় মাতে মুর্শিদাবাদ

February 16, 2023 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ ফাল্গুনের দোসরা। শীত বলছে যাই যাই, আর বসন্ত বলছে আসব আসব; এই সময়টাতেই মুর্শিদাবাদ মেতে ওঠে রাজরাজেশ্বরীর আরাধনায়। প্রায় তিন শতাব্দীজুড়ে মাঘ মাসে মুর্শিদাবাদের সুতি বংশবাটি এলাকায় পূজিত হন রাজরাজেশ্বরী। আদপে মা রাজরাজেশ্বরী দুর্গারই আরেক রূপ। প্রায় ৩০০ বছর ধরে বসন্তকালে দুর্গা পুজা হয় বংশবাটি গ্রামে। প্রতি বছর এই সময়টাতে, ষষ্ঠী থেকে দশমী পাঁচ দিন ধরে মায়ের আরাধনা চলে। মুর্শিদাবাদ ছাড়াও বীরভূম, নদিয়া , ঝাড়খণ্ডসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষ মাকে দর্শন করতে আসেন। পুজো উপলক্ষ্যে বড় মেলাও বসে।  

জনশ্রুতি রয়েছে, বহুকাল আগে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল বংশবাটি। তখন রাজুয়া দীঘি, অর্থাৎ একটি জলাশয় থেকে দেবী রাজরাজেশ্বরী উঠে এসে গোটা গ্রামকে রক্ষা করেন। তারপর থেকেই দেবী রাজরাজেশ্বরী, ওই গ্রামে দুর্গা হিসেবেই পূজিতা হয়ে আসছেন। দেবী রাজরাজেশ্বরী হলেন মা দুর্গার ষোড়শী রূপ তথা দশ মহাবিদ্যার তৃতীয় রূপ। দেবী প্রতিমা কাঠামোতে শব রূপী শিব শায়িত থাকেন। শিবের নাভি থেকে প্রস্ফুটিত হয় দুটি পদ্ম। দেবী রাজরাজেশ্বরী শবাসনে বিরাজ করেন আর ধরিত্রীকে ধারণ করে থাকেন চতুর্মুখী ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর এবং ধর্মরাজ। মা রাজরাজেশ্বরী চতুর্ভূজা, তাঁর দু-পাশে থাকেন দুই সখী জয়া এবং বিজয়া। দেবীর বাহন সিংহ। 

লোকমুখে শোনা যায়, জনৈক ভবানন্দ ভট্টাচার্য নামে এক নিঃসন্তান দম্পতি রাজুয়া দীঘির পাড়ে দেবী রাজরাজেশ্বরীর দেখা পেয়েছিলেন। তাঁদের পরিবারেই শুরু হয় এই পুজো। সেই পুজোই এখন বারোয়ারি পুজোর আকার ধারণ করেছে। তৈরি হয়েছে মাতৃ মন্দির। মন্দিরের হাতে থাকা জমিতে উৎপন্ন ধান, পুকুরের মাছ বিক্রি করে এবং আমজনতার চাঁদায় মন্দিরের পুজো হয়। এই পুজো সম্প্রীতির পুজো, প্রতি বছর এই পুজোকে কেন্দ্র করে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মিলন মেলা বসে। এখানে দশমীর দিন দেবী রাজরাজেশ্বরীর বিসর্জন হয় না। দশমী শেষে পূর্ণিমা পার করে কোনও এক শুভদিনে দেবীর বিসর্জন হয়। ভক্তদের কাঁধে চেপে দেবীকে নিরঞ্জনের জন্য রাজুয়া দীঘিতে নিয়ে যাওয়া হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#murshidabad, #Raj Rajeshwari

আরো দেখুন