মহিলাদের ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসায় আশার আলো দেখালো বাংলার গবেষকরা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ক্রমেই মারাত্মক আকার ধারণ করছে কর্কট। দেশে মহিলাদের ক্যান্সারের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ব্রেস্ট ক্যান্সার। প্রতি ১০০ জন ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলার মধ্যে ১৮.৪ শতাংশই ভুগছেন ব্রেস্ট ক্যান্সারে। দিনে দিনে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। রাজ্যে ব্রেস্ট ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের জন্যে ছয় জেলায় পাইলট প্রজেক্ট শুরু রাজ্য সরকারের। এই পরিস্থিতিতে বাংলার চার প্রতিষ্ঠানের ১২ জন চিকিৎসক-গবেষক আশার দেখালেন।
২০১৭ থেকে ২০২২, পাঁচ বছরের গবেষণায়; বোস ইনস্টিটিউট, পিজি, মানিকতলা ইএসআই হাসপাতাল ও পুরুলিয়ার সিধু-কানু-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ খুঁজে পেয়েছেন। কারণটিকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে মার্কারও বের করেছেন তাঁরা। প্রখ্যাত জার্নাল ক্যান্সার ইমিউনোলজি রিসার্চের জানুয়ারি সংখ্যায় তাঁদের গবেষণার কথা পড়েই তোলপাড় বিজ্ঞানীমহলে। গবেষকরা পিজি এবং মানিকতলা ইএসআইয়ের ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্তদের এবং সাধারণ রোগীর রক্ত ও কোষ সংগ্রহ করেন। পরীক্ষায় দেখা যায়, ক্যান্সার আক্রান্তদের নমুনায় জি নামক অ্যান্টিবডি কমে গিয়েছে। উল্লেখ্য, ‘বি’ নামের কোষ ‘জি’ অ্যান্টিবডি তৈরি করে। কিন্তু ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ‘বি রেগুলেটরি কোষ’ সে কাজে বাধা দেয়। সাফ কথায়, এটিই ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ।
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য বোস ইনস্টিটিউটের মডিকিউলার মেডিসিন বিভাগের গবেষক ডঃ শুভদীপ পতির কথায়, ব্রেস্ট ক্যান্সারের রোগীদের শরীরে ‘বি রেগুলেটরি সেল’ নামের এক ধরনের ক্ষতিকারক কোষ রয়েছে। সেগুলিই ক্যান্সারের জন্যে দায়ী। এরাই ক্যান্সার কোষগুলির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে দেয় না। সেই কোষগুলিকে চিহ্নিত করার মার্কার তৈরি করেছেন তাঁরা। তিনি আরও জানান, কাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হবে, কাদের হবে না, এই মার্কারের সাহায্যে তা চিহ্নিত করাই তাঁদের লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই ইঁদুরদের উপর গবেষণা শুরু হয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হবে। কীভাবে ‘বি রেগুলেটরি’ কোষগুলিকে নষ্ট করা যায়, সে উপায়ও খুঁজছেন তাঁরা। গবেষক দলের আরেক সদস্য পিজি হাসপাতালের বিশিষ্ট সার্জেন ডাঃ দীপ্তেন্দ্র সরকার বলছেন, ব্রেস্ট ক্যান্সার নিয়ে গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে তাঁদের গবেষণা। তাঁর আশা, খুব শীঘ্রই সারা দেশ ও পৃথিবীকে ভাল খবর জানাতে পারবেন তাঁরা।