দোলপূর্ণিমায় মহাপ্রভুর আবির্ভাবতিথিতে নবদ্বীপে আয়োজিত হচ্ছে ভান্ডারা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ফাল্গুন মানেই রঙের উৎসব। চৈতন্যদেবের জন্মস্থান নদীয়ার নবদ্বীপে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয় দোল উৎসব। এবার দোলের দিন নবদ্বীপের বিভিন্ন ক্লাব, বারোয়ারি পুজো কমিটি, প্রতিষ্ঠান এমনকী কিছু কিছু মানুষের ব্যক্তিগত উদ্যোগেও প্রসাদ খাওনোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগমেশ্বরীপাড়া বাজার কমিটির বক্তব্য, দোলে নবদ্বীপ থেকে কেউ খালি মুখে ফেরেন না। এবারও দোলের দিন তারা বাজারে মহাপ্রভুর পুজো এবং ভোগ বিতরণের আয়োজন করেছেন। অন্তত এক হাজার মানুষকে প্রসাদ খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন তারা।
প্রতিবারের মতো এ বছরেও দোলের দিন পাড়ায় পাড়ায় মহাপ্রভুর পুজো এবং প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভাতের সঙ্গে কচুর শাক, ডাল, পঞ্চব্যঞ্জন, চাটনি, পরমান্ন থাকছে খাবারের তালিকায়। কোথাও আবার পুষ্পান্ন, কোথাও খিচুড়ির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সঙ্গে থাকছে আলুর দম, কোথাও আবার লুচি, সুজি, মিষ্টি। কেউ কেউ আবার সকালে চা বিস্কুট থেকে শুরু করে জল খাবারে লুচি, আলুর দম, বোঁদে ইত্যাদি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করছে। স্থানীয় বাসিন্দা, ভক্ত, দর্শনার্থী এবং পর্যটক সকলের জন্য শহরের পাড়ায় পাড়ায় চেয়ার-টেবিল পেতে প্রসাদ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
দোলপূর্ণিমা তিথিতেই গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু আবির্ভূত হয়েছিলেন, সে’কারণেই দোল পূর্ণিমা তিথিটি নবদ্বীপবাসীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। দোলের দুদিন নবদ্বীপের অধিকাংশ বাসিন্দাই নিরামিষ খান, এই দু’দিন বাজারে মাছ, মাংস বিক্রি হয় না। এবারে করোনার চোখ রাঙানো নেই, ফলে মনে করা হচ্ছে; বহু ভক্ত, পুণ্যার্থী ও পর্যটক এবার ভিড় করবেন। দোলের দিন গৌরাঙ্গ মন্দির, জন্মস্থান মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দিরে এবং অধিকাংশ রাস্তার মোড়ে, পাড়ায় পাড়ায় গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর পুজো চলে। এই দিনটিকে বিশেষভাবে পালন করে নবদ্বীপবাসী। মহিলারাও পিছিয়ে থাকেন না। তারাও বেশকিছু পাড়ায় দুপুরে খিচুড়ি, আলুর দম, পুষ্পান্ন, পরমান্ন, লুচি, সুজি, মিষ্টি সহ বিভিন্ন প্রসাদ বিলি করেন। বাইরের ভক্ত, পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের সকাল সন্ধ্যায় চা, বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ণও করেন তারা। স্থানীয় লোকজন থেকে শুরু করে আগত ভক্তরা, কেউ কেউ বসে, বা লাইন দিয়ে প্রসাদ গ্রহণ করেন।
নবদ্বীপ বুড়োশিবতলা রোডের একটি বারোয়ারী ক্লাব, প্রতি বারের মতো এবারও হাজার হাজার মানুষের মধ্যে ভোগ বিলি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খিচুড়ি, আলুর দমের সঙ্গে পরমান্ন প্রসাদের আয়োজন করেছেন তারা। নবদ্বীপ পোড়াঘাটচড়া এলাকার এক ক্লাব প্রায় বারো বছর ধরে দোলের দিন দু-তিন হাজার মানুষের জন্য প্রসাদের আয়োজন করে। লুচি, আলুর দম, বোঁদে বিলি করা হয়। গোবিন্দবাড়ির মোড়, পোড়ামাতলা রোড, বাজার রোড, ঢপওয়ালির মোড়, ষষ্ঠীতলা, চারিচারাপাড়া, বুড়োশিবতলা রোড, পোড়াঘাট, প্রাচীন মায়াপুর, নবদ্বীপ মহাশ্মশানঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় ভান্ডারা মাধ্যমে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।