মধ্যবিত্তর উপর খাঁড়ার ঘা! রেপো রেটের বৃদ্ধির দৌলতে ফের বাড়তে চলেছে EMI
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট বাড়িয়েই চলছে। মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে নাকি রেপো রেট বাড়ানোর পন্থা নিয়ে ছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, অন্ততঃ তাদের তরফে দাবি এটাই। যদিও তার সুফল পায়নি সাধারণ মানুষ। মোদী সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পন্থা ডাহা ফেল করেছিল। বিগত বছরের মে মাস থেকে আম জনতার উপর রেপো রেটের বোঝা চাপিয়ে ইএমআইয়ের বাড়তি বোঝা চাপানো হয়েছিল, মোদী সরকার তা অব্যাহত রাখছে। ফের একবার রেপো রেট বাড়াতে চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এবারও ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হচ্ছে। আগামী এপ্রিলে পরবর্তী নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠক বসবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। মনে করা হচ্ছে, সেখানেই রেপো রেট বাড়ানোর ঘোষণা করা হবে। এ সম্ভাবনা সত্যি হলে, মোদী আমলে আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হবে রেপো রেট। গত বছর মে মাসে যা ছিল ৪ শতাংশ, সেই সুদের হার পৌঁছবে ৬.৭৫ শতাংশে। গাড়ি, বাড়ির ইএমআই, পার্সেনাল লোনে সুদের হার আরও বাড়াবে ব্যাঙ্কগুলি।
মাত্র নয় মাসের মধ্যেই রেপো রেট ২৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে সাধারণ মানুষের বাড়ি-গাড়ির ঋণের বোঝা চরমে পৌঁছেছে। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ইএমআই। সংসার চালানো কঠিন হয়ে উঠছে সাধারণ মানুষের পক্ষে। শোনা যাচ্ছে, এপ্রিল মাস পর্যন্ত রেপো রেট বাড়িয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তারপর বৃদ্ধির প্রবণতা কিছুদিনের জন্যে বন্ধ হবে।
অন্যদিকে, জানুয়ারি মাসে দেশে মূল্যবৃদ্ধির হার ফের ৭ শতাংশ ছুঁয়েছে। কিন্তু মোদী সরকার দাবি করেছিল, মূল্যবৃদ্ধি নাকি ৫ শতাংশের মধ্যে চলে আসবে। মূল্যবৃদ্ধি রুখতে মোদী সরকারের একমাত্র পথ রেপো রেট বৃদ্ধি। কিন্তু লাগাতার তা করেও মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম দিতে পারেনি মোদী সরকার। নভেম্বর মাস থেকে অবস্থার সামান্য কিছু উন্নতি হলেও রেপো রেট বৃদ্ধিতে রাশ টানেনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফেব্রুয়ারি মাসের নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকেও ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে রেপো রেট ৬.৫০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। খবর মিলছে, ওই হার ৬.৭৫ শতাংশে পৌঁছে দিয়ে কিছুদিনের জন্যে রেপো রেট বাড়ানোর বন্ধ রাখতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি নির্ধারণ কমিটির অন্দরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মতান্তর রয়েছে। বিরূপ মত পোষণকারীরা বলছেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বারবার ধাক্কা খেলে এবং আকাশছোঁয়া সুদের জেরে লগ্নির পথ বন্ধ হলে তা অর্থনীতির জন্য চরম সঙ্কটের সময় ডেকে আনবে। জিডিপির বৃদ্ধির হারও ৫ শতাংশের নেমে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, রেপো রেট আর বাড়ানো উচিত নয়। এতে মানুষের উপর চাপ বাড়ছে। রিয়েল এস্টেট শিল্প চরম ধাক্কা খাচ্ছে। গৃহঋণে সুদের হার এমনিতেই বাড়ছে। অন্যদিকে, নতুন আয়কর পদ্ধতিতে কোনও ছাড়ই মিলবে না। এই অবস্থায় ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনা থেকে পিছিয়ে আসছেন অনেকেই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি নির্ধারণ কমিটির ভোটাভুটিতে রেপো রেট বাড়ানোর প্রস্তাবের পক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভোট পড়েছে। কার্যত প্রস্তাব বাস্তবায়িত হচ্ছেই। আম জনতার বোঝাও যে বাড়ছে, তা বলাবাহুল্য।