ChatGPT: শেষের সেদিন কতটা ভয়ঙ্কর?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ; রচনা লিখে বঙ্গসন্তানরা বড় হয়েছে। মানবজীবন বিজ্ঞানের দান, কিন্তু বিজ্ঞান যে অভিশাপ হয়ে মানবজীবনে বসতে চলেছে, তা বেশ বুঝতে পারছে আম-জনতা। গোটা পৃথিবী আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হাতে বন্দি। মানুষের মগজের দখল নিচ্ছে AI, কিছুদিন আগে অবধি যেগুলো কল্প-বিজ্ঞান ছিল। আজ সেসব জিনিস বইয়ের পাতা ছেড়ে বেরিয়ে এসে বাস্তবে পরিণত হয়েছে। মানুষও হার মেনে যাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে। ChatGPT তেমনই এক উদাহরণ। ৩০ নভেম্বর, ২০২২ সালে ইলন মাস্কের সংস্থা Open AI, ChatGPT-কে সামনে নিয়ে আসে। এর আগে চ্যাট বট নিয়ে এসেছিল ওপেন এআই। তারই সাম্প্রতিকতম সংস্করণ বলা যেতে পারে ChatGPT-কে।
ChatGPT জিনিসটা কী?
ধরুন আপনি কিছু লিখতে চান, কিন্তু সময়ের অভাব। তথ্য সংগ্রহ করার ধৈর্য্য নেই, পরিশ্রম করতে চান না আপনি। আপনার লেখাটাও হয়ত তেমন ভাল হয় না। তবে আপনার সমস্যার সমাধান করবে ChatGPT, যা লিখতে চাইছেন সেই সংক্রান্ত কিছু শব্দ টাইপ করে ফেলুন। ChatGPT কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে গোটা লেখা লিখে ফেলবে। কেবল লেখা নয়, যেকোনও সমস্যার লিখিত ও তাত্ত্বিক সমাধান দিতে পারে ChatGPT। ইতিমধ্যেই ইংরেজি ভাষার অসংখ্য বই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলির লেখক ChatGPT। ক্রমশ ChatGPT জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ কোটির গন্ডি পেরিয়েছে। হাতের নাগালে বিনা পরিশ্রমে তথ্য মিলছে, লেখা হয়ে যাচ্ছে। সময় ব্যয় করতে হচ্ছে না বলে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
সংবাদমাধ্যম, বিজ্ঞাপন সংস্থা, অন্যান্য সংস্থায় লেখার কাজ করেন বহু মানুষ। এর পাশাপাশি গবেষক, কম্পিউটার প্রোগ্রামার, সাহিত্যিকসহ অন্যান্য সৃজনশীল কাজে নিযুক্ত কর্মীদের পেশা নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গবেষণাপত্র থেকে কম্পিউটার প্রোগ্রাম, কবিতা থেকে উপন্যাস সবই লিখে ফেলতে পারে ChatGPT। ইতিমধ্যেই ChatGPT-কে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে গোটা বিশ্বে। বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নিষিদ্ধ করেছে ChatGPT ব্যবহার। ChatGPT- এর সাহায্যে গল্প লেখার এমন হিড়িক পড়েছে, যে জনপ্রিয় মার্কিন ম্যাগাজিন ক্লার্কসওয়ার্ল্ড গল্প নেওয়া বন্ধ করেছে।
আগামীতে আরও দুর্দিন আসতে চলছে। মাইক্রোসফটের সঙ্গে চুক্তি করেছে ইলন মাস্কের সংস্থা। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, পাওয়ারপয়েন্ট, এক্সেলেও যুক্ত হচ্ছে ChatGPT। অন্যদিকে পাল্লা দিতে নামছে গুগলও। এতেই ঘনিয়ে আসছে বিপদের দিন। সৃজনশীলতাকে যদি যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করতে আরম্ভ করে, তাহলে ভাবতে ভুলে যাবে মানুষ। ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়াবে মানব সভ্যতা।