শহরে প্রতি দশটি পরিবারের মধ্যে চারটিতেই জ্বর-সর্দি-কাশির সমস্যা, বলছে সমীক্ষা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: গোটা বাংলায় অ্যাডিনো আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কলকাতার শিশু হাসপাতালগুলিতে আইসিইউ ও জেনারেল বেডের অপ্রতুলতার কারণে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। অ্যাডিনোর কারণে জ্বর, সর্দি, কাশি, ফুসফুসে সংক্রমণের মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। বাচ্চাদের পাশাপাশি বয়স্করাও একই সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, স্কুল পড়ুয়ারা অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। ওপিডির মাধ্যমেই এদের চিকিৎসা হচ্ছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গত ৩০ দিনে কলকাতার প্রতি ১০টি পরিবারের মধ্যে চারটি পরিবারে অন্তত একজন করে সদস্য জ্বর-সর্দি-কাশির সমস্যায় ভুগছেন। অ্যাডিনো ভাইরাসের পাশাপাশি অন্যান্য ভাইরাস সংক্রমণও দাপট দেখাচ্ছে।
যে পরিবারগুলোকে নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে, তাদের সসস্যদের ৭০-৮০ শতাংশই ইন্টেন্সিভ কেয়ারে রয়েছেন। বেশিরভাগই অ্যাডিনো ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই রোগ নির্ণয়ের জন্য আরটিপিসির পরীক্ষা করতে হয়। যা বেশ ব্যয়বহুল, ফলে অনেক পরিবারের ক্ষেত্রেই তা করানো সম্ভব হচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা মূল্যের কম্প্রিহেন্সিভ প্যানেল টেস্ট করতে বলছেন চিকিৎসকরা। এই জাতীয় পরীক্ষার খরচ অনেক পরিবারের পক্ষেই সাধ্যের অতীত। করোনার সময় এক্সট্রাকর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন অর্থাৎ অক্সিজেন দিয়ে রোগী বাঁচানোর পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়েছিল, এক্ষেত্রেও সেই পথেই হাঁটছেন চিকিৎসকরা। স্বভাবতই চিকিৎসার খরচ বাড়ছে।
গবেষকরা বলছেন, অ্যাডিনো ভাইরাস শরীরকে নানাভাবে সংক্রমিত করে। অ্যাডিনো ভাইরাসে সংক্রমিত হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শ্বাসযন্ত্র প্রভাবিত হয়। রোগ লক্ষণ অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ সর্দি-কাশির মতো হয়। অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ মূলত শীত এবং বসন্তের শুরুতে বাড়ে। সব বয়সিদেরই অ্যাডিনো ভাইরাস আক্রমণ করতে পারে। তবে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করে। নবজাতক এবং ডে কেয়ারে থাকা শিশুদের মধ্যে অ্যাডিনো ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। বাচ্চারা মুখে মাস্ক পরতে চায় না, যেকোনও জিনিস মুখে পুরে ফেলে, তাদের হাত ধোয়ার অভ্যাস নেই। সেই কারণে বাচ্চাদের সংক্রমণ হার বেশি। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ভিড় থেকে অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। মার্কিন মুলুকের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অর্থাৎ সিডিসি জানাচ্ছে, অ্যাডিনো ভাইরাসের বেশ কয়েকটি সাধারণ রোগলক্ষণ রয়েছে। অ্যাডিনো ভাইরাসের ক্ষেত্রে সাধারণ জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। গলা ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, কোনও কোনও ক্ষেত্রে পেটব্যথা, বমি পর্যন্ত হতে পারে। শ্বাসনালীতে সংক্রমণের কারণে ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া পর্যন্ত হতে পারে।