কোন কোন ছবির জন্যে ক্যালেন্ডারকে মনে রাখবেন ভারতীয় দর্শক?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মিস্টার ইন্ডিয়ার ক্যালেন্ডার থেকে ডবল ধামালের বাটা ভাই, ৬৬ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন দম ফাটা হাসির কারিগর সতীশ কৌশিক। হিন্দি ছবির দৃশ্যে যাদের উপস্থিতি দর্শকদের মুখে চওড়া হাসি এনে দিতে, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সতীশ। আশি ও নব্বইয়ের দশকের ছবির পরিচিত মুখ ছিলেন সতীশ। বাগী ৩, ছত্রিওয়ালির করে হাল আমলের ছবিতেও অভিনয় করেছেন সতীশ কৌশিক। পর্দায় উপস্থিতিই হাসির রোল তুলত। পর্দার সামনে পাশাপাশি ক্যামেরার পিছনেও তিনি ছিলেন নিজের মতো করে উজ্জ্বল। চিত্রনাট্য লেখা, সংলাপ লেখা থেকে পরিচালনা, অভিনয় সবেতেই দর্শকদের মন জয় করেছিলেন এই অভিনেতা।
বলিউডের ইতিহাসে অন্যতম বাণিজ্য সফল ও জনপ্রিয় সিনেমা জানে ভি দো ইয়ারোঁ থেকেই সতীশের অভিনয় জীবন শুরু। ১৯৮৩ সালের এই ছবি সতীশ কেবল অভিনয়ই করেননি, বিধু বিনোদ চোপরা, সুধীর মিশ্রর সঙ্গে ছবির জন্য সংলাপও লিখেছিলেন। এরপর উয়োহ সাত দিন, মাসুম, উৎসব, সাগর, মহবৎ-এর মতো ছবি করেছেন সতীশ।
১৯৮৭ সালে মুক্তি পায় মিস্টার ইন্ডিয়া। ছবির ক্যালেন্ডার চরিত্রটিকে আজও দর্শক ভুলতে পারেনি। অনিল কাপুর ও শ্রীদেবীর মতো স্টার মিস্টার ইন্ডিয়ায় থাকলেও, আলাদা করে নজর কেড়েছিলেন সতীশ কৌশিক। উত্তরদক্ষিণ, জলওয়া, ঠিকানা, আগ সে খেলেঙ্গে, বর্দি, এক ন্যায়া রাস্তা ইত্যাদি ছবিতেও ধরা দিয়েছে অসামান্য সতীশ।
রাম লক্ষ্ণণ ছবিতে কাশীরামের ভূমিকায় দর্শকদের নজর কেড়ে ছিলেন সতীশ কৌশিক। কমিক রিলিফ মাতিয়ে দিয়েছিল দর্শকদের। দিওয়ানা মাস্তানা ছবির পাপ্পু পেজারকেও ভুলতে পারবেন না দর্শকরা! অনিল কাপুর ও গোবিন্দার দিওয়ানা মাস্তানার পাপ্পু পেজার ছাড়া ছবিটি কল্পনাও করা যায় না। মিস্টার অ্যান্ড মিসেস খিলাড়ি ছবি অক্ষয় কুমারের পাশাপাশি চান্দা মামা-র চরিত্রে কৌশিকের অভিনয় ছিল অনবদ্য। স্বর্গ ছবির এয়ারপোর্ট চরিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছিলেন সিরিও-কমিক এক চরিত্র। জামাই রাজা, তাকদীর কা তামাশা, প্রেম প্রতিজ্ঞা, সর্দার, মউত কি সাজা, দিওয়ানা মস্তানা, মেরে স্বপ্ন কি রানি ইত্যাদি ছবিতে সতিশের অভিনয়ের কথা উল্লেখ করতে হয়।
ক্যামেরার পিছনেও সাফল্য পেয়েছিলেন সতীশ। ১৯৯৩ সালে রূপ কি রানি চোরোঁ কা রাজা ছবির হাত ধরে পরিচালক সতীশ কৌশিকের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীকালে হম আপকে দিল মে রেহতে হ্যায়, প্রেম, হামারা দিল আপকে পাস হ্যায়, বাধাই হো বাধাই, মুঝে কুছ কেহনা হ্যায়-এর মতো ছবি পরিচালনা করেন তিনি। তেরে নাম ছবির হাত ধরে পরিচিতি বাড়ে পরিচালক সতীশের। এরপর কন কি, ডরনা জরুরি হ্যায়, শাদী সে প্যাহেলে, ঢোল, তেরে সঙ্গ-এর মতো ছবিগুলো পরিচালনা করেন সতীশ। মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছে ইমার্জেন্সি, সেই ছবিতে উপপ্রধানমন্ত্রী জগজীবন রামের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সতীশ।