ভূতুড়ে আয় BJP-র, গেরুয়া ভাঁড়ারে ১২০০ কোটি টাকা এসেছে আননোন সোর্স থেকে?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১ হাজার ১৬১ কোটি টাকা এসেছে অজানা সূত্র থেকে! অবাক হচ্ছেন? বাস্তবে এমনটাই হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া গত অর্থবর্ষের অর্থাৎ ২০২১-২২ সালের অডিট রিপোর্টে বিজেপি জানিয়েছে, এই বিপুল অঙ্কের টাকার উৎস তাদের জানাই নেই। টাকার উৎসর কথা বলতে আননোন সোর্স অর্থাৎ অজানা সূত্রর কথা বলা হয়েছে। বিজেপি অজান্তেই হাজার কোটি টাকারও বেশি টাকা পেয়ে গিয়েছে। এই টাকার অঙ্ক দেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত অনুদানের নিরিখে সর্বাধিক।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস নামক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, গত অর্থবর্ষে বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, এনসিপি, সিপিআই এবং বিএসপির মতো সাতটি জাতীয় রাজনৈতিক দলের ভাঁড়ারে মোট ৩ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা জমা হয়েছে। তার মধ্যে ৬৬.০৪ শতাংশ অর্থাৎ ২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা এসেছে অজানা উৎস থেকে। কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিজেপির আয় ১ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। তৃণমূলের আয় ৫৪৫ কোটি, কংগ্রেসের উপার্জন ৫৪১ কোটি টাকা, সিপিএমের ১৬২ কোটি টাকা, সিপিআইয়ের দু’কোটি, শারদ পাওয়ারের এনসিপির উপার্জন ৭৫ কোটি টাকা এবং বহুজন সমাজ পার্টির আয় ৪৩ কোটি টাকা। বাকি ছয় বিরোধী দলের মোট আয়ের থেকেও বিজেপির আননোন সোর্সের আয় ১৫০ কোটি টাকা বেশি।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম, ইলেক্টোরাল বন্ডে ও ২০ হাজার টাকার কম টাকা অনুদান দেওয়া, অনুদানকারীদের বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ না করলেও চলে। কিন্তু অনুদানের অঙ্ক তার বেশি হলেই অনুদানকারীর নাম, পরিচয় ও টাকার অঙ্ক জানানো বাধ্যতামূলক। কমিশনে জমা দেওয়া মোদীর দলের অডিট রিপোর্ট বলছে, গত আর্থিক বছরে বিজেপির উপার্জন ১ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৭৫৫ কোটি টাকার অনুদান কোথা থেকে এসেছে, কে দিয়েছে, তা জানিয়েছে বিজেপি। বাকিটা অজানা। কোনও কুপন বিক্রি করে নাকি এই টাকা আসেনি এমনই দাবি করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই বিপুল টাকার উৎস কী? বিজেপি জানাচ্ছে, স্বেচ্ছা অনুদান থেকে তারা ১২৭ কোটি টাকা পেয়েছে। বাকি ১ হাজার ৩৩ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা নাকি ইলেক্টোরাল বন্ড থেকে এসেছে। এছাড়াও নানাবিধ খাতে থেকে ২৪ লক্ষ টাকা আয় দেখানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইলেক্টোরাল বন্ড কেবলমাত্র স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াই বিক্রি করতে পারে। অর্থাৎ, বিজেপির দাবি সত্য হলে, ধরে নিতে হয় একমাত্র স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার কাছেই এই অজানা সূত্রের পরিচয় রয়েছে। যদিও স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া সেই পরিচয় জানাতে বাধ্য নয়। সেক্ষেত্রে এই রহস্যময় আয়ের উৎস জানতে নির্বাচন কমিশন যদি বিজেপি বা স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার উপর কোনও পদক্ষেপ করে, তবেই আয়ের প্রকৃত উৎস জানা যাবে।