রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

ঋণের বোঝা কমানোর নিরিখে দেশ সেরা বাংলা, বলছে খোদ কেন্দ্রের রিপোর্ট

March 13, 2023 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ঋণের বোঝা বাড়লেই যে সংকট আসবে তেমনটা নয়, একই সঙ্গে যদি আয় বৃদ্ধি হয় তবেই এগোবে অর্থনীতির চাকা। যার যথার্থ উদাহরণ বাংলা। সেই প্রথম সরকার তৈরি থেকে গত অর্থবর্ষের শেষ অবধি রাজ্য সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে অর্থাৎ মার্চ মাসে তা ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছবে, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। টাকার অঙ্ক বিপুল। তবে কি ঋণের চাপে ডুবছে বাংলা? এর উত্তর একেবারেই না। উত্তর দিচ্ছে খোদ মোদী সরকারের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যান এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট জানাচ্ছে, ঋণ এবং জিএসডিপির অনুপাত বাংলায় কমছে। বাংলার ঋণ বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু তার চেয়েও বহুমাত্রায় বেড়েছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বহর। ফলে ঋণের অঙ্ক বাড়লেও আর্থিক বৃদ্ধির হার লাগাতার বেড়ে চলেছে। 

সাধারণ অঙ্কের হিসেবে স্পষ্ট হয়। ধরা যাক, কেউ একজন মাসে ১০০ টাকা আয় করেন। তাঁর ঋণ রয়েছে ৬০ টাকা। পরের মাসে তাঁর ঋণ বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা। ঋণের পরিমাণ বাড়ল। কিন্তু একইসঙ্গে যদি ওই ব্যক্তির আয় বাড়ে, সেক্ষেত্রে? ধরা যাক, তাঁর আয় একশো থেকে বেড়ে দুশো টাকা হয়েছে। তাহলে ঋণের আনুপাত গিয়ে দাঁড়াল ৪০ শতাংশে। এতদিন যা ৬০ শতাংশে ছিল, আয় বাড়তেই তার ২০ শতাংশ কমে গেল। ঋণের অঙ্ক আর বোঝা হয়ে চাপবে না। রাজ্যের ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে। সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রাজ্যগুলির আর্থিক অবস্থার উপর একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০১১ সালের মার্চে বাংলায় ঋণের ভার ছিল ৪১.৯ শতাংশ। অর্থাৎ বাংলায় ১০০ টাকার পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ঋণের ভার ছিল প্রায় ৪২ টাকা। তারপর তা কমে ৩৪.৬ শতাংশে নামে। যদিও ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষের শেষে তা হঠাৎ করেই বেড়ে ৩৯.৫ শতাংশে পৌঁছয়। তারপর থেকে ক্রমেই কমছে ঋণভার। ২০২১ সালের মার্চ শেষে তা ৩৮.২ শতাংশে নামে। ২০২১-২২ শেষে ঋণ ও জিডিপির অনুপাত দাঁড়ায় ৩৫.৮ শতাংশে। চলতি অর্থ বছর শেষে তা ৩৫.৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে মনে করছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
   
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স বলছে, ২০১৫-১৬ থেকে ২০২০-২১ অর্থাৎ ছটি অর্থবর্ষে রাজ্যগুলিতে যেভাবে ঋণের নিরিখে জিডিপির অনুপাতের বদল হয়েছে, তাতে শীর্ষে রয়েছে বাংলা। যেখানে অন্য রাজ্যগুলির ঋণের বোঝা বেড়েছে, সেখানে বাংলা লাগাতারভাবে ঋণের বোঝা কমিয়ে ফেলতে পেরেছে। ঋণের হার বাড়ার তালিকায় শীর্ষে পাঞ্জাব। পাঞ্জাবে ঋণের হার বেড়েছে ১৫.৫ শতাংশ। বাংলায় ঋণের বোঝা কমেছে ১.৬ শতাংশ। 

রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থ দপ্তরের প্রধান মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্র মনে করছেন, বাংলার মানুষের হাতে নগদ টাকা তুলে দেওয়ার সুফল মিলছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, রূপশ্রী, কন্যাশ্রীর মতো সামাজিক প্রকল্পের কারণে সাধারণ মানুষ হাতে টাকা পাচ্ছে, তার ৯৮ ভাগই ফিরে আসছে বাজারে। মানুষ টাকা খরচ করছেন, ফলে অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। বাংলার জিডিপিতে তার প্রভাব পড়ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স জানাচ্ছে, অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে ঋণভার কমার নিরিখে বাংলা দেশের সব রাজ্যগুলিকে পিছনে ফেলে দিয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #centre, #Loan Reduce

আরো দেখুন