আজ মধু কৃষ্ণ ত্রয়োদশী, এই তিথিতেই জন্মেছিলেন মতুয়াদের প্রাণপুরুষ হরিচাঁদ ঠাকুর
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ মধু কৃষ্ণ ত্রয়োদশী, আজকের দিনেই জন্মেছিলেন মতুয়া ধর্মমতের প্রবর্তক শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর। আজ তাঁর ২১২তম আবির্ভাব তিথি। অধুনা ওপার বাংলার ওড়াকান্দির নিকটবর্তী সাফলিডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন হরিচাঁদ ঠাকুর।
যশোবন্ত ঠাকুর ও অন্নপূর্ণা দেবীর সন্তান হরিচাঁদকে গৌতম বুদ্ধ ও চৈতন্যদেবের অবতার হিসেবে মনে করেন তাঁর ভক্তরা। কালক্রমে হরিচাঁদ অবতার রূপে আত্মপ্রকাশ করেন। তাঁর ভক্তসংখ্যা বাড়তে থাকে। তাঁর প্রচারিত ধর্মমত মতুয়া হিসেবে পরিচিত হয়, তাঁর ভক্তদের নামও হয় মতুয়া। হরিচাঁদের জন্মস্থান ওড়াকান্দি হয়ে উঠেছে তীর্থস্থান। এখন এখানে লক্ষ লক্ষ ভক্তর সমাগম হয়। হিন্দু সমাজের তথাকথিত নীচু সম্প্রদায়ের প্রাণের ঠাকুর হরিচাঁদ। পতিতজনের মুক্তির পন্থা খোঁজার উদ্দেশ্যেই তিনি জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি বলতেন, বাহুল্য-সর্বস্ব ধর্মচর্চা অসাড়। ‘হাতে নাম মুখে কাজ’ মন্ত্রকে সঙ্গী করে তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি ও আর্থসামাজিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য আজীবন ব্রতী ছিলেন। মাত্র ৬৬ বছর বয়সে তাঁর জীবনাবসানের পূর্বে, উত্তরাধিকারী হিসেবে জ্যেষ্ঠপুত্র গুরুচাঁদ ঠাকুরকে মনোনীত করে গিয়েছিলেন।
বাবার দেখানো পথেই গুরুচাঁদ ঠাকুর সমাজের অবহেলিত মানুষদের একত্র করেছিলেন। হরিচাঁদ ঠাকুর ও তাঁর দুই পুত্রই নমঃশূদ্রদের পাশাপাশি তেলি, মালি, মাহিষ্যসহ সকল সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। তাঁরা শিক্ষা বিস্তারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। ১৮৮০ সালে গুরুচাঁদ ঠাকুর ওড়াকান্দিতে প্রথম স্কুল স্থাপন করেন, যা ১৯০৮ সালে সরকারি সাহায্যে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে রূপান্তরিত হয়। বাস্তবিক অর্থে দলিত ও পিছিয়ে পড়া মানুষের ত্রাণকর্তা হিসেবে, তাঁদের প্রতি হওয়া বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য হরিচাঁদ ঠাকুর বাংলার ধর্মীয় ও সামাজিক ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।