বিরলতম অপরাধে ফাঁসি নয়, অপরাধীর ‘কম কষ্টদায়ক’ মৃত্যু চায় শীর্ষ আদালত!
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কেন্দ্রকে ফাঁসির মতো কষ্টদায়ক মৃত্যুদণ্ডের বিকল্প খোঁজার নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, ফাঁসির মতো কষ্টদায়ক মৃত্যুদণ্ডের বিকল্প খোঁজার জন্যে কেন্দ্রকে উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা ও তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। তারপর সবিস্তারিত রিপোর্ট সলিসিটার জেনারেল আর বেঙ্কটরামানি শীর্ষ আদালতে জমা দেবেন, এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পদ্ধতি সংক্রান্ত মামলায়, মামলাকারীর আইনজীবী ঋষি মালহোত্রা জানান, ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড অত্যন্ত নৃশংস এবং অমানবিক। ফাঁসির পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ডের জন্য অপরাধীকে গুলি করে অথবা প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন দিয়ে বা ইলেকট্রিক চেয়ারের মতো অপেক্ষাকৃত কম যন্ত্রণাদায়ক বিকল্প ব্যবস্থা করা যেতেই পারে। মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানান মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। আপাতত বিজ্ঞানসম্মত তথ্য ও পরিসংখ্যান প্রয়োজন বলেও জানান তিনি। তথ্য-পরিসংখ্যান পেলে, তার ভিত্তিতে ফাঁসির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে একটি কমিটি গঠনের পদক্ষেপ করতে পারে শীর্ষ আদালত।
বিচারপতিদের বেঞ্চ, এদিনের শুনানিতেই মামলাকারীর প্রস্তাবিত বিকল্প মৃত্যুদণ্ড পদ্ধতিগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। বেঞ্চের অন্যতম সদস্য, বিচারপতি পি এস নরসিমহা বলেন, প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত রয়েছে। না নিয়ে সেদেশে বিতর্কের অন্ত নেই। অনেকক্ষেত্রেই এই ইঞ্জেকশনে তৎক্ষণাত মৃত্যু হয় না। সেক্ষেত্রে মৃত্যু আরও যন্ত্রনাদায়ক হয়। ইঞ্জেকশনে কী ধরণের রাসায়নিক ব্যবহার হচ্ছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন। প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশনের সাহায্যে মৃত্যুদণ্ড অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। অপরাধীকে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে ছেড়ে দেওয়াও বহু দেশেই প্রচলিত রয়েছে। গুলি করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া সেনা-শাসনের প্রিয় অভ্যাস। কিন্তু এই ধরণের শাস্তিতে মানবাধিকার বিঘ্নিত হয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২ মে। হয়ত সেদিন কেন্দ্রের তরফে রিপোর্ট পেশ করা হতে পারে।