এখানে জল থেকে উঠে আসেন স্বয়ং মহাদেব, জানেন কোথায় ঘটে এই আশ্চর্যজনক ঘটনা?
গল্প হলেও সত্যি, জল থেকে উঠে আসেন স্বয়ং মহাদেব! প্রায় ৮৫০ বছরের প্রাচীন জলেশ্বর শিবমন্দির। উত্তর ২৪ পরগনার প্রাচীন এই শিবমন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানা কথা। তাই এই মন্দিরের মাহাত্ম্যের টানেই সারাবছর সমানভাবে লেগে থাকে ভক্তদের আনাগোনা। বিশেষ করে শিবরাত্রের দিনে ঢল নামে পুর্নার্থীদের। এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু বছর ধরে ক্রমেই বদলাচ্ছে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্রটা। ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, দ্বাদশ শতকের শেষ দিকে শিব পুজোর প্রচলন শুরু হয় গাইঘাটার এই জলেশ্বর অঞ্চলে।
প্রথমে মন্দিরটি ছিল ছোট ও সাধারণ মানের। পরবর্তীতে গোবরডাঙ্গার জমিদার রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় শিবমন্দিরের জন্য ৬০ বিঘা জমি দান করেছিলেন। তবে মন্দিরের মূল বিগ্রহটি অবশ্য বছরের নির্দিষ্ট দিন ছাড়া দেখা যায় না।
মন্দিরের পাশেই রয়েছে ৪ একরেরও বেশী জায়গা নিয়ে শিবপুকুর। বছরভর পুকুরের নীচে রাখা থাকে বিগ্রহটি। যেহেতু জলের নীচে ইশ্বর অর্থ্যাৎ মহাদেব বাস করেন সেহেতু এই অঞ্চলের নাম হয়েছে জলেশ্বর। প্রতিবছর বিগ্রহটি চৈত্র মাসের তৃতীয় সোমবার শিবপুকুর থেকে তুলে আনা হয়। আর সেই কাজটি করে থাকেন চড়কে যারা সন্ন্যাসী হন তারা। পরদিন ওই বিগ্রহ নিয়ে সন্ন্যাসীরা পায়ে হেঁটে হালিশহর গিয়ে বিগ্রহকে গঙ্গায় স্নান করিয়ে নিয়ে আসেন জলেশ্বরের এই শিবমন্দিরে। ফের ১লা বৈশাখ মূল বিগ্রহকে শিব পুকুরেই ডুবিয়ে দেওয়া হয়। কথিত আছে, মনের বিশ্বাস নিয়ে কেউ এই মন্দিরের বাবা ভোলানাথের পুজো দিলে তার মনস্কামনা পূর্ণ করে থাকেন তিনি। আর সেই বিশ্বাসে প্রতিবছর শিবরাত্রে ও চৈত্র মাসে পুজো দিতে ছুটে আসেন পুন্যার্থীরা। এছাড়া সারাবছর ধরেই তারকেশ্বরের মতোই পুন্যার্থীদের ভিড় লেগে থাকে জলেশ্বর শিবমন্দিরে। এই মন্দিরকে ইতিমধ্যেই হেরিটেজ ঘোষণা করেছেন রাজ্য হেরিটেজ কমিশন।