গৌতম আদানীর তিনটি সংস্থা শেয়ার বাজারে লাভের শীর্ষে কীভাবে? প্রশ্ন বিরোধীদের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এই মুহূর্তে দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে চর্চিত নামটি হল গৌতম আদানী। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির ব্যবসার সাম্রাজ্য নড়ে যায় মাত্র ৯ দিনে। যার আঁচ পড়েছে সংসদেও। বাজেট অধিবেশনে বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে আদানী ইস্যুতে কেন্দ্রকে কোণঠাসা করতে শুরু করে দিয়েছেন। এখন রীতিমতো দেশের অন্যতম প্রধান ইস্যু ‘আদানী-মোদী যোগ’। বিরোধীদের দাবি, আদানী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ারদরে জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে সংসদে বিতর্ক হোক। যৌথ সংসদীয় কমিটি বসানো হোক।
এরই মধ্যে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, গৌতম আদানীর তিনটি সংস্থা শেয়ার বাজারে লাভের শীর্ষে কীভাবে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ গৌতম আদানীর মালিকানাধীন তিনটি সংস্থা লাভের নিরিখে চলে এল প্রথম সারিতে। শেয়ার সূচক সেনসেক্সের হিসাব বলছে চলতি সপ্তাহে শেয়ার দরে লক্ষণীয় উত্থান ঘটেছে আদানী ট্রান্সমিশন, আদানী গ্যাস এবং আদানী গ্রিন এনার্জির। লাভের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর এক এক করে আদানী গোষ্ঠীর একাধিক সংস্থার শেয়ারে ধস নেমেছিল। নিজেদের সম্পত্তির প্রায় অর্ধেক খুইয়ে ফেলেছিল আদানীর মালিকাধীন শিল্পগোষ্ঠী। যার আনুমানিক পরিমাণ প্রায় ৯ লক্ষ ৯২ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা। শোচনীয় অবস্থা হয় আদানী এন্টারপ্রাইজেরও। কিন্তু চলতি মাসের গোড়া থেকেই পরিস্থিতির বদল ঘটেছে। আদানীদের বহু সংস্থাই ধীরে ধীরে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে।
শেয়ার বাজারে বিপর্যয়ের মুখেও ফেব্রুয়ারির গোড়ায় আদানী গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের ২ কোটি ৭৫ লক্ষ ৬০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ৩ শতাংশ) এবং আদানী ট্রান্সমিশন লিমিটেডের ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৭০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ১.৪ শতাংশ) বাজারে আনা হয়েছিল। শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজেদের অর্থনৈতিক ভাবে সবল দেখাতে এবং শেয়ারের দরে ‘রক্তক্ষরণ’ কমাতেই ছিল এই সিদ্ধান্ত।
অতীতে ওই শেয়ারগুলির পরিবর্তে বাজার থেকে টাকা ঋণ নিয়েছিল আদানী গোষ্ঠী। সেই ঋণ পরিশোধের সময় ছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যম্ত। কিন্তু ২০২৩ সালের জানুয়ারিতেই আগাম সেই বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেয় আদানী গোষ্ঠী। ফেরত পায় বন্ধক থাকা শেয়ারগুলি। সেই শেয়ারগুলিই বাজারে এনে তারা বিপুল লাভের মুখ দেখল বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারের বাজার বন্ধের হিসাব বলছে, গড়ে ৫ শতাংশেরও বেশি শেয়ার দর বেড়েছে ওই তিন সংস্থার। তবে গৌতমের মূল সংস্থা আদানী এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড এবং আদানী পাওয়ার লিমিটেড ও আদানী পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেডের দর ১ থেকে ২ শতাংশ কমেছে।
বিরোধীরা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে সরকারি স্তরে নানা বেআইনি সুবিধা পেয়েছেন আদানী। তার ফল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে শেয়ার বাজারে।