রাম নবমী: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মেরুকরণের তাস খেলতে চাইছে বিজেপি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: অনেক চেষ্টা করেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বুথস্তর পর্যন্ত সংগঠন গড়ে তুলতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। এমন কি পঞ্চায়েতে প্রার্থী খুঁজতেও তারা হিমশিম খাচ্ছে।এমনকী বাংলার গেরুয়া নেতাদের তৈরি করা রিপোর্টে আর ভরসা করছে না দিল্লির নেতারা। এর আগেও একাধিক সাংগঠনিক বিষয়ে বঙ্গ বিজেপিকে বিশ্বাস করে ভরাডুবি হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। তাই অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে দিল্লির নেতারা আর বাংলার বিজেপি নেতাদের বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে ১২ মার্চ থেকে বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে নেমেছিল বিজেপি। এই কর্মসূচির শেষে কেন্দ্রের নেতাদের কাছে বঙ্গ বিজেপি রিপোর্ট পেশ করেছে, সেই রিপোর্টে জল রয়েছে বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। যা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।
এই অবস্থায় তাদের সেই আদি অকৃত্রিম ধর্মীয় মেরুকরণের তাস খেলতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। আজ বৃহস্পতিবার রাম নবমীকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যে মেরুকরণের হাওয়া তুলতে চাইছে গেরুয়া শিবির। বুধবার সন্ধেয় বিজেপির মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন, “কাল রাম নবমীতে নজর রাখবেন। দশ হাজার ছোট মিছিল হবে, এক হাজার বড় মিছিল হবে”।
এই পরিস্থিতে সতর্ক রাজ্য প্রশাসনও। রাম নবমীর মিছিল থেকে কোনওরকম অশান্তি বাধানোর প্ররোচনা দেওয়া হলে তা বরদাস্ত করবে না প্রশাসন। তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ধর্না মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “রাম নবমীর মিছিল সবাই করতে পারে। আমাদের মিছিল বেরোবে। যাঁর যাঁর নিজের ধর্মাচরণে কোনও বাধা নেই। কিন্তু রাম নবমীর মিছিলের নামে একটা মুসলিম এলাকায় যদি হামলা হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে”। মমতার কথায়, “মিছিল মিটিং করার অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু দাঙ্গা করার অধিকার কারও নেই”। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কোনও রকম গোলমালের পরিবেশ তৈরি হলেই আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’
এই প্রসঙ্গে নাম না করে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষকেও আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির একজন নেতা আছেন যাঁর বক্তব্য টিভিতে রেকর্ড রয়েছে। তিনি বলেছেন, হাতের কাছে যা অস্ত্র পাব নিয়ে বেরব। বলে রাখছি, যে কোনও অস্ত্র নিয়ে বের হও, কিন্তু গোলমাল পাকালেই পদক্ষেপ করা হবে।’’ একই সঙ্গে রামনবমী শান্তিতে পালনের আবেদন জানান। বলেন, ‘‘সবাই শান্তিতে রামনবমী পালন করুন, অন্নপূর্ণা পূজা পালন করুন, রমজান মাস পালনে করুন।’’ গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে রাজ্য জুড়ে এক হাজারের বেশি জায়গায় বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ২০টি জায়গায় অস্ত্র মিছিলের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জেনেছে প্রশাসন।