সুদেষ্ণা রায়কে হেনস্থার অভিযোগ NCPCR-এর চেয়ার -ম্যানের বিরুদ্ধে, দেখুন ভিডিও
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান সুদেষ্ণা রায়কে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগোর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই সুদেষ্ণা রায় রাজ্যের মহিলা কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন। তিলজলা কান্ডে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রাজ্যে শিশু সুরক্ষা কমিশন ইতিমধ্যেই তিলজলার বিষয়ে পদক্ষেপ করতে আরম্ভ করেছে। (গত ২৭ মার্চ অর্থাৎ ঘটনার পরের দিন থেকেই রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন পদক্ষেপ করতে শুরু করে) গতকাল অর্থাৎ ৩১ মার্চ জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন একই বিষয়ে অনুসন্ধান করতে তিলজলা গিয়েছিলেন। তাঁকে সাহায্য করতেই সেখানে পৌঁছন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়। সুদেষ্ণা রায়কে দেখে বেজায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো।
সুদেষ্ণা অভিযোগ করছেন, তিনি মৃতের বাড়িতে হাজির হয়ে দেখেন, জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধি দল, ঘটনাস্থল থেকে সকলকে বের করে দিয়ে, দরজা আটকে দিয়েছে। তিনি কথা বলার চেষ্টা করলে, জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে বলেন। এমনকি পরিচয় জানা সত্ত্বেও কোনরকম সৌজন্য দেখাননি প্রিয়াঙ্ক। সুদেষ্ণার অভিযোগ, প্রিয়াঙ্ক তাঁর উপর চিৎকার করে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। এমনকি তাঁর দিকে আঙুল তুলে বলেন, ‘চলে যান, আপনি কে? আপনি নির্বোধ। আমি আপনাকে ছুঁড়ে ফেলতে পারি।’ জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো সুদেষ্ণকে লাগাতার অপমান করেন বলেও অভিযোগ উঠবে। এমনকি হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠছে। পুলিশকে মৃতের বাবা-মাকে তিলজলা থানায় নিয়ে আসার নির্দেশও দেন প্রিয়াঙ্ক। পাশাপাশি সুদেষ্ণাকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেন, এমনই অভিযোগ। রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিদের সামনে তিনি কোনও কথাই বলতে চাননি। এতেই জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সওয়াল উঠছে। শিশুর অধিকার রক্ষার গুরু দায়িত্ব যার উপর ন্যস্ত, তেমন এক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী একজন মহিলার সঙ্গে এহেন আচরণ করছেন, এ নিয়ে সরব নানান মহল।
রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের অভিযোগ, তাদের ডিঙিয়ে সরাসরি প্রশাসনকে পদক্ষেপ করতে বলছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। যেখানে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে, সেক্ষেত্রে এমনটা করা আইনসঙ্গত নয়। শিশু সুরক্ষা কমিশন আইনের ১৩(২) ধারা অনুযায়ী, শিশুর অধিকার খর্ব হয়েছে এমন ঘটনায় যদি রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন প্রথমে পদক্ষেপ করতে আরম্ভ করে, সেক্ষেত্রে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন হস্তক্ষেপ করতে পারে না, উভয় সংস্থাকে যৌথভাবে পদক্ষেপ করতে হয়। ২০১৭ সালের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, কোনও গুরুতর ঘটনার ক্ষেত্রে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন অবশ্যই পদক্ষেপ করতে পারে কিন্তু তাকে রাজ্যের কমিশনের সঙ্গে যৌথভাবে পদক্ষেপ করতে হবে। তিলজলা ও গাজল দুটি ঘটনার ক্ষেত্রেই রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশন তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ করতে আরম্ভ করেছে। যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের কমিশনের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ না করে, এমনকি আলোচনাও না করে; হঠাৎ করেই দুই ঘটনায় জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন পদক্ষেপ করছেন। এক্ষেত্রে তিনি দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ের অবমাননা করছেন।
প্রসঙ্গত, জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো কয়েক সপ্তাহ আগে গাজোলের একটি ঘটনায় দুজন BJP বিধায়ককে নিয়ে অত্যাচারিতের বাড়িতে যান এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ঘটনাটিকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার।