গ্রামীণ অর্থনীতিতে অশনি সংকেত, ১০০ দিনের কাজে ব্যাপক হারে কমবে দিন সংখ্যা?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত। একশো দিনের কাজকে ঘিরে ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এল এমজিএনআরইজিএস সংঘর্ষ মোর্চা নামক এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার রিপোর্টে। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে আদৌ কত দিন কাজ মিলবে তা নিয়ে ঘনাচ্ছে সংশয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, হয়ত কোনও মতে ১৭ দিন কাজ মিলতে পারে, তাও নিশ্চিত নয়। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেটে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে সর্বকালীন কম বরাদ্দ করেছে মোদী সরকার। গতবারের চেয়ে ৩৩ শতাংশ কম বরাদ্দ করে, ওই প্রকল্পে মাত্র ৬০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। নানান সমীক্ষায় উঠে আসছে, দেশজুড়ে ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ বছরভর কাজের সুযোগ হারাতে চলেছেন। আইন অনুযায়ী, জব কার্ড হোল্ডারদের বছরে ১০০ দিন কাজ দিতে বাধ্য সরকার। কিন্তু ৬০ হাজার কোটি টাকায় তা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। অঙ্কের হিসেব বলে, ১৭ দিনেই তা শেষ হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, কাজের দিনের সংখ্যা কমবে। কোথা থেকে আসবে মজুরি!
সমীক্ষক সংস্থা বলছে, দেশের সব জব কার্ডধারীকে অন্তত ৪০ দিন করে কাজ দিতে ১ লক্ষ ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। কিন্তু বরাদ্দ হয়েছে তার অর্ধেক। অন্যদিকে, বকেয়ারই পরিমাণ ১৬ হাজার ৭০ কোটি। বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, এতে মানুষের কাজের অধিকারে আঘাত পড়ল। কেউ কেউ বলছেন, এটিই প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ।
গোটা দেশের জব কার্ডধারী পরিবারগুলির প্রায় ১১ শতাংশ রয়েছে বাংলায়। ফলে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বরাদ্দ কমার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হল বাংলা। বাংলার প্রায় দেড় কোটি জব কার্ড হোল্ডারকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে বকেয়া বাবদ কোনও টাকা দেয়নি মোদী সরকার। লিবটেক ইন্ডিয়া নামক এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে, ২০২২-এর এপ্রিল-ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হওয়ায় বাংলার শ্রমিকরা ৩,৮৯২ কোটি থেকে ৬,০৪৬ কোটি টাকার মজুরি হারিয়েছেন। সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন মহিলা শ্রমিকরা। তারা ১৮৭০ কোটি থেকে ২৭৫৮ কোটি টাকার মজুরি হারিয়েছেন। বকেয়ার পরিমাণ সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। বকেয়া আদায়ের দাবি একাধিকবার মোদী সরকারের কাছে দরবার করেছে রাজ্য। কিন্তু টাকা আসেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামীতে গ্রামীণ ভারতের পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে।