গুড ফ্রাইডের দিনে জেনে নিন পবিত্র সপ্তাহের ইতিহাস
সৌভিক রাজ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ গুড ফ্রাই ডে, খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের কাছে খুবই পবিত্র দিন এটি। গুড ফ্রাই ডে’র সপ্তাহটিকে পবিত্র সপ্তাহ বা যীশুর সপ্তাহ বলা যায়। বাইবেলের ওল্ড এবং নিউ টেস্টামেন্ট অনুযায়ী, এই পবিত্র সপ্তাহের শুরু হয় রবিবার থেকে, ইস্টার রবিবারের আগের রবিবার যার নাম হল প্লাম সান ডে, ওই দিন যীশু শেষ বারের মতো জেরুজালেমে প্রত্যাবর্তন করেন।
তারপরেই দু’দিন বাদে আসে গুড ওয়েডনেস ডে, একে স্পাই ওয়েডনেসডেও বলা হয়। যীশুর সঙ্গে যে প্রতারণা হয়ে ছিল সেই বিষয়কে স্মরণ করেই, এই দিন উদযাপন করা হয়। এদিন থেকেই তাঁকে মারার জন্য লোক জড়ো হতে শুরু হয় এবং তাঁর শিষ্যদের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারকেরা গুপ্তচরবৃত্তি শুরু করে দেয়।
এরপর মাউন্ডই থার্স ডে, এই দিন ছিল সেই বিখ্যাত লাস্ট সাপার অর্থাৎ ওই দিন শেষ বারের মতো যীশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে রাতের খাওয়ার সারেন। তারপর যীশু নিজ হাতে তাদের পা ধুইয়ে দেন, এই ঘটনাকেই মাউন্ডই বলা হয়।
বৃহস্পতিবারের পর হল গুড ফ্রাই ডে অর্থাৎ আজকের দিন। এই দিনটিতে যীশুকে ক্রুস বিদ্ধ করা হয়, মাথায় কাঁটার মুকুট পরিয়ে দেওয়া হয়।
এটি দুঃখের দিন, অথচ কেন এর নাম গুড? এই নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই, রোমান এবং গ্রিক ভাষায় একে গুড বা হোলি ফ্রাই বলা হয় কিন্তু জার্মানরা এই দিন কে ‘Karfreitag’ অর্থাৎ দুঃখের দিন বলেন।
আঠারো শতকের বিভিন্ন রচনা বা তারও আগের বিভিন্ন দলিল থেকে প্রমাণ মেলে, সম্ভবত গুড ফ্রাইডে কথাটি এসেছে, গড’স ফ্রাই ডে থেকে। এর বাইবেলীয় ব্যাখ্যা যেতে পারে যে, ভগবান মঙ্গলময়, তিনি পাপের বোঝা থেকে আমাদের রক্ষা করার জন্য যীশু অবতারে পৃথিবীতে আসেন এবং তাঁর উদ্দেশ্যই ছিল ইহজাগতিক পাপ দুঃখ থেকে আমাদের রক্ষা করা। তাই ভগবানের অর্থাৎ গডের শুক্রবার কালক্রমে গুড ফ্রাই ডে হয়ে গিয়েছে।
ক্রুসবিদ্ধ হওয়ার পরের দিন যীশুকে সমাধিস্থ করা হয়, অর্থাৎ ইস্টার স্যাটার ডে এবং সপ্তাহের শেষ হয় ইস্টার সান ডে-তে, প্রচলিত জনশ্রুতি অনুযায়ী, ওই দিন যীশুর পুনর্জন্ম হয়। সমাধি থেকে উঠে, তিনি পুনরায় দেখা দেন তাঁর অনুগামীদের, তাই তাঁর ভক্তদের কাছে এটিও একটি পবিত্র দিন।
যে মানুষটা আদি অনন্তকাল থেকে তাঁর দুহাত ছড়িয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে, তাকে কি উপেক্ষা করা যায়। তাঁর আশীর্বাদ বর্ষিত হোক সকলের উপর।