দেশ বিভাগে ফিরে যান

লোকসভা নির্বাচন নিয়ে চিন্তায় বিজেপি, অস্ত্র করতে চাইছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে

April 8, 2023 | 2 min read

ছবি সৌজন্যে: myvoice.opindia

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে মোক্ষম চাল হিসেবে ব্যবহার করতে চলেছে বিজেপি।

অভিন্ন দেওয়ানি বিধির সারমর্ম হল, সব ধর্মের জন্য সম আইন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৯—বিজেপির প্রতিটি নির্বাচনী ইস্তাহারে এই প্রতিশ্রুতি রয়েছে। বিজেপির প্রধান তিন ঘোষিত এজেন্ডা হল রামমন্দির, ৩৭০ অনুচ্ছেদের অবলুপ্তি, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। প্রথম দু’টি ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। বাকি শুধু এটা।

আর কয়েকদিন বাদেই কার্ণাটকের ভোট। এরপর একে একে রাজস্থান, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, মিজোরামে। ২০১৮ সালে মোদী ম্যাজিক যখন তুঙ্গে, তখনও এই তালিকার একটি রাজ্যেও বিজেপি জয়ী হতে পারেনি। কর্ণাটক ও মধ্যপ্রদেশে পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে সরকার গড়তে হয়েছে। তাই এবার উদ্বেগ বাড়ছে। এই রাজ্যগুলির ফলাফলের সামান্য প্রভাবও যদি ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে পড়ে, তাহলে গরিষ্ঠতা পাওয়াই মুশকিল হয়ে যাবে। তাই কোনও ঝুঁকি নয়। এখন থেকেই চলছে চিত্রনাট্যের প্রস্তুতি।

প্রধান হাতিয়ার হতে চলেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। বিজেপি জানে, এই বিল পেশ করার পর বিরোধীরা হইচই করবেই। তা সত্ত্বেও এই প্ল্যানে অনড় থাকবে মোদী সরকার। কারণ, পাশ না হলেও মোদী সরকার যে এই বিল আনতে মরিয়া, এই বার্তাই দেশবাসীকে দেওয়া যাবে। এটাই স্ট্র্যাটেজি। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতিটি লোকসভা ভোটেই বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারে রয়েছে তিনটি ঘোষিত প্রতিশ্রুতি—রামমন্দির, ৩৭০ অনুচ্ছেদের অবলুপ্তি এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। তালিকার দু’টি প্রতিশ্রুতি ইতিমধ্যেই কার্যকর করে ফেলেছে বিজেপি। বাকি রয়েছে তৃতীয়টি। ২০২৪ সালে সেটি হয়ে গেলে জয় নিয়ে সংশয় থাকবে না বলেই বিশ্বাস বিজেপির।

অভিন্ন দেওয়ানি বিধির অর্থ, বিয়ে, বিবাহবিচ্ছেদ, সম্পত্তির ভাগাভাগি, উত্তরাধিকার, দানের মতো ক্ষেত্রে প্রত্যেক ভারতবাসীর জন্য একই আইন। আরএসএস তথা বিজেপির এই আইন বলবৎ করার দাবি দীর্ঘকালের। প্রধান লক্ষ্য অবশ্যই মুসলিম পার্সোনাল ল মুছে দেওয়া। এই প্রত্যেকটি বিষয় তখন আর ওই সম্প্রদায়ের নিজস্ব আইনমাফিক কার্যকর হবে না। স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী বিয়ে না করলে অভিন্ন বিধিই কার্যকর হবে তাদের সমাজে। একইভাবে খ্রিস্টান এবং পার্সিদের ক্ষেত্রেও ব্যক্তিগত আইন আর কার্যকর হবে না। এদেশে প্রত্যেক ধর্মের পৃথক আচার-বিধি রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, কোনও ধর্মকেই তাদের আচার বা বিধি পালনে বাধা দেওয়া যায় না। এই আইন কার্যকর হলে স্পষ্টতই সমাজে ধর্মীয় মেরুকরণ মাথাচাড়া দেবে। বিরোধীদের অভিযোগ, সেটাকেই ব্রহ্মাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবে বিজেপি। গোয়ায় অভিন্ন বিধি চালু এবং উত্তরাখণ্ডে সরকারে আসার পর কার্যকরের ঘোষণা করেছে বিজেপি। গত কয়েক বছরে সংসদে প্রাইভেট মেম্বার বিলও এনেছেন একাধিক বিজেপি এমপি। রাজনৈতিক মহলের মত, এই সবই প্রতিক্রিয়া যাচাইয়ের কৌশল। পাশাপাশি সমাজকে বার্তা দেওয়া, আজ না হয় কাল সরকারিভাবে এই বিল আসছেই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #Uniform Civil Code, #Loksabha Election 2024

আরো দেখুন