দেশের ১০ জন শিশুর মধ্যে দু-জন গোটা দিন অভুক্ত থাকছে! ভয়ঙ্কর তথ্য সমীক্ষায়
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: খাবার পাচ্ছে না শিশুরা। ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এল সমীক্ষায়, দেশের প্রতি ১০জন শিশুর মধ্যে দুজন কোনও রকম খাবার পাচ্ছে না; প্রায় গোটা দিন অনাহারে থাকতে হচ্ছে। ঘটনা একদিন দুদিনের নয়, বিগত সাত বছরে অবস্থার কোনও বদল হয়নি। ২০১৬ সাল থেকে একই রয়ে গিয়েছে ছবিটা। ছয় থেকে তেইশ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, গোটা একটা দিন যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালরিযুক্ত সামগ্রীসহ কোনও খাবার জোটেনি এমন শিশুদের সংখ্যা ২০১৬ সালের ১৭.২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২১ সালে ১৭.৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
মোদী সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রক তরফে করা দেশব্যাপী পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা থেকে তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা, পাশাপাশি সমীক্ষকরা ৬,০০,০০০ পরিবারের তথ্য নিয়েছেন। তারা বলেছেন, ভারতের খাদ্য নীতিগুলোর আশু বদল করা প্রয়োজন। যে সব পরিবারে এমন ‘জিরো ফুড’ একরত্তি শিশুরা রয়েছে, তাদের কাছে নতুন করে খাদ্য নীতি তৈরি করে পৌছতে হবে। হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথের জন স্বাস্থ্যের অধ্যাপক বলছেন, ছয় মাস থেকে তেইশ মাস বয়সী বাচ্চারা পুরো একটা দিন সম্পূর্ণরূপে অনাহারে থাকবেন এটা তারা আশা করেন না। উল্লেখ্য, তিনিই এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েদেন। তিনি আরও জানাচ্ছেন, একটি শিশুকে কতক্ষণ বিনা খাবারে থাকতে হচ্ছে, সে তথ্য তাদের কাছে নেই। এটাই সমীক্ষার সীমাবদ্ধতা। এমন শিশুর সংখ্যা উত্তরপ্রদেশে ১০ শতাংশ এবং ছত্তিশগড়ে ১২.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দেশব্যাপী গড়ে।
সমীক্ষা চালানোর সময় প্রায় ৬,০০,০০০ পরিবারকে সমীক্ষকরা জিজ্ঞাসা করছিলেন, তাদের বাড়ির ছয় থেকে তেইশ মাস বয়সী শিশুরা শেষ ২৪ ঘন্টায় খাবার খেয়েছিল কিনা? খেলেও কি খাবার খেয়েছিল? উল্লেখ্য, ২০১৬ ও ২০২১ সালে একই প্রশ্ন করা হয়েছিল। উত্তর এসেছে বাচ্চারা কোনও খাবার পায়নি। ২০২১ সালের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, গোটা দেশে এমন শিশুর সংখ্যা প্রায় ৫৯ লক্ষ। উত্তরপ্রদেশে এমন শিশুর সংখ্যা ২৭.৪ শতাংশ। যা দেশে সর্বাধিক। এরপরে রয়েছে ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান এবং আসাম।
এখানেই এগিয়ে বাংলা। ২০১৬ থেকে যেসব রাজ্যে এই প্রবণতা কমছে, তার মধ্যে অন্যতম বাংলা। বাংলায় ২০১৬ সালে এই হার ছিল ১২.১ শতাংশ। ২০২১ সালে তা কমে ৭.৫ শতাংশে নেমে এসেছে৷ দ্য ল্যানসেট জার্নালের অধীনস্থ ইক্লিনিক্যাল মেডিসিনে এই তথ্য-পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে।