ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর হিংসা বাড়ছে কেন? আমেরিকায় প্রশ্নের মুখে নির্মলা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আমেরিকা সফরে গিয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়তে হল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে। ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর হিংসা বাড়ছে কেন? নির্মলার কাছ থেকে উত্তর চাইলেন এক অর্থনীতিবিদ। বিব্রত ভারতের অর্থমন্ত্রী অবশ্য পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমের উপরই যাবতীয় দায় চাপিয়েছেন। রাহুল গান্ধীর মতো বিরোধী নেতার সংসদ সদস্যপদ কেড়ে নেওয়া নিয়েও তাঁকে প্রশ্ন শুনতে হয়।
সোমবার (মার্কিন সময়) ওয়াশিংটনে পিটারসন ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ইকনমিকস (পিআইআইই) আয়োজিত এক আলাপচারিতায় যোগ দিয়েছিলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী। সেখানেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ‘পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমে একের পর এক সংবাদ ও রিপোর্ট প্রকাশ হচ্ছে যে, ভারতে সংখ্যালঘুরা নাকি বিপন্ন! ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর হিংসার ঘটনা বৃদ্ধি নিয়ে এত রিপোর্ট আসছে কেন? প্রকৃত অবস্থা কী?’
প্রশ্নের মুখে সীতারামনের উত্তর, ‘‘গোটা বিশ্বে মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী ভারতে রয়েছে। তাঁদের জনসংখ্যাও বাড়ছে।’’ এ বিষয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে নিজেই ভারতের তুলনা টেনেছেন অর্থমন্ত্রী। যুক্তি দিয়েছেন, ১৯৪৭-এর তুলনায় ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা বেড়ে চললেও, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা কমেছে।
অর্থমন্ত্রীর মুখে এমন যুক্তি শুনে বিরোধীদের মন্তব্য, মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে বিপদ হিসেবে দেখিয়ে সঙ্ঘ পরিবার যে প্রচার চালায়, অর্থমন্ত্রীর কথায় তারই প্রতিফলন ফুটে উঠেছে। সীতারামন শুধু মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কথাই বলছেন। মোদী জমানায় সংসদ থেকে বিজেপি শাসিত রাজ্যের বিধানসভাগুলিতে যে মুসলিমদের উপস্থিতি প্রবল হারে কমেছে, সে কথা বলেননি। কারণ বিজেপি কোনও মুসলিমকে প্রার্থীই করে না। ওয়াশিংটনে পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকনমিক্স-এ ভারতের অর্থনীতি নিয়ে এক আলোচনায় অর্থমন্ত্রীকে ভারতের মুসলিমদের হাল নিয়ে নেতিবাচক আন্তর্জাতিক রিপোর্ট ও সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বিরোধীদের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখনই অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘যদি এই ধারণা সত্যি হয়, বা বাস্তবেই রাষ্ট্রের মদতে মুসলিমদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে উঠে থাকে, তা হলে কি ১৯৪৭-এর তুলনায় মুসলিমদের জনসংখ্যা বাড়ত? ১৯৪৭-এ একই সময় তৈরি হওয়া পাকিস্তানে সমস্ত সংখ্যালঘুর সংখ্যা কমছে। মুসলিমদের মধ্যে শিয়া, মোহাজিরদের সংখ্যা কমছে। ভারতে সব সম্প্রদায়ের মুসলিমেরা ব্যবসা করছেন, তাঁদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা পাচ্ছে, বৃত্তি পাচ্ছে।’’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ থেকে কোনও সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা কমছে বা তাঁদর উপরে বেশি মাত্রায় ঋণের বোঝা চেপেছে, এমন নয়। যাঁরা ভারত সম্পর্কে নেতিবাচক রিপোর্ট তৈরি করেন, তাঁদের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই।