বেলঘরিয়া থেকে ব্যান্ডেল, বাংলার বিভিন্ন স্টেশনে দেখা মিলছে সারি সারি উটের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: তোমার বৈশাখে ছিল প্রখর রৌদ্রের জ্বালা… ১৯৩৬ সাল। প্রথম গ্রীষ্মের তীব্র দহনজ্বালা এ ভাবেই ধরা পড়েছিল রবীন্দ্রনাথের কলমে। অতঃপর ২০২৩। পার্থক্য প্রায় ন’দশকের। বাংলা আরও একটি তেমনই জ্বালাময়ী বৈশাখের দোরগোড়ায়। এই এপ্রিল যেমন নিষ্ঠুর, তেমনই বিরল এবং ব্যতিক্রমী। বাদলের হাত ধরে আষাঢ়ের পালা এখন না হয় বহু দূরে। কিন্তু বছরের এই সময়ে যে কালবৈশাখী তপ্ত মাটি ঠান্ডা করে, তারও তো দেখা নেই! আগামী কয়েকদিনে মিলবে, সে আশাও দেয়নি আবহাওয়া দপ্তর।
গত কয়েকদিন ধরে সূর্য যেন অগ্নিগোলকের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। তার দাপটে আট থেকে আশির ত্রাহি ত্রাহি দশা। এমন পরিস্থিতিতে নেট-পাড়াতে শুরু হয়েছে আলোড়ন। রসিক বাঙালি এই বৈশাখের দহন জ্বালার কষ্ট লাঘব করতে মেতে উঠেছে মিম তৈরিতে। যেমন, সাত সকালের সুপ্রভাত বাণী, ‘ভগবান কপালে সামান্য সুখ দিয়েছিল। ঘাম মুছতে মুছতে তাও মুছে গেল’। কারও আবার ছদ্ম ক্ষোভ। তাঁর দেওয়ালে ফুটে উঠছে,‘পুজোয় সবাই মুখ ভরা হাসি নিয়ে বুর্জ খলিফা দেখতে গিয়েছিলি। এখন দুবাইটাও সামলা’। কারও আবার প্রবল আক্ষেপ কান্না হয়ে ঝরছে। সেই ব্যক্তি লিখছেন, ‘বিছানা তো নয় যেন নিজের চিতায় শুয়ে আছি’। বাঙালির সাধের চা-প্রেম থেকে আলিয়া ভাটও মিমের দুনিয়ায় হাজির। এক চা রসিক ‘কেমন দিলাম’ গোছের মুখ করে বলছে, ‘জলের ট্যাঙ্কে চা আর চিনি ফেলে এসেছি। কল খুললেই গরম চা পাচ্ছি’।
আবার দেখা যাচ্ছে, সার সার উট নেমে আসছে ট্রেন থেকে। বেলঘরিয়া থেকে ব্যান্ডেল, বাংলার বিভিন্ন স্টেশনে চলছে ওই অবতরণ। না, সত্যি ঘটনা মোটেও নয়। এগুলি আসলে মিম! কোথাও বুদ্ধিমত্তার চূড়ান্ত কোথাও বা সরেস কথার পিছনে ঘোমটা টেনে থাকা কটাক্ষ। এতে গরম না কমলেও তপ্ত বাতাসে খেলছে এক টুকরো নির্মল হাসি। আর হাসি মস্করায় মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে, তাই না? আর যারা এই মিম দেখে বিরুক্ত বোধ করবেন, তাঁদের জন্য রয়েছেন সুকুমার রায়-
হুঁকোমুখো হ্যাংলা বাড়ী তার বাংলা
মুখ তার হাসি নাই, দেখেছ?
নাই তার মানে কি? কেউ তাহা জানে কি?
কেউ কভু তার কাছে থেকেছ?