দেশ বিভাগে ফিরে যান

এবার সিলেবাস থেকে বাদ ডারউইন-এর ‘বিবর্তন’, প্রতিবাদে সরব বিজ্ঞানীরা

April 22, 2023 | 2 min read

জীবনবিজ্ঞান সিলেবাস থেকে চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ত্ব বাদ দেওয়া হয়েছে, ছবি সৌজন্যে- Shutterstock

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এবার NCERT-এর এর কোপে চার্লস ডারউইন। মুঘল যুগ, নাথুরাম গডসে, গুজরাত দাঙ্গা থেকে শুরু করে মৌলানা আজাদের নাম সিলেবাস থেকে আগেই বাদ দিয়েছিল কেন্দ্র। এবার নজর পড়ল বিজ্ঞান বইতে। সিবিএসই দশম শ্রেণির জীবনবিজ্ঞান সিলেবাস থেকে চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ত্ব বাদ দেওয়া হয়েছে। অধ্যায়টির নাম ছিল ‘বংশগতি এবং বিবর্তন’। ২০১৮ সালের মানবসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সত্যপাল সিং এই দাবি জানিয়েছিলেন, সেটাই বাস্তবে পরিণত করা হল।

কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বিজ্ঞানী, বিজ্ঞান শিক্ষক এবং বিশেষজ্ঞেরা। দেশের নানা প্রান্তের বিজ্ঞানীরাও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন। খোলা চিঠি দিয়ে তাঁরা এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। চিঠিটি ১,৮০০ জনেরও বেশি বিজ্ঞানী, বিজ্ঞান শিক্ষক এবং শিক্ষাবিদরা স্বাক্ষর করেছেন। এতে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞানের বোধ গড়ে তোলার জন্য বিবর্তন বিষয়ক জ্ঞান জরুরি। তা না থাকলে তাদের বিজ্ঞান শিক্ষায় খামতি থেকে যাবে। এ ভাবে শিক্ষায় বঞ্চনা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণার সামিল বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।

এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে NCERT-এর কাছে সারা দেশের শিক্ষাবিদদের স্বাক্ষরিত প্রতিবাদপত্র পাঠাচ্ছে ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটি। সংগঠনের বক্তব্য, প্রাণের সৃষ্টি, চার্লস ডারইউন প্রবর্তিত বিবর্তনবাদ না জানলে জীববিজ্ঞানের মূল বিষয় সম্পর্কেই ওয়াকিবহাল হবে না পড়ুয়ারা। এতে তাদের সুদূরপ্রসারী ক্ষতি হবে। ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটির তেলেঙ্গানা রাজ্যের ভাইস-প্রেসিডেন্ট দেবর্ষি গঙ্গাজি বলেছেন, “জৈব জগত ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং মানুষ কিছু প্রজাতির বনমানুষ থেকে বিবর্তিত হয়েছে, চার্লস ডারউইন তার তত্ত্বটি প্রস্তাব করার পর থেকেই যুক্তিবাদী চিন্তাধারার মূল ভিত্তি। প্রাকৃতিক নির্বাচন.” তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞানের এই মৌলিক আবিষ্কার থেকে বঞ্চিত হলে শিক্ষার্থীরা মারাত্মকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়বে। মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর সৃষ্টিরহস্য নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যাখ্যাকে বিশ্বাসের দিকেই ঝুঁকতে পারে ছাত্র সমাজ। অধ্যাপক ও বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের সৃষ্টি কীভাবে হল, কীভাবেই বা তারা বর্তমানের অবস্থায় এল, তা নিয়ে ছাত্রমনে কৌতূহল থাকাটা খুবই স্বাভাবিক। আর তার ব্যাখ্যায় ডারউইনবাদ এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মতবাদ। সেটা বাদ দিয়ে দিলে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর সৃষ্টিরহস্য নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যাখ্যাকে বিশ্বাসের দিকেই ঝুঁকতে পারে ছাত্র সমাজ।

কোনও প্রতিবাদেই টনক নড়ছে না। শিক্ষায় ধর্মীয়করণে অনড় মোদী সরকার। আসলে বিজেপির আদর্শ গড়ে উঠেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের শিক্ষায়। যাঁদের প্রধান নীতি ও লক্ষ্য হল হিন্দুরাষ্ট্র গঠন। আর তাঁদের মতে মুঘল অথবা ব্রিটিশ, যে কোনও বিদেশি সংস্কৃতিই হল হিন্দুত্বের পরিপন্থী। সেই জন্যেই ইতিহাস থেকে বিজ্ঞানের একাধিক অধ্যায় কাটছাঁট করছেন বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Darwin’s theory, #NCERT, #Modi Government, #Scientific community

আরো দেখুন