অক্ষয় তৃতীয়ার তেলেনিপাড়ায় রথে চড়ে নগর-পরিক্রমায় বের হন শিব-অন্নপূর্ণা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজকে রথ? সে তো আষাঢ় মাসের ব্যাপার। কিন্তু বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের তৃতীয়ায় অর্থাৎ অক্ষয় তৃতীয়ায় টেলিনিপাড়ায় বের হয় রথ। সেই রথে জগন্নাথ, বলরাম, শুভদ্রা থাকেন না, রথে বের হন শিব-অন্নপূর্ণা।
গঙ্গাপাড়ের জেলা হুগলির ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়ায় রয়েছে অন্নপূর্ণা মন্দির। একসময় এটি ছিল দিনেমারদের ঘাঁটি। ফরাসি আমলে ভদ্রেশ্বরের তেলিনিপাড়ার নাম ছিল কৃষ্ণপটি। সেখানে ফরাসিদের তেলেঙ্গি সৈন্যরা থাকতেন বলে জায়গার নাম হয় তেলেঙ্গিপাড়া, কালে কালে উচ্চারণে তারতম্যের কারণ নাম হয়েছে তেলেনিপাড়ায়। এই তেলেনিপাড়ায় রয়েছে অন্নপূর্ণা মন্দির, বাংলার ১২০৮ সনের ফাল্গুনী পূর্ণিমায় মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় জমিদার শ্রী বৈদ্যনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্দিরের শিব ও অন্নপূর্না মূর্তিটি কাশী বিশ্বনাথের আদলে তৈরি, অষ্টধাতু নির্মিত। নিত্যপুজো ছাড়াও মন্দিরে অন্নপূর্ণা পুজো হয়। পালিত হয় অক্ষয় তৃতীয়া। এছাড়া দুর্গাপুজোও করা হয়। অন্নপূর্ণা পুজোয় বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে শিব-অন্নপূর্ণাকে বাবা-মা রূপে পুজো করা হয়।
অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্য তিথিতে অন্নপূর্ণা মন্দিরে বিশাল পুজোর আয়োজন করা হয়। বছরের এই একটি দিনে বিগ্রহকে মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বাইরে বের করে আনা হয়। বিকেলবেলায় বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির নিজস্ব রথে করে শিব-অন্নপূর্ণাকে স্থানীয় অঞ্চলে ঘোরানো হয়। দোলায় করে বাড়ির ছেলেরা লক্ষ্মী-নারায়ণের সওয়ারীও করান। রথের পুণ্য দড়িটি একবার ছুঁয়ে দেখার জন্যে স্থানীয় মানুষের ভিড়ের ঢল নামে। বছরের এই দিনে শিব-অন্নপূর্ণার আশীর্বাদ পেতে সারাবছর অপেক্ষায় থাকেন অগণিত ভক্তগণ।