আজ অক্ষয় তৃতীয়া, জেনে নিন এই তিথির মাহাত্ম্য
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ অক্ষয় তৃতীয়া। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বনের মধ্যে এটিও একটি। অক্ষয় তৃতীয়া, বৈশাখ মাসের শুক্ল তৃতীয়া অর্থাৎ শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে পালিত হয়। বলা হয়, এই দিনে জন্ম নিয়েছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম। জনশ্রুতি রয়েছে, কৃষ্ণদৈপায়ন বেদব্যাস ও গণেশ এই দিনে মহাভারত রচনা শুরু করেন। এদিনই সত্য যুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়েছিল। এই দিনটিতে রাজা ভগীরথ গঙ্গাকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন। এদিনই কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাকে বিপুল সম্পদ এবং ঐশ্বর্য প্রদান করেন। এই বিশেষ দিনে কুবেরের লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল বলে, এইদিন নানান উপাচারে বৈভবলক্ষ্মীর পুজো করা হয়। পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে রথ নির্মাণ শুরু হয় এই পবিত্র তিথি থেকেই।
অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিক মতানুসারে, এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে, সেটি আদিঅনন্তকাল ধরে অক্ষয় হয়ে থাকে। কেদারনাথ-বদ্রীনাথ-গঙ্গোত্রী-যমুনোত্রীর যে মন্দির দীর্ঘ ছয়মাস বন্ধ থাকে, এইদিনেই তার দ্বার খুলে দেওয়া হয় এবং দ্বার খুললেই দেখা যায় অক্ষয়দীপ যা ছয়মাস আগে মন্দির বন্ধের সময় জ্বালিয়ে আসা হয়েছিল। তা জ্বলছে।
তিথিটির নামকরণের ক্ষেত্রে একটি কিংবদন্তি অনুসারে, মহাভারতে পাণ্ডবরা যখন অজ্ঞাতবাস এবং নির্বাসনের মোট ১৩ বছর কাটিয়ে ফেলেন, তারপর একদিন ঋষি দুর্বাসা, তাঁদের সন্ধানে তাঁদের অস্থায়ী বাসস্থানে প্রবেশ করেন। দ্রৌপদী তাঁকে অক্ষয় পাত্রে আহারাদি খেতে দেন। এই আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে দুর্বাসা বলেন, ‘আজ অক্ষয় তৃতীয়া। আজ যে ছোলার ছাতু, গুড়, ফল, বস্ত্র, জল ও দক্ষিণা দিয়ে বিষ্ণুর পুজো করবে, সে সম্পদশালী হয়ে উঠবে।’ মনে করা হয়, এরপর থেকেই অক্ষয় তৃতীয়া জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং এই দিন পুজো করার রীতি সেই থেকেই চলে আসছে। আজও এই দিনে নানাবিধ শুভ কাজ সারেন সকলে।