মা সারদার জন্মস্থান জয়রামবাটিতে চলছে মাতৃমন্দির প্রতিষ্ঠার শতবর্ষের উৎসব
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মা সারদার জন্মস্থান বাঁকুড়ার জয়রামবাটিতে শুরু হল মাতৃমন্দির প্রতিষ্ঠার শতবর্ষের উৎসব। ১৯২৩ সালের অক্ষয় তৃতীয়ার দিন রামকৃষ্ণ মিশন উদ্যোগে মা সারদার পুরনো বাড়ি ও নতুন বাড়ি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় মাতৃমন্দির। মাতৃমন্দিরকে শরৎ মহারাজের স্বপ্নের বাস্তবায়ন বলা যেতে পারে।
আজ কর্মে মাতৃমন্দির আকাশ ছুঁয়েছে। আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে সঙ্গে আর্ত ও দুঃস্থের সেবায় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে মাতৃমন্দির। রবিবার সকালে মঙ্গলারতির মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। তারপর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জয়রামবাটি গ্রাম প্রদক্ষিণ করে। দিনভর মায়ের কথা পাঠ, ভক্তিমূলক নানা আলোচনার আয়োজন, ভক্তিগীতি পরিবেশন, যাত্রাপালাসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। মাতৃমন্দিরের শতবর্ষের উৎসব উপলক্ষ্যে বহু ভক্ত পুণ্যার্থী জয়রামবাটিতে এসেছেন। সারদামণির মৃত্যুর তিন বছর পরে ১৯২৩ সালে অক্ষয় তৃতীয়াতে যে বাড়িতে মা সারদার জন্ম হয়েছিল, সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মাতৃমন্দির। মা সারদার প্রধান সেবক স্বামী সারদানন্দ মহারাজ ছিলেন এই মন্দির প্রতিষ্ঠার নেপথ্য কারিগর।
স্বামী সারদানন্দ মহারাজ তথা শরৎ মহারাজকে মায়ের ‘দ্বারী ও ভারী’ বলা হত। কলকাতায় মায়ের বাড়িতে নীচের ঘরে কার্যত মায়ের দ্বারী হয়েই থাকতেন তিনি, তাঁর অনুমতি ছাড়া কেউ মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারত না। অন্যদিকে, পুত্রসম সারদানন্দের কাছেই ছিল মায়ের সব আবদার। বিভিন্ন জায়গায় তীর্থ করতে যাওয়া, ঘনঘন কলকাতা-জয়রামবাটি যাতায়াত, ভক্তদের, মায়ের কাছে আসা বিশিষ্টদের আতিথেয়তা, সবই হাসিমুখে সামলাতেন সারদানন্দ। সুষ্ঠুভাবে মায়ের সব কাজের ভার বহন করতেন। মাও তাঁর উপর খুব নির্ভর করতেন। শরৎই মাতৃমন্দির গড়েছিলেন। জয়রামবাটিতে প্রথমে গর্ভগৃহে মা সারদার পটে পুজো করা হত। ৩০ বছর পরে কাশী থেকে মা সারদার মূর্তি এনে নাটমন্দির নির্মাণ করা হয়। তারপর থেকে সেই মূর্তিতেই পুজো চলছে।
জানা গিয়েছে, শতবর্ষের অনুষ্ঠান চলবে তিন দিন ধরে। তিন দিনের এই অনুষ্ঠান ঘিরে উৎসবের চেহারা নিয়েছে জয়রামবাটি ও তার আশেপাশের এলাকা। গত বছর শতবর্ষ উদযাপন শুরু হয়েছিল, চলতি বছরে তিন দিনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা শেষ হবে।