তিনশো বছরের পুরনো জহুরা কালী বাড়িতে চলছে বৈশাখী পুজো ও মেলা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মালদহে বিরাজ করছেন জহুরা কালী, তিন শতাব্দী পুরনো জহুরা কালী মালদহের অন্যতম প্রাচীন কালী। ভক্তদের বিশ্বাস, জহুরা কালীর কাছে পুজো দিলেই ভক্তদের মনস্কামনা পূরণ হয়। আশেপাশের এলাকা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে আসেন। মনস্কামনা পূরণের জন্য মন্দিরে পুজোও দেন। রাজ্যের বাইরে থেকে, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকেও ভক্তরা আসেন। বৈশাখ মাসে এখানে বিশেষ পুজো হয়। পুজোর পাশাপাশি মেলাও বসে।
জনশ্রুতি অনুযায়ী, ৩০০ বছর আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে আগত কোনও এক সাধক স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবী জহুরা কালীর আরাধনা শুরু করেছিলেন। সেখানেই গড়ে উঠেছে দেবী জহুরার মন্দির। মালদহের ইংরেজবাজার থানার রায়পুর গ্রামের আমবাগানের মধ্যে এই মন্দির অবস্থিত। ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরে এপার বাংলার পাশাপাশি একদা ওপার বাংলা থেকেও ভক্তরা আসতেন। সারা বছর এই মন্দিরে পুজো চলে। অন্যান্য জায়গায় কালীপুজো হয় রাতে। এই মন্দিরের পুজো হয় দিনের বেলায়। কালীকে এখানে দেবী চণ্ডীরূপে আরাধনা করা হয়। শনি ও মঙ্গলবারের বিশেষ পুজো হয়। এখানে বৈশাখ মাসের শনি ও মঙ্গলবারে থাকে বিশেষ পুজোর আয়োজন।
বৈশাখ মাসে মন্দিরে ভক্ত সমাগম সর্বাধিক হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন এখানে অনেকগুলো মন্দির তৈরি করেছিলেন। তারই অন্যতম এই জহুরা কালীর মন্দির। সেই সময় এই অঞ্চলে ঘন জঙ্গলময়। ডাকাতরাই পুজো করত। বিভিন্ন জায়গা থেকে ধনরত্ন লুঠ করে, এখানে এসে মাটির তলায় চাপা দিয়ে রাখত ডাকাতরা। ধনরত্ন বা জওহর থেকে দেবীর নাম হয়েছে জহুরা কালী।
এখন জহুরা কালী বাড়িতে বৈশাখী পুজো চলছে। ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ছে জহুরা কালী বাড়িতে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রামের জহুরা কালী মন্দিরে প্রতি বছর বৈশাখ মাসে মহাধুমধাম করে পুজো হয়। এই এক মাস ধরে জহুরা কালী মন্দিরে উৎসব এবং মেলা চলবে। বৈশাখ মাসে মন্দিরে অনেক সাধকের আগমন হয়। এখানে দূর্গা ও কালী রূপে দেবী জহুর মাতা পূজিতা হন। জহুরা মায়ের পুজোয় অন্নভোগ দেওয়ার কোনও নিয়ম নেই। বাতাসা, সন্দেশ ও জবাফুলেই দেবী সন্তুষ্ট হন। যুগ যুগ রীতি মেনে এই মন্দিরে দেবী কালীর পুজো হয়ে আসছে।